চট্টগ্রামে ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট রক্ত কেন্দ্র একটি দাতব্য রক্তদান কেন্দ্র হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি রক্তদান করেছেন চট্টগ্রাম রক্তদান কেন্দ্রে। প্রতিমাসে ১২০০০ ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করেন। রেড ক্রিসেন্ট আওতাধীন ৯টি ব্লাড ব্যাংকের মধ্যে যুব দের সহায়তায় ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট রক্ত কেন্দ্র সর্বোচ্চ রক্ত গ্রহণ করে থাকে, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আজ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে মাতৃ মৃত্যুর হার কমিয়ে গেছে। গড় আয়ু বিগত ১০ বছরের ৩৯ -৭৩ এ হয়ে দাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে বিনামুল্যে ঔষধ বিতরণ করা হয় যা এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান এবং ভারতে কার্যকর হয়নি। সেই সাথে বাংলাদেশে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হয়েছে। আমাদের দেশের ডাক্তাররা অনেক বেশি মেধাবী। এদেশের মানুষেরা যাতে বাইরের চিকিৎসা না নিয়ে দেশে চিকিৎসা সেবা নেয় এ বিষয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে অনেক নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সরকারী হাসপাতাল গুলোকে পরিষ্কার রাখা একান্ত প্রয়োজন। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য সেবা উন্নত হওয়ার মাধ্যমে ৩ কোটি মানুষের নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হয়। ১০ বছর আগের বাংলাদেশের তুলনায় এখনের বাংলাদেশের অনেক বেশি পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিটি মানুষের উন্নয়ন ঘটেছে। আগে বাইরের পুরনো কাপড় ধুয়ে পরিষ্কার করে পড়তাম। এখন আমাদের দেশের সেলাই করা কাপড় অন্যান্য দেশের বিপনী বিতানগুলোতে বিক্রয় হচ্ছে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেন, কমিউনিটি লিংকিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যে ভাবে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করছে তা ভারত করতে পারেনি। সমস্ত সূচকে আমরা ভারতকে ফেলে অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। আসুন সম্মিলিত ভাবে কাজ করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। রেড ক্রিসেন্টের বিশ্ব রক্তদাতা দিবস-২০১৯ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
আন্তর্জাতিক সেবা সংগঠন রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট ১৫০ বছর মানবতার পথ ধরে ঐতিহ্যের ধারায় নিজস্ব কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন ভাবে করে আসছে। ১৪ই জুন বিশ^ রক্তদাতা দিবস বাংলাদেশের ন্যায় বিশে^র প্রতিটি দেশে নানান কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট রক্ত কেন্দ্র, চট্টগ্রাম এর আয়োজনে চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি ইউনিট যুব রেড ক্রিসেন্ট, চট্টগ্রামের সহযোগিতায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ১৫ই জুন ২০১৯ইং উদ্যাপন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ঝধভব ইষড়ড়ফ ভড়ৎ অষষ। কর্মসূচির মধ্যে ছিল স্বেচ্ছায় রক্তদান, বর্ণাঢ্য র্যালী, দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান।
নগরীর প্রেস ক্লাবস্থ বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সেক্রেটারী আব্দুল জব্বার। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ শেখ শফিউল আজম।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম সিটি ও জেলা ইউনিটের কার্যকরী পর্ষদ সদস্য মহসীন উদ্দীন ফয়সাল, আশেক মামুন, ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট রক্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ডা: মো: মিনহাজ উদ্দিন তাহের, ইউনিট লেভেল অফিসার আবদুর রশিদ খান, যুব রেড ক্রিসেন্ট, চট্টগ্রামের যুব প্রধান মো: ইসমাইল হক চৌধুরী ফয়সাল, জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশরাফউদ-দৌলা-সুজন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, রক্তদাতা ও সিনিয়র যুব সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বছরব্যাপী রক্তদানে অনন্য ভূমিকা রাখায় বিভিন্ন কলেজ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় । সঞ্চালনা করেন যুব রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রামের সাগঠনিক বিভাগীয় প্রধান রাজীব দে। সরকারী সিটি কলেজ ২৬৫ ব্যাগ, সরকারী কমার্স কলেজ ১৮১ ব্যাগ, সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ১৪৫ ব্যাগ, সিইপিজেট ৫৭৩ ব্যাগ, কর্ণফুলী এক্সপোর্ট জোন ৪৬৯ ব্যাগ, মাইজভান্ডারী শাহ এমদাদিয়া ২৭০ ব্যাগ। ৫০ বার রক্তদান করেন বিপ্লব কুমার দাস, মো: জাকের হোসাইন, ৪০ বার রক্তদান করেছেন মোহাম্মদ জুয়েল, মো: মিছবাহ উদ্দিন বাহার। এইভাবে যারা ৩০ বার, ২০ বার বার ১০ বার রক্তদান করেছেন তাদের প্রত্যেককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
Developed By Muktodhara Technology Limited