image

ভোট গ্রহণের দায়িত্বে আওয়ামী–সংশ্লিষ্টরা

image

ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনজুর হোসেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তাঁর মনোনয়ন ফরমের সমর্থনকারী ভোটার হিসেবে সই দিয়েছেন রবীন কুমার লস্কর। কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক আবার বোয়ালমারী উপজেলার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ১৪ ডিসেম্বর অন্যান্য ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।

সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার আইনি বাধা থাকলেও শুধু বোয়ালমারী উপজেলায় এমন পাঁচ ব্যক্তিকে পাওয়া গেছে, যাঁরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়েও নির্বাচন কর্মকর্তা হয়েছেন।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থেকে নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছেন এমন অন্তত ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে, যাঁরা সরাসরি আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২৯ কর্মকর্তাও পেয়েছেন ভোট গ্রহণের দায়িত্ব। তাঁদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তা প্যানেলের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এসব এলাকার নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যদি কারও নামে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আসে, তাহলে তাঁদের বাদ দেওয়া হবে। 

চট্টগ্রামে ১০ জন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন ২০ ডিসেম্বর রাতে তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের মহাজোটের প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের পক্ষে প্রচারণা সভায় বক্তব্য দেওয়ার ছবি দেন। এর ২৩ ঘণ্টা পর তিনি একই আসনের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ছবি দেন।

তাঁর মতো অন্তত ১০ জন ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছেন, যাঁরা সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা চট্টগ্রাম-৫ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

দলীয় সম্পৃক্ততা পাওয়া এই ব্যক্তিরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল মনসুর সিকদার, সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রনি পাল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আহসানুল হক, আওয়ামী লীগের কর্মী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য সরোয়ার হোসেন ওরফে খোকন, শুক্কুর মিয়া, আবদুল মান্নান ও গিয়াস উদ্দিন। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের হাটহাজারী উপজেলার সভাপতি প্রয়াত মো. ইসমাইলের ছেলে মো. মুশফিক-উর-রহমানও ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন হাটহাজারী পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এই তথ্য জানালেও হোসেন তা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি। আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেলে তা দলের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে পালন করব।’

ছাত্রলীগ নেতা আবুল মনসুর সিকদার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের ব্যবস্থাপক। তিনি চট্টগ্রাম-৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের প্রচারণায় প্রায় প্রতিদিন অংশ নিচ্ছেন। প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে মনুসর বলেন, ‘ভোটের দায়িত্বের বিষয়ে কেউ এখনো ফোন দেননি। তবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেলে সেখানে দলকে দেখার কোনো সুযোগ থাকবে না।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীক্ষা শাখার নিরীক্ষক মুশফিক-উর-রহমান পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। মুশফিক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করেন উল্লেখ করে বলেন, পারিবারিকভাবে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তবে নির্বাচনে নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করবেন।

রনি পাল কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তবে কমার্স কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়লেও দলের রাজনীতির সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। রনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে নাম কাটানোর চেষ্টা করছি।’

জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি, আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগের জন্য নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেটা এখনো চূড়ান্ত নয়। যদি কারও বিরুদ্ধে দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আসে, তাহলে বাদ দেওয়া হবে। 

শাহজালালে আওয়ামীপন্থীরাই দায়িত্বে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পেয়েছেন শাবিপ্রবির ২৯ কর্মকর্তা। তাঁদের সবাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বা আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত। নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে প্রচারণাও চালাচ্ছেন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কলেজ পরিদর্শক তাজিম উদ্দিন। তিনি এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদারের পক্ষে নিয়মিত প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। এই ছবি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলেও শোভা পাচ্ছে।

শাহাদাত হোসেন (শিশির) শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের একটি পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করতেন। তবে ওই সময় ছাত্রলীগে কোনো কমিটি ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শাহাদাতও নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ২০ ডিসেম্বর ফেসবুকে ‘সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে নৌকা মার্কায় ভোট দিন’ লেখা তাঁর কভার ছবি আপডেট করেছেন।

শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রবিউল ইসলাম (জুয়েল)। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ পাওয়া রবিউল ১০ ডিসেম্বর নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ কে আবদুল মোমেনের নির্বাচনী মতবিনিময় ও কর্মপরিকল্পনা সভায় যোগ দেন।

সাইদুর রহমানের (মিঠু) নামে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগে একটি পক্ষ ছিল। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। সংসদ নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ২০ ডিসেম্বর তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিন’ লেখা ছবি দিয়েছেন।

নির্বাচনী আচরণবিধির ১৪(২) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মকর্তা নৌকার পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা রাসেন্দ্র দাস ও সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বলও শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তাঁরাও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রধান ইন্সট্রুমেন্ট কর্মকর্তা খন্দকার মমিনুল হক, সহকারী রেজিস্ট্রার শাহীন আহমেদ চৌধুরী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজীব সী ও মইনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ কর্মকর্তাবৃন্দ নামে একটি কর্মকর্তা পরিষদ থেকে বেশ কয়েকবার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচন করেছেন। নিয়োগ পাওয়া অন্য সব কর্মকর্তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত এই প্যানেলের সদস্য।

কলেজ পরিদর্শক তাজিম উদ্দিনকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি সিলেট সদর উপজেলার সাহেব বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর গণসংযোগে আছেন বলে জানান। প্রচারণা কেমন চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাই (আ.লীগ প্রার্থী) বের হয়ে (জয়ী) আসবেন।’ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হয়েও দলীয় প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারের জয়ের জন্যই খাটছি।’

জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন শিশির চাকরিজীবনে রাজনৈতিক সমর্থন প্রকাশ করছেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করব। তবে আমাকে বিভিন্নজন ফোন করে এ বিষয়ে উত্ত্যক্ত করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা এম কাজী এমদাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ তালিকায় কারা আছেন, নামধাম প্রকাশ করার কোনো বিধান নেই। তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করতে রাজি হননি। 

বোয়ালমারীতে আ.লীগের ৫ নেতা
ফরিদপুর-১ আসনের আওতাভুক্ত বোয়ালমারী উপজেলার ৭৭টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ৮১ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৩৮৪ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৭৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তাকে ১৪ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

তাঁদের মধ্যে সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত চারজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ৩৩ নম্বর কার্যনির্বাহী সদস্য মজনু মিয়া, তিনি কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। উপজেলা আওয়ামী লীগের ২৪ নম্বর ক্রমিকের কার্যনির্বাহী সদস্য আনিসুজ্জামান, তিনি মধুবর্ণি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক । বাংলাদেশ কৃষক লীগের বোয়ালমারী উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ শাহীনুর আলম, তিনি রাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ওই আহ্বায়ক কমিটির ১০ নম্বর ক্রমিকের সদস্য মুনির হোসেন, তিনি চতুল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রবীন কুমার লস্কর। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনজুর হোসেনের দাখিল করা মনোনয়ন ফরমের সমর্থনকারী ভোটার হিসেবে স্বাক্ষরদাতা।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে উল্লিখিত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ বি এম আজমল হোসেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমের সমর্থনকারী রবীন কুমার লস্কর বলেন, ‘আমি বুঝে হোক কিংবা না বুঝে হোক আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমের সমর্থনকারী ভোটার হিসেবে স্বাক্ষরদাতা হয়েছি। এ বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানিয়ে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া থেকে বাদ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আনিসুজ্জামান প্রশিক্ষণ গ্রহণের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘কমিটিতে আমার নাম আছে। তবে দলীয় কর্মকাণ্ডে তেমনভাবে যুক্ত নই।’

কৃষক লীগ নেতা শরীফ শাহীনুর আলম বলেন, কৃষক লীগের ওই কমিটির বর্তমানে কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং একটি কেন্দ্রের দায়িত্ব পাবেন বলে জেনেছেন।

নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগের শর্তসহ ১০ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে কোনো প্রার্থীর অধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন বা আছেন এমন ব্যক্তিবর্গ এবং কারও নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকলে তাঁকে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত না করতে বলা হয়েছে।

বোয়ালমারীর ইউএনও এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, এ তালিকা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় তৈরি করে থাকে। যাঁদের এ কাজ করার যোগ্যতা ও সামর্থ্য রয়েছে, তাঁদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে বিভিন্ন দলের কমিটিতে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে। 

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রামের প্রণব বল ও সুজন ঘোষ, সিলেটের উজ্জ্বল মেহেদী এবং ফরিদপুরের প্রবীর কান্তি বালা।

খবর : প্রথম আলো