image

গাইনী ডা: জাকিয়া সুলতানার অসতর্কতায় চট্টগ্রামে এক জননীর মর্মান্তিক মৃত্যু

image

ডেলিভারি রোগীর অপারেশনের পর রক্ত মোছার গজ পেটে রেখেই সেলাই করার কারনে মারা গেছেন উম্মে হাবীবা (সাইমা)

তিনি চট্টগ্রাম মহিলা মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান, হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক ও আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হক এর কনিষ্ঠ কন্যা এবং কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয় এর ইমাম ও নুজুম গ্রুপের অনারেবল ডিরেক্টর হাফেজ মাওলানা জমীর সাহেব এর বোন ।

বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার আমতলী এলাকার বাহাউদ্দীন চৌধুরী বাড়ির মোহাম্মদ মোক্তার হোসেনের স্ত্রী আলেমা উম্মে হাবীবা গত ৩১ মে চট্টগ্রাম চন্দ্রনগর মেরিন সিটি মেডিকেলে ডেলিভারি রোগী হিসেবে ভর্তি করান এবং
ওই দিনই তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। রোগীর অবস্হা অস্বাভাবিক থাকার পরও গ্যাসের ঔষধ দিয়ে রোগীকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে দেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ১৪ দিন অতিবাহিত  হলেও পেট ব্যাথা না কমে দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে রোগীর ভাসুর চট্রগ্রাম জেন্যারেল হসপিটাল, আন্দর কিল্লাহ এর হার্ট বিশেষজ্ঞ ডা: এমরান হোসেন তাকে চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ডাক্তাররা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটের ভেতর কিছু একটা দেখতে পান এবং পুনরায় অপারেশনের প্রয়োজন এ কথা রোগীর স্বজনদের জানান।

অপারেশন শেষে দেখা যায়, মেরিন সিটি মেডিকেলে সিজারের পর পেটের ভেতর রক্ত মোছার কাপড় (গজ) রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন গাইনী ডাক্তার জাকেয়া সুলতানা। অপারেশনে অংশ নেওয়া ডাক্তাররা পেট থেকে বের করে আনা গজ কাপড়গুলো রোগীর উপস্থিতে স্বজনদের দেখান। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকলে রোগীকে সেখানকার আইসিইউতে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই ১৪ জুন ভোর ৫ টায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এদিকে তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে স্বামীর পরিবার শোকে অনেকটা স্তব্ধ ও বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। মৃতের স্বামী মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন তার স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়েছেন এবং কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন আমার স্ত্রী হত্যার বিচার আল্লাহর কাছে দিলাম। আমার নিষ্পাপ সন্তানকে যারা এতিম করেছেন, তাদের বিচার আল্লাহ করবেন। এভাবে আর কেউ যেন আমার মতো স্ত্রী হারা আর অবুঝ শিশু মা হারা না হয়।”

ভূমিষ্ট হওয়া শিশুকন্যার নাম রাখা হয়েছে বুশরা। তাকে আপাতত নানা বাড়িতে রাখা হয়েছে। তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। সেখানেও শোকের মাতম চলছে বলে জানা গেছে। 

এলাকাবাসী অভিযুক্ত ডাক্তারের শাস্তি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে।