image

হৃদয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী

image

বাঙ্গালীর সুমহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের প্রথম সারির নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী । নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাউন্ট ব্যাটেলিয়নের। মুক্তিযুদ্ধে বার বার তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু অদম্য অজেয় মহিউদ্দিন বরাবরই গণ-মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যধিতে ভোগে ৭৪ বছরে পদার্পণ করার পর ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন। চট্টগ্রামবাসীকে কাঁদিয়ে চলে গিয়েছিলেন না ফেরার দেশে । তাঁর মৃত্যুতে কেঁদেছে চট্টগ্রামবাসী । কেঁদেছে বাংলাদেশ এবং রাজনৈতিক অঙ্গন। এখনো কাঁদছে চট্টগ্রাম ,হয়তো কাঁদবে অনাগতকাল ! লাখো বঞ্চিত জনতা খুঁজে ফিরছে তাদের প্রিয় মহিউদ্দিনকে! প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধাঁর এই চট্টগ্রামেই তার সকল স্বপ্ন রচিত ছিল। অগনিত স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন এবং বাস্তবায়ন করেছিলেন। তাঁর চেতনার গভীরে যে আলোটি অনির্বাণ, তা ছিল বাঙালী জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা। বাঙালীর বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে তাঁর জন্ম। ডিসেম্বরে বাঙালীর বিজয় অর্জন। আর এই ডিসেম্বরেই মায়াময় পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছিলেন এ মহান নেতা।১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্ম নেয়া মহিউদ্দিন চৌধুরীচট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে সালে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন। ছাত্র জীবনে তিনি চাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী, ১৯৬৮-৬৯ সালে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে চট্টগ্রামের আলোচিত এমইএস কলেজে পূর্বাশা ভেঙ্গে দিয়ে ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগের নামে প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল । তার নেতৃতে২ মার্চ ১৯৭১  সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জনসভায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল । তারঁ নেতৃত্বেগঠিত হয়েছিল জয় বাংলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ।  বাকশালেরকেন্দ্রীয় শ্রমিক ফ্রন্টের সদস্য হিসেবে চট্টগ্রামে বিভিন্ন মিল কারখানায় ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি ধাপে ধাপে বিভিন্ন পথ পেরিয়ে পৌঁছে যান নগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক পদে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রধানতম নেতা হিসেবে গণআন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পূনঃ প্রবর্তনে ভুমিকা পালন করেছিলেন। কালক্রমে চট্টগ্রামের শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত ও সহায়হীন মানুষকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে মহিরুহে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।

রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।বঙ্গবন্ধুর ডাকে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিতে গিয়ে পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অসংখ্যবার। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে আইএসআইয়ের চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমি সদর দপ্তরের কাছে গ্রেপ্তার হয়ে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন দীর্ঘ চার মাস। জীবনের শেষ দিনগুলোতেও সেই নির্যাতনের চিহ্ন বহন করেছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধকালে তার গ্রেপ্তারের খবরে ভারতের একটি মুক্তিযোদ্ধা শিবিরে শহিদ মহিউদ্দীন ক্যাম্প খোলা হয়েছিলো। এরই মধ্যে একদিন মানসিক রোগীর অভিনয় করে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে পালিয়ে পাড়ি জমান ভারতে। জাতির জনকের খুব কাছের আর আদরের ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি। কিন্তু তৎকালিন সময়ে প্রবল ক্ষমতাশালী হয়েও ক্ষমতার মোহ একচুলও স্পর্শ করেনি তাকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকান্ডের কাল রাতে তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেলে অবস্থান করেছিলেন। ওই রাতে প্রায় ১০টা পর্যন্ত তিনি তার রাজনৈতিক গুরু শেখ মণি’র বাসায় ছিলেন রাতের খাবারও খেয়েছিলেন শেখ মণি’র সঙ্গে ,যাকেও রেহাই দেননি ঘাতকেরা। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাত বরন করার পর জাতীর জীবনে নেমে এসেছিল ঘোরতর দুঃসময়। আকস্মিক ট্র্যাজেডিতে বিধ্বস্থ মহিউদ্দিন দ্রুত চট্টগ্রাম ফিরে এসে আওয়ামী লীগের বিপর্যস্ত নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেছিলেন। এই বিপর্যস্ত সময়ে ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে নিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে একদিন তিনি ছদ্মবেশে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে গিয়েছিলেন। মাজার বলতে কিছু ছিলনা। বাঁশের সীমানাও ভালভাবে ছিলনা। গোপালগঞ্জ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত ছিল। তিনি চট্টগ্রাম থেকে নির্মাণ শ্রমিক ,ফরিদপুর থেকে ইট আর সিমেন্ট সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুর কবর ঘিরে পাকা দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন। দক্ষিণ কাট্টলী থেকে শ্বেতপাথরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান’ লিখে নিয়ে সেটা কবরে লাগিয়ে দিয়েছিলেন।এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালী জাতির সংগ্রামের ইতিহাসকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম শুরু করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা। এই বিজয়মেলার স্বপ্ন এগিয়ে নিতে মহিউদ্দিন চৌধুরী কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। এই বিজয়মেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লোমহর্ষক স্মৃতিচারণই এর মূল আকর্ষণ।যাতে করে পরবর্তী প্রজন্ম বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। 

প্রতিবেশী দেশের অন্যতম মেগাসিটি কলকাতার অস্থায়ী শ্রমিক থেকে এ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন বন্দর শহর চট্টগ্রামের মেয়রের চেয়ারে বসার সক্ষমতা দেখিয়ে গেছেন তিনি। সাধারণ এক শিশু নিজ গুণ ও যোগ্যতায় একদিন পরিনত হলেন চট্টগ্রামের ভাগ্য বিধাতা হিসেবে। নগ্ন পাহাড় ঘেরা ঝোপঝাড়ের একটি জঞ্জালের শহরকে পরিচ্ছন্ন করে রূপ দেন আধুনিক শহরে। ১৯৯৪ সাল থেকে শুরু করে ২০০৯ পর্যন্ত তিন মেয়াদে টানা ১৭ বছর সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম নগরীকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করতে প্রাণপনে চেষ্টা করে সফল হয়েছিলেন । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন সিসটেম লিমিটেড, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারসহ বহু সাস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি সময়ে বিধ্বস্ত চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে অসামাণ্য অবদান রেখেছিলেন । তাঁর একটাইরাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল-চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং চট্টগ্রামের মানুষের উন্নয়ন। প্রায় ১৭ বছর মেয়র থাকাকালীন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সিটি গভর্ণমেন্টের আদলে গড়ে তুলেছিলেন। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে নগর উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত করেছিলেন এ নেতা। শিক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়ে অনেক বেশী সচেতন ছিলেন চট্টগ্রামের এই পুরোধা ব্যক্তি। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এনেছিলেন সর্বোচ্চ পরিবর্তন। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সহ নগরীর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্প্রসারণে তার অবদান অবিস্মরণীয়। অন্ধকার নগরীকে আলোকিত করতে ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহন, প্রিমিয়ার টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা, সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তন নির্মাণ, চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ সিএনজি স্টেশন স্থাপন, লাশ পরিবহনের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির ব্যবস্থা, গণশৌচাগার নির্মাণ ,নগরীর রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ বিশেষ করে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড ও জাকির হোসেন রোড সম্প্রসারণ এবং নগরীর প্রবেশ মুখে সিটি গেইট নির্মান করে বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দরের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে ছিলেন আমৃত্যু প্রতিবাদী। চট্টগ্রাম বন্দরের মোহনায় ষ্টিভিডোরিং সার্ভিস অব আমেরিকা (এসএমএ) কর্তৃক বন্দর নির্মাণে নিজ দলীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন । বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীদের চালিকাশক্তি হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এছাড়া তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠার অবদান তারই । সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের প্রয়োজনে ছড়িয়েছেন দ্যূতি। জীবনের সুবর্ণ সময় গুলো তিনি দান করেছেন চট্টগ্রামের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে। মানবতাবোধে সিক্ত কোমল একজন মানুষ ছিলেন তিনি। কলকাতার রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া শিশুকে মাদার তেরেসা পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়ে মানবিকতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন মহান এ নেতা। একানব্বইয়ের ঘুর্ণিঝড়ে দুস্থ মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তার নিরলস কাজ করার কথা অবিস্মরনীয়। কালুরঘাটে গার্মেন্টসে আগুনে পুড়ে অর্ধশতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু বা বন্দরটিলায় নৌবাহিনীর সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের দাফন-কাফন, সৎকারে সবার আগে এগিয়ে এসেছিলেন এবং গান পাউডারে ক্ষতবিক্ষত মানুষের লাশ নিজের হাতে ধুয়ে ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবর্তমানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের স্বার্থ নিয়ে কে কথা বলবেন? তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল কি পারবেন পিতার উত্তরাধিকার বয়ে চলতে?ইতোমধ্যে তাঁর ব্যাক্তিত্ব,মানুষের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ দলের প্রতি কমিটমেন্ট তাকেচট্টগ্রামের আপামর গণমানুষের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে।তিনি আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাপানী উন্নয়ন সংস্থা জাইকা'র বাংলাদেশের লিগ্যাল কনসাল্টেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে সিটি করপোরেশন গুলোতে 'সিটি গভর্নেন্স' চালু করার লক্ষ্যে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এ দুটো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন। প্রয়াত পিতার স্বপ্ন পূরণের অংশীদার হয়ে নীরবে কাজ করে চলেছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার মধ্যদিয়ে তার স্বীকৃতি ও মিলেছে।  তৃণমূল থেকে তিল তিল করে বেড়ে উঠা মহিউদ্দিন চৌধুরীর উত্তরসূরী হিসেবেস্বল্প সময়ের মধ্যে জনবান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।একজন মানুষ কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠান হতে পেরেছিলেন !বা শাসনতন্ত্রের উর্ধ্বে আরোহণ করতে পেরেছিলেন তা চট্টগ্রামের মানুষ ইতোমধ্যে উপলব্দি করতে সমর্থ হয়েছেন। আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অসংখ্যবার। তাঁর গ্রেফতারের ঘটনা পরবর্তী বিক্ষুদ্ব চট্টগ্রামের পরিস্থিতি বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান পেয়েছিল বারবার। কিন্তু শত চেস্টা আর মানসিক নির্যাতন করেও মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তার আদর্শ থেকে একটুও টলাতে পারেননি।ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানের জানাজায় লাখ লাখ শোকার্ত মানুষের অংশগ্রহণ এটাই প্রমাণ করেছিল গণমানুষের এ প্রিয় নেতাকে হারিয়ে চট্টগ্রামের মানুষ দিশেহারা। লালদীঘি ময়দানে ইতিহাসের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ নামাজে জানাজা এবং দাফনে লাখো মানুষের গগণবিদারী আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রামের বাতাস। লালদীঘি ময়দানকে কেন্দ্র করে শোকাহত মানুষের পদচারনায় সন্নিহিত ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়ছিল সেইদিন। নশ্বর পৃথিবীকে বিদায় জানানোর এক বছর সমাগত হলেওচট্টগ্রামের আপামর জনতা আজো খুঁজে ফিরে তাদের প্রিয় মহিউদ্দিনকে !

 

 

 

 

 

লেখক : শাহাব উদ্দিন মাহমুদ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক