image

পেকুয়ায় যৌতুকের দাবীতে ছোট ভাইয়ের বউকে ঘর থেকে বের করে দিলেন ভাসুর !

image

কক্সবাজারের পেকুয়ায় আরফা বেগম (২৮) এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে নির্যাতনকারী তার ভাসুর আব্দুল খালেকসহ ২ জনকে বিবাদী করে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা ঠান্ডাবর পাড়া এলাকার মৃত জহির আহমদের মেয়ে আরফা বেগমের সাথে একই এলাকার মৃত আবুল শরীফের পুত্র সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ কাইছার উদ্দিনের সাথে ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক সামাজিক ভাবে ৩ লক্ষ টাকা দেনমোহর মূলে এবং স্বামীকে নগদ এক লক্ষ টাকা ও আসবাবপত্র দিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করে কনের পরিবার। বিয়ের দেড় বছর পর যৌতুকের জন্য যৌতুক লোভী স্বামী ও তার ভাসুর প্রবাসীর স্ত্রীকে শারিরিক ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে ৫ বছর ধরে গৃহবন্ধী করে রাখে। এমনকি তার স্বামীকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক না দিলে সে আরেকটি বিয়ে করবে বলে হুমকি দেয়।

আরফা বেগম অভিযোগ করেন, ঘর থেকে বের হলে ৩ তালাক এবং ছাদে উঠলে ২ তালাক দিবে মর্মে তাকে হুমকি প্রদর্শন করে। এসবকিছুর নায়ক ভাসুর আব্দুল খালেক। স্বামীর সরলতা এবং টাকার লোভে তার স্বামীকে নানা ধরণের ফুঁসলিয়ে আমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে হয়রানি শুরু করছে। বিয়ের পর আমার স্বামী সৌদিআরব গমন করে। সৌদি আরব থাকা অবস্থায় আমার ভাসুর আমার সরলতাকে পুজি করে নানা ধরণের কুকর্মের আশ্রয় নিয়ে আমার স্বামীকে মোবাইল ফোনে আজেবাজে কথাবার্তা বলে আমাকে হাকাবকা শুরু করে। এমনকি ঘর থেকে বের করে দেবে বলেও হুমকি দেয়। আমার পরিবার অসহায় বলে তার দাবীকৃত যৌতুক দিতে না পারায় আমার ভাসুর খালেক সুকৌশলে কোনাখালী এলাকার এক মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করছে বলে জোর করে গলাধাক্কা দিয়ে কোন জিনিসপত্র ছাড়া আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করলেও তারা তা মানেনি। আমার ঘরে আমার মূল্যবান স্বর্ণ, কাপড় চোপড় আছে। সেগুলো আমার ভাসুর ভোগ করার কুমানষে জব্দ করে রাখে। পরে আমার বাচ্চাদের জন্য শীতের কাপড় আনতে গেলে আমি ও আমার দুই শিশু নির্দয় প্রহারের শিকার হই। আমার ৫বছর বয়সী শিশুপুত্র তহিদুল ইসলামকে মেরে পা ভেঙ্গে দেয় ভাসুর আবদুল খালেক। এসময় আমার এক বছর বয়সী শিশুকন্যাকে কাইফা জান্নাতের গায়ে হাত তুলতে দ্বিধা করেনি তারা। তারপরও তারা ক্ষান্ত হয়নি উল্টো আমাকে ও আমার ৪ নিরহ ভাইকে আসামী করে আমার পরিবারকে হয়রানি করছে। চাঁদাদাবী ও বাউন্ডারী ভেঙ্গে ঘরে অনুপ্রবেশ করে মালামাল তচনচ করার অভিযোগ এনে গত ৭-১১-১৮ ইং চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আব্দুল খালেক বাদী হয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যার সি আর নং ১২১৭। ওই দিনই গভীর রাতে পেকুয়া থানার পুলিশ আমার তিন ভাইকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর পরই বিবাদী গণ আমার পিতার ঘরের দরজা ও বেড়া ভাংচুর চালিয়ে ঘরের মালামাল লুট করে। এ বিষয়ে পুলিশকে জানানো হলেও কোন কর্ণপাত করেনি তারা।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে এ প্রতিবেদক অভিযুক্ত আব্দুল খালেকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার বাড়ীতে গেলেও বাড়ীর গেইট খুলেনি। এছাড়া তার মোবাইলে কল দিলেও তা রিসিভ করেননি।

পেকুয়া থানার ওসি (প্রশাসন) জাকের হোসেন ভুঁইয়া সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী আরফা বেগমের দায়ের করা লিখিত অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাহাবুবউল করিমের সাথে যোগাযোগা করা হলে তিনি বিষয়টি শুনেছেন এবং সুষ্ট তদন্ত করার জন্য পেকুয়া থানার ওসি তদন্তকে নিদের্শ দিয়েছেন বলে জানান।