image

ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ : হাটহাজারীতে উৎপাদিত পাইন্যা কচুর ভাল ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

image

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গুমানমদ্দর্ন, মির্জাপুর ইউনিয়নের সাদেকনগর, বালুখালী ও মির্জাপুর গ্রামের দিকে চোখের পলকে তাকালে দেশীয় পাইন্যা কচুর চাষ চারিদিকে সবুজের সমারোহে চোখ জুড়ে যায় এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে। ন্যায্য মূল্য পাওয়াতে কুষকরাও আনন্দিত। বদলে যাচ্ছে গ্রামের দৃশ্যপট। কৃষকদেরকে উৎসাহিত দলগতভাবে চাষাবাদে বিভিন্ন কৌশল ও পরামর্শ দিয়ে তাদের পাশে এসে দাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। 

ওয়ার্ল্ড ভিশন এর লাইভলীহুড টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ’লোকাল ভ্যালু চেইন ডেভেল্পমেন্ট মডেল” অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু কল্যাণের সাথে সম্পর্কযুক্ত-দারিদ্র দুরীকরন, খাদ্য/পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতা এবং জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকির কারন ও তার প্রতিকারের জন্য সরাসরি কাজ করে। উৎপাদনক্ষম ও টেকসই জীবনমান উন্নয়নে পরিবার ও তাদের সন্তানকে চরম দারিদ্রতা থেকে রক্ষা করে তাদের খাদ্য, যতœ এবং শিক্ষা দানের মাধ্যমে উৎপাদনক্ষম পরিনত মানুষ গড়াই এই প্রোগ্রামের কাজ। 

জানা যায়, ২০১৭ সালের দিকে সাদেকনগর, মির্জাপুর ও বালুখালী গ্রামের বেশ ক’জন উদ্যোগী কৃষক পতিত জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে দেশীয় পাইন্যা কচু চাষ লাভজনক সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ২০১৮ সাল থেকে পুরোদমে কচু চাষের জন্য জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ শুরু করে।  ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগীতা ও পরামর্শে তাদের আধুনিক পদ্ধতিতে অতি কম খরচে অল্প জমিতে কচু চাষের গ্রেডিং পদ্বতি ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ কৃষকদেরকে সংগঠিত করে তাদের উৎপাদিত পন্যের বাজার ব্যবস্থায় সহজ প্রবেশাধিকার, ব্যবসার সফলতা, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্রচাষী দলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সফলতার জন্য কাজ করছে।

কৃষকরা জানায়, প্রশিক্ষনের লব্দ জ্ঞান তাদের অনেক উপকারে এসেছে, তারা প্রায় ৫২৫ একর জমিতে ৫৬ হাজার কচু চারা রোপন করেছে। বীজতলা থেকে শুরু করে কচু রোপন ও সঠিক রক্ষনাবেক্ষনে আজ তাদের সাফল্য আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যেও কৃষকদের মুখে হাসি ফুঠেছে কিন্তু স্থানীয় বাজারে বিক্রিতে তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। 

সাদেকনগর গ্রামের কৃষক বাবুল জানায় যে, এপ্রির্ল থেকে জুন মাস পর্যন্ত পাইন্যা কচুর লতী ও ফুপা সু স্বাদু তরকারী এর স্থানীয়ভাবে প্রচুর চাহিদা রয়েছে যা বাজারের চাহিদা মিঠিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সবুজ সমারোহ কচু খামার থেকে আমরা পর্যাপ্ত অক্সিজেন, ভিটামিন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর তরকারি খাবার শিশু সহ গর্ভবতী নারীরা আহারের মাধ্যমে স্বাদু গ্রহন করে। 
পাশর্^বর্তী ইউনিয়নের কৃষকরাও কচু চাষে আগ্রহী হচ্ছে এবং অন্যান্য গ্রামে ছড়িয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্থানীয় দৈনিক শ্রমিকদের মজুরী বেশী হওয়ায় কৃষকরা তাদের আশানুরুপ লাভবান না হওয়ার আশংকা রয়েছে।

হাটহাজারী উপজেলার কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান যে, কচু উৎপাদনকারী দলকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি পোকামাকড় দমনে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রয়োগ,মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছে।

গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এ প্রতিনিধি জানান যে, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, হাটহাজারী এরিয়া প্রোগ্রামের মাধ্যমে কৃষকদেরকে সংগঠিত করে আথুনিক পদ্ধতিতে কম পুজিতে অধিক লাভে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ, সরকারের বিভিন্ন দফতরের/ প্রতিষ্ঠানের সাথে সু সম্পর্ক উন্নয়নে মাধ্যমে কৃষকদের ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তিতে বলিষ্ঠ ভুমিকা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। পাশাপাশি সহায়ক কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে রাজধানী সহ জেলা ও বিভাগীয় শহরে পাইকার ও আরতদারদের সাথে যোগাযোগ সৃষ্ঠিতে কৃষকদের পাশে সরকারী ও বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ এগিয়ে আসা জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উল্লেখ্য যে, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের লক্ষ্যভূক্ত জনগোষ্ঠী বিশেষতঃ হতদরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ও পরিবারের সার্বিক উন্নয়ন শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা এবং শিশুর ক্ষমতায়নে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসছে।