image

ধুলোয় ধূসর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কঃবাড়ছে দূর্ঘটনা

image

ধুলোয় ধূসর হয়ে হয়ে দাড়িয়েছে কক্সবাজার-টেকনাফ আরকান সড়ক। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারনে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। নষ্ট হয়েছে কার্পেটিং। যার কারনে সড়কের চারিদিকে ধুলা উড়ছে। এক কথায় সড়কের অবস্থা বর্ণনা করা কঠিন। যা যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কার্পেটিং না থাকায় সড়কে শুধু ধুলো আর ধুলো। এ ধুলো থেকে কিছুতেই নিস্তার পাচ্ছে না যাত্রীসহ পথচারীরা। চরম অস্বস্তিতে পথ চলতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অস্বস্তিতে আছে ব্যবসায়ীরাও। ধুলোর কারণে তৈরী হয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এতে মানুষের সর্দি, চর্মরোগ, কাশিসহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

কক্সবাজার থেকে উখিয়া এবং টেকনাফ পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার এই আরকান সড়কের বর্তমানে করুন অবস্থা। খানাখন্দে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। সড়কের দু’পাশ প্রস্তস্থকরণের কাজ চলমান থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া এ সড়কটি এখন গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী ও চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত এক বছরে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে অর্ধশতাধিক লোক অকালে মৃত্যু বরণ করেছে। এসময় আহত হয়ে আরো শতাধিক লোকজন পঙ্গুত্ব অবস্থায় দিনযাপন করছে। এসব সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে যানবাহন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানান উখিয়া পরিবহণ সমবায় সমিতির অর্থ সম্পাদক বাদশা মিয়া।

সু-শাসনের জন্য সুনাগরিক (সুজন) এর উখিয়ার আহবায়ক, সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ বলেন, বিশেষ করে ২০১৭সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব রোহিঙ্গাদের সেবার নামে দেড় শতাধিক এনজিও’র ৫ হাজারের অধিক গাড়ী বর্তমানে সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। যার কারনে সড়কের এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

টেকনাফ স্থলবন্দর ও কাস্টম্স শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রফতানির যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে কক্সবাজার-টেকনাফ (শহীদ এটিএম জাফর আলম) আরকান সড়ক। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো এই সড়কটি। প্রতিদিন আমদানি-রফতানি কাজে ব্যবহৃত এক হাজার সহ¯্রাধিক পরিবহন । বর্তমানে এই সড়কে এত করে ধুলার বন্যা বইছে সড়কে যাহা বর্ণনা করার মতো নয়। রাস্তার ধারের দোকান-পাট, বাজার-মার্কেট সর্বত্র ধুলোয় দূষিত। পুরো সড়ক জুড়েই উড়ছে ধুলোবালি।

স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী চাকরিজীবী, গাড়ির চালক, সবাই অতিষ্ঠ ধুলোবালিতে। সড়কের দু’পাশের বাসা-বাড়ি দোকানপাটে ধুলোর জোয়ার। যাত্রীবাহী বাস, অটোরিকশা, টমটম থেকে শুরু করে সকল পরিবহণ চালকদের ধুলোর বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। যানবাহনের গতির সাথে উড়ে আসা ধুলায় সয়লাব আশপাশের এলাকা। দোকানপাট, হোটেল সবকিছুতে ধুলোর আস্তর জমছে। চারিদিকে এখন ধুলোবালির রাজত্ব। উড়তে থাকা ধুলোবালিতে ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টিসীমা। ধুলোবালির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দা আর পথচারীদের।

উখিয়া সদরের মোঃ আয়াচ নামের এক হোটেল কর্মচারী বলেন, যানবাহনের গতির সাথে বাতাসে উড়ে আসা ধুলায় হোটেলের টেবিল চেয়ার সাদা হয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর মুছেও চেয়ার টেবিল পরিষ্কার রাখা যাচ্ছে না।

প্রসাধনী বিক্রেতা মোঃ ফারুক বলেন, দোকান খুলে বসতেই চারিদিকে ধুলো। ধুলোর আস্তর জমছে দোকানে। প্রতিদিন মূছলেও কোন প্রসাধনী সামগ্রী পরিস্কার রাখা যাচ্ছেনা। এছাড়াও পথচারীদের অবস্থা আরও নাজুক। কোনোভাবেই ধুলো থেকে রেহাই মিলছে না।

উখিয়া স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, ধুলো চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি করে। ধুলোবালির কারণে বায়ু দূষণ হয়। বায়ু দূষণের কারণে সব বয়সের মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও চর্মরোগ রোগ দেখা দিতে পারে। ধুলোবালি থেকে রক্ষা পেতে তিনি মাক্স ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি এসময় আরো বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে হাসপাতালে এ সমস্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও অনেককে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।গতকাল রবিবার ও রাজাপালং ইউনিয়নের ব্র্যাক অফিসের সামনে একটি স্পেশাল সার্ভিস উল্টে গেলে ঘটনাস্থলে ১৫ জন যাত্রী আহত হয়।