কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জমজমাট চলছে ঈদ বাজার। এবং সেখানকার দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে দেশী-বিদেশী পণ্য ও সামগ্রী। সেই সাথে ঈদকে ঘিরে তাঁদের স্বদেশ মিয়ানমারের পণ্যও বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এবারে ঈদ আয়োজনে রোহিঙ্গারা বেশ মেতে উঠেছে। মুখরিত ক্যাম্পের অলিগলিতে যেন অগ্রীম ঈদের হাওয়া বইছে। পবিত্র ঈদ পালনের নানা প্রস্তুতি চলছে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে। মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে অনেকেই বেশ আমেজের সাথে এই পবিত্র ঈদুল-ফিতরকে বরণ করতে চান। তবে অনেকের মধ্যে সেই উল্লাসতা দেখা যায়নি।
রোহিঙ্গা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেশি পণ্য এবং মিয়ানামার থেকে টেকনাফ বন্দর দিয়ে ইমপোর্ট হওয়া চাইনিজ ও বার্মিজ কাপড়-সেন্ডেল সহ ইত্যাদি বিভিন্ন সামগ্রি। সেখান থেকে পাইকারী দরে কিনে এনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাজার দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে বিদেশী পণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে এমন কিছু সামগ্রী যেমন : চাইনিজ ও বার্মিজ কাপড়ের মধ্যে পুরুষদের লুঙ্গি, গেঞ্জি-প্যান্ট, শার্ট, সেন্ডেল সহ ইত্যাদি পণ্য-সামগ্রী। মহিলাদের পোশাকের মধ্যে বার্মিজ থামি, লেহেঙ্গা, চাইনিজ পোশাক, জুতা ও বিভিন্নরকম ডিজাইনের তাঁদের নিজস্ব রীতির কস্টিউমস, কসমেটিক সহ ইত্যাদি দেখাগেছে। রোহিঙ্গা বাচ্চাদের জন্যেও তাঁদের স্বদেশী পোশাক-সেন্ডেল-জুতা সহ মিলছে নানরকম পণ্যের সমাহার।
এদিকে দেশী পণ্যও বিক্রি করছেন রোহিঙ্গা দোকানীরা। জিন্স প্যান্ট, টি-শার্ট, মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের থ্রি-পিস ও পাথর লাগানো ফ্রক সহ দেশীও কাপড়চোপড় এবং জুতা-সেন্ডেল, বেল্ট ইত্যাদি সাজগোজের কসমেটিকস বিক্রি করছেন।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থানের পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছেন। পূর্বের তুলনায় এই ঈদ একটু অনন্য বলে মনে করছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দোকানদাররা।
তাঁরা মনে করে আরো বলেন,”শুরুর দিকে এসে ব্যবসা তেমন জমাতে পারেনি আমরা। দোকানপাট তৈরি ও জমি প্রস্তুত করা হয়নি প্রথম দিকে। এখানে এসেই মাথা গুঁজে থেকেছি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে একটু একটু ব্যবসায় হাত দিয়েছি এবং স্থানীয় দোকান থেকে পাইকারী দরে মালামাল ক্রয় করে রোহিঙ্গা বাজারে বিক্রি করছি বর্তমানে। তাই আমরা মনে করছি এবারে ঈদ উৎসবমুখর হতে পারে। কেননা সবাই এখন মুটামুটি দাঁড়িয়েছে একটা জায়গায়। ক্যাম্পের অনেকেই ঈদের বাজার করার সামর্থ রাখে বর্তমানে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা ব্যবসায়ী বলেন,আমি দোকান করছি বউয়ের সোনা-দানা বিক্রি করে ৬০ হাজার টাকা জমি ভাড়া নিয়ে। মিয়ানমারেও দোকান করতাম। কাপড়চোপড় বিক্রির প্রতিষ্ঠান ছিল সেখানে। তাই এখানে এসেও এই ব্যবসায় নেমেছি।
তিনি আরো বলেন,”রোহিঙ্গারা অনেকেই কিনছে আবার অনেকেই না। সবমিলিয়ে চলছেই ঈদ বাজার। ঈদের বাকি আরো কয়েকদিন তাই অনেকেরই কেনাকাটা বাকি।
আরেক ব্যবসায়ী সাকের বলেন,আমরা ওখানেও (মিয়ানমার) এই ব্যবসা করতাম। তবে ওখানে যেভাবে লাভবান হতাম, এখানে সেরকম লাভ করতে পারিনা। তবে এখন ঈদ উপলক্ষে কাস্টমার স্বাভাবিকের ছেয়ে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
Developed By Muktodhara Technology Limited