image

আনোয়ারায় কমিউনিটি ক্লিনিক : রোগী থাকলেও ডাক্তার থাকেন না

image

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে  ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা ঠিকমত যায়না। চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত গ্রামের গরিব অসহায় রোগীরা। চিকিৎসক ছাড়াই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কমিউিনিটি ক্লিনিকগুলো। পালা করে (রোস্টার) এগুলোতে চিকিৎসক যাওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা যায় না। অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকে  স্বাস্থ্য সহকারীরা ও  যায়না। তবে অভিযোগ রয়েছে, মূলত এলাকার স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা (সিএইচসিপি বা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডর) ক্লিনিকগুলো চালাচ্ছেন। তাঁরা সাধারণ কিছু বড়ি দিয়ে এই দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে বর্তমানে ২৮ টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। 

জানাযায় ২০১১ সালের ১৬ মে পরিচালক (স্বাস্থ্য) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে জারি করা এক চিঠিতে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সহকারীদের (মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট) নির্ধারিত কমিউনিটি ক্লিনিকে সপ্তাহে এক দিন করে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এই দায়িত্ব পালনের সময় ব্যর্থতা এবং অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনার জন্য ওই চিকিৎসক ও চিকিৎসা সহকারীকেই দায়ী থাকতে হবে বলে হুঁশিয়ারি করে দেওয়া হয়েছে। এই চিঠির আলোকে প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসক ও সহকারীদের দায়িত্বের রোস্টার তৈরি করা হয়।

সূত্রমতে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ক্লিনিক গুলো নির্মাণ শুরুকরে। পর্যায়ক্রমে এর নির্মাণকাজ চলেছে। এ পর্যন্ত আনোয়ারা উপজেলায় ২৮ টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকের পেছনে সরকারের কমবেশি ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

ক্লিনিকগুলো পরিচালনার জন্য প্রতিটি ক্লিনিক এলাকায় একটি করে কমিউনিটি গ্রুপ রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য পদাধিকার বলে এই কমিটির সভাপতি। অথচ এই কমিটির লোকেরা জানেনই না, এই ক্লিনিকে একজন চিকিৎসকের (এম বি বি এস ডাক্তার) রোগী দেখার দায়িত্ব রয়েছে। রায়পুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ক্লিনিকের সভাপতি মাস্টার আবদুচ ছালেক বলেন, এ ধরনের চিকিৎসক তাঁদের ক্লিনিকে বরাদ্দ আছে কি না তাঁর জানা নেই। শুরুর দিকে একজন ডাক্তার আসতে দেখেছিলাম কয়েক বছর ধরে আর আসেনা।

সরেজমিনে জানা গেছে, কোনো কোনো ক্লিনিকে প্রথম  দু-এক দিন চিকিৎসক গেলেও পরে আর কোনো চিকিৎসক যায় না। কোনো কোনো ক্লিনিকে শুরু থেকেই এক দিনের জন্যও চিকিৎসক যায়নি। 

মঙ্গলবার  উপজেলার মধ্যম গহিরা কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগী দেখার দায়িত্ব ছিল কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোপাইডর মাহাফুজুর রহমান । সে দিন ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী  ছাড়া আর কেউ নেই সেখানে। চিকিৎসা নিতে আসা রুগিরা বলেন, তাঁরা কোনো দিন এখানে এমবিবিএস ডাক্তারের মতো কোনো চিকিৎসক পাননি। পরের দিন  রায়পুর কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব ছিলেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোপাইডর মর্জিনা বেগম। তিনি বলেন ২/৩ বছর ধরে কোন ডাক্তার আসেনা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সব ইউনিয়নেই একই অবস্থা চলছে। সরেঙ্গার ক্লিনিকে কোনোদিনই কোনো চিকিৎসক যাননি। এই ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে 'সিএইচসিপি'র পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। আমি সপ্তাহে তিনদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া বলেন , কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তার যাওয়ার কোন নিয়ম নেই,সরকার এধরনের নিয়মও করেনি।