image

বাঁশখালী পশ্চিম গন্ডামারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নামে দূর্নীতির অভিযোগ

image

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৭৯নং পশ্চিম গন্ডামারা (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে সচেতন মহলে। ওই স্কুলের দাতা সদস্য মোঃ উজির আলী সওদাগরের সাথে কথা বললে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সব দূর্নীতি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, "আমি স্কুল দিয়ে কী  অন্যায় করেছি? স্কুলটি দিয়েছিলাম আসলে এলাকার স্থানীয় ছোট ছোট বাচ্চারা স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য কিন্তু শিক্ষক যে অনিয়ম করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো মাসিক মিটিংয়ের এর নাম দিয়ে তাদের থেকে প্রতিমাসে স্বাক্ষার নিয়ে থাকে। স্কুলের নামে কোন বরাদ্দ আসলে এগুলো সঠিকভাবে কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করছে। ওই প্রধান শিক্ষক টয়লেট মেরামত, স্টীলের আলমিরা মেরামত বিদ্যুৎ মিটার সংযোগসহ নানা খরচ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে। স্কুলের বাচ্চাদের খেলনার জিনিসপত্র গুলো নামে আছে মাত্র। স্কুলের নামে বরাদ্দ আসলে তিনি কাজ করে না এবং স্কুলের যে কোন বিষয় নিয়ে দূর্নীতি করে যাচ্ছে এগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।"

এই বিষয় নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুরে এর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি মুখ খোলেন না। এক পর্যায়ে আসন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। বিগত আট বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বলে জানা যায়। সরকারি যে টাকাগুলো আসে স্কুলের জন্য ওই টাকাগুলো বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে উন্নয়নের হিসেব দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর সবুর।

এই বিষয়ে উক্ত স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এখানে যত অনিয়ম হয়েছে এগুলো সব আমি আসার আগে হয়েছে এবং সব অনিয়ম গুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।

স্থানীয়দের অনেকে ওই শিক্ষকের অনিয়ম ও দূর্নীতির কথা জানান। তারা বলেন, ভর্তির সময় ২শত টাকা করে ভর্তি ফিঃ নেয়, সরকারি বিনামূল্যে যে বইগুলো বিতরণ করার কথা ঐগুলো নাকি সরকার থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করে আনে এবং স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা দিয়ে বিতরণ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্কুলের মধ্যে টিউবলের অবস্থা খুবই নাজুক। স্কুলের প্রবেশ পথে টয়লেটের পাইপ ভেঙে যাওয়াতে ময়লার দুর্গন্ধ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যহানির অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এবং টয়লেট মেরামতের জন্য যে খরচ দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা কিছুই করে নাই বলে জানায়। পুরো স্কুলের মধ্যে শুধুমাত্র একটি বৈদ্যুতিক ফাঁকা রয়েছে। ওই পাকাটি রয়েছে প্রধান শিক্ষকের মাথার উপর কিন্তু শ্রেণী শিক্ষকের কক্ষে ছাত্রছাত্রীরা গরমের মধ্যে অনেক মিনতি করার পরেও পাচ্ছে না একটু বাতাস। রুটিনে স্কুলের ক্লাস শুরুর সময় ৯টা১৫ মিনিট থাকলেও  দশটা বেজে যাওয়ার পরেও স্কুলের শিক্ষক আসে নাই। শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের খাবার পানির জন্য স্কুলের বাহির অনেক দূরে কষ্ট করে পানি পান করতে যেতে হয়। আমাদের পায়খানা আসলে বাড়িতে চলে যেতে হয় এখানে যেটা রয়েছে সেটা বন্ধ থাকে সব সময়। 

উক্ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ভর্তির সময় ২শত টাকা এবং সরকারিভাবে যে বইগুলো বিতরণ করার জন্য আসে এগুলোর জন্য ৫০ টাকা করে নিয়েছেন ওই শিক্ষক। এছাড়া  রয়েছে পানির যথেষ্ট পরিমাণ শংকট ও অস্বাস্থ্যকর টয়লেট এবং সঠিক সময়ে স্কুলের মাষ্টার না আসার অভিযোগ অহরহ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, পশ্চিম গন্ডামারা ৭৯নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের ভিবিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি জানতে পারলাম, তদন্ত করে তার বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি নাই আপাতদ এডহক কমিটি দিয়ে স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে। তবে বই বিতরণের সময় টাকা নেওয়ার কোন নিয়মই নাই। এ ব্যাপারে অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।