image

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি’র প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও আলোকিত নারী সম্মাননা

image

দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি (বানাসাস) এর প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১০ এপ্রিল, ২০১৯, বুধবার, সকাল ১১টায়, জাতীয় ও নৃত্যকলা মিলনায়তন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, সেগুনবাগিচা, ২য় তলায় আলোকিত পাঁচ নারী এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ প্রদান করা হয়েছে। 

আলোকিত নারী হিসেবে বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ যারা পেয়েছেন তারা হলেন যথাক্রমে:

১. মানবাধিকার কর্মী হিসেবে- শেখ মুন্নি 
২. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে -অপু বিশ্বাস
৩. শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে - ফেরদৌস আরা
৪.  সাংবাদিকতায় - ফরিদা ইয়াসমিন
৫. আজীবন সম্মাননা (চলচ্চিত্রে) বিশেষ অবদান রাখায় -শবনম
৬. চিকিৎসায়: স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় ইউনিভার্সিটি ফিস্টুলা সেন্টার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আনজুমান আরা শিল্পী। 

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সাবেক মহাসচিব এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ওমর ফারুক, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, এনজেন্ডার হেলথ বাংলাদেশ এর দেশীয় কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. শেখ নাজমুল হুদা, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন মো. গণি মিয়া বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সাবেক মহাসচিব এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ওমর ফারুক তার বক্তব্যে বলেন, হাঁটি হাঁটি পা পা করতে করতে ইতোমধ্যে এক বছর পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি (বানাসাস)। আমরা তাদের এগিয়ে যাওয়াকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। নারী-পুরুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ে যে সকল নারী আছেন তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নারীরা এগিয়ে চলেছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা অত্যন্ত জরুরি। নীতিমালা হোক আর যাই হোক; বাস্তবায়নটা অত্যন্ত জরুরি।

সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা তার বক্তব্যে বলেন, নারী সাংবাদিকদের কাজে ধরে রাখতে চাইলে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। রাজধানীতে নারীরা সাংবাদিকতা পেশায় এগিয়ে থাকলেও মফস্বলে সেভাবে নারীরা এগিয়ে আসছেন না। সেক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশের অভাবই দায়ী। এজন্য তিনি গণমাধ্যমে নারীদের সুরক্ষায় আলাদা নীতিমালা প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও মত দেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সারাদেশের নারী সাংবাদিকদের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা, তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা। তারা যেন মূলধারার সাংবাদিকতায় বেশি করে সম্পৃত্ত হতে পারে। সেজন্য তাদের আগ্রহী করে তোলা। অসুস্থ ও বেকার সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য এই সংগঠন ইতোমধ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ কাজের পরিধি আরো বাড়বে বলে আশা করেন তিনি। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে তাদের অধিকার যেন লংঘিত না হয় সেদিকটিও খেয়াল রাখা হচ্ছে। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন সাংবাদিকতা পেশায় নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা আসবে।

সাধারণ সম্পাদক আনজুমান আরা শিল্পী তার বক্তব্যে বলেন, কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা, পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নের জন্য গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও শিল্পে রূপ দেয়া প্রয়োজন। এজন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক সংগঠন, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরি।

আলোকিত নারী হিসেবে বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ পাওয়া প্রসঙ্গে অভিনেত্রী শবনম বলেন, ‘এই সম্মাননা পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়েছি। কাজের স্বীকৃতি পেতে সব সময়ই ভালো লাগে। বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি (বানাসাস)’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ প্রসঙ্গে গায়িকা ফেরদৌস আরা কাজের স্বীকৃতি সবসময়ই আনন্দের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সম্মান দেশ এবং জাতির প্রতি তার দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি তার অভিব্যক্তিতে আরো জানান, আমি অভিভূত এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ করায়। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অপু বিশ্বাস বানাসাস সম্মাননা ২০১৯ পাওয়াতে নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবতী বলে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সাধারণত যে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে পুরুষ সাংবাদিকদের সাথে দেখা হয়। কিন্তু আজ এ অনুষ্ঠানের সর্বত্র নারী সাংবাদিকদের মিলন মেলা দেখে আমি অভিভূত।


বানাসাস সম্মাননা ২০১৯  প্রদান শেষে ইউনিভার্সিটি ফিস্টুলা সেন্টার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর পক্ষ থেকে একজন ফিস্টুলা জয়ী রোগী নার্সিং পেশায় অধ্যয়নরত টুম্পা বেগমকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ তৃপ্তি রানী দাশ, চেয়ারম্যান, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং অবস্টেট্রিক্যাল এন্ড গাইনীকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ সালেহা বেগম চৌধুরী, এনজেন্ডার হেলথ বাংলাদেশ এর দেশীয় কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. শেখ নাজমুল হুদা। 

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি কারনিনা খোন্দকার, অর্থ সম্পাদক ইশরাত ফারহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মারিয়া সালাম, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক লাবিন রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য কানিজ ফাতিমা লুনা, ফাতিমা মুন্নি, রেজওয়ানা সুমি, রারজানা সুলতানা, ফারজানা জবা, শান্তা ফারজানা, রেখা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মারিয়া সালাম ও লাবিন রহমান। মিডিয়া পার্টনার ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের আলো।