image

ভাবতে হবে আরও একটু বেশি ....

image

ভাবনা! শিশুদের জন্য। সে-টা তো জন্মের আগে থেকে শুরু হয় মা-বাবার। একটি সন্তানের জন্মের সাথে যেমনি জন্ম নেয় মা-বাবা, তেমনি জন্ম নেয় অনেকগুলো সর্ম্পকের  যেমন- নানা-নানী, দাদা-দাদী, মামা-খালা, চাচা-ফুফু ইত্যাদি। প্রত্যেকের সাথে এক অবিচ্ছেদ্য সর্ম্পক সৃষ্টি হয়। প্রাণী কূলে সবচেয়ে অসহায় প্রাণী হল মানব শিশু। অন্যের সাহায্য ছাড়া সে একদিন ও চলতে পারে না। একটি শিশুর জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী  গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমরা তাদেরকে সুন্দর বর্তমান দিতে না পারলে তারা আমাদেরকে সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে পারবে না।
 
শিশুরা যেন নৈতিকতা, সম্মানবোধ, শিষ্টাচার, বিনয়ী ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে তা প্রথম থেকে শিক্ষা দিতে হবে। তাদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিলে একজন মানুষ পূর্নাঙ্গ মানুষ হয় না। প্রকৃত শিক্ষা তার মধ্যে না থাকলে সে ব্যাক্তি কোন কিছুই প্রকৃতভাবে মূল্যায়ন করতে পারে না। আমাদের পূঁথিগত শিক্ষিত মানুষ নয়. মানবিক গুনাবলী  সম্পন্ন  মানুষের বড় অভাব। শিশুদেরকে শুধুমাত্র পাঠ্যপু¯তকে সীমাবদ্ধ রাখলে তাদের সৃজনশীল বিকাশ ঘটে না। তাদেরকে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্বন্ধে জ্ঞান দিতে হবে। তাদেরকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। 

আধুনিক নগরায়নের সমাজে শিশুরা বেড়ে উঠছে ফার্মের খাঁচার মুরগীর মত। কখনও কখনও তারা জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে। তাদের চঞ্চল মন কি চায়...তা আমরা বুঝার চেষ্টা করি না। তাদেরকে না দিতে পারছি খেলাধূলা করার জায়গা, না দিতে পারছি বুকভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার মত বাতাস। আমরা তাদের শৈশব কেড়ে নিচ্ছি আর বিনিময়ে দিচ্ছি গাধার মত  ব্যাগ ভর্তি বোঝা । আমরা চাই আমাদের সন্তানরা রাতারাতি বিদ্ব্যান হয়ে যাক। বাস্তবে হিতে বিপরীত হয়। তারা মানসিক ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। অনেক শিশু অস্বাভাবিক আচরণ করে । শিশুর সার্বিক বিকাশ না হয়ে অনেকের সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক অভিভাবক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। মূলত শিশুদের নয়, অভিভাবকদের চিকিৎসার (কাউন্সিলিং) প্রয়োজন। অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে  বলি হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। 
শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। তারা যা দেখে তাই পর্যবেক্ষণ করে। বড়দের উচিত তাদের সামনে এমন কিছু না করা এবং না বলা যা সে অনুকরণ করবে। ভদ্রতা, সম্মান, শিষ্টাচার, বিনয়ী এ সমস্ত বিষয় শিশুরা শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ে পড়লে হবে না। বাস্তব জীবনে পরিবার, সমাজে এর প্রতিফলন না দেখলে তারা কিছুই শিখবে না। শিশু বয়স থেকে এ সমস্ত গুণাবলীর ভিত্তি স্থাপন করতে হবে। মূলত পরিবার থেকে শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পায় বেশি, তাই এর থেকেই সূচনা করতে হবে। শেকড় থেকে যদি একটি শিশু মানবিক গুণাবলী নিজের মধ্যে ধারন করতে পারে তা হলে পরবর্তী জীবনে সে তার গুনাবলী অন্যের মধ্যে বিকশিত করতে পারবে। এই পৃথিবী গুনীকে মূল্যায়ন করেছে এবং ভবিষ্যৎতে ও করবে সাফল্যের পিছনে তাকে ছুটতে হবে না। সাফল্য তার পিছনে ছুটবে।

লেখক : সহ-সম্পাদক, সিটিজি সংবাদ ২৪.কম