image

সাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন বাঁশখালীর জেলেদের

image

সাগরে সবধরনের মৎস্য আহরণ সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী-আনোয়ারা ও দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার অর্ধলক্ষাধিক জেলে ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।

সরকারিভাবে এসব জেলেদের জন্য খাদ্যরসদ হিসেবে ৪০ কেজি চাউল বরাদ্দ দেওয়া হলেও কতিপয় দুঃষ্কৃতিকারী জনপ্রতিনিধির লোভের শিকারে পরিণত হয়েছে জেলেরা। ৪০ কেজির স্হলে দেয়া হয়েছে ২০-২৫কেজি করে জেলেপ্রতি এমনটাই ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে জেলে পল্লীগুলোতে অভাব অনটনের টানপোড়নে দূঃর্বিষহ জীবন যাপন করছে পরিবারগুলো।

অপরদিকে জেলেরা মহাজন ও বিভিন্ন এনজিও সংস্হার কাছ থেকে উচ্চ সুদের বিনিময়ে নেয়া অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় তাদের উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যখন জেলে পল্লীগুলোর অবস্থা তখন সংশি­ষ্ট প্রশাসনের কর্তারা ভবিষ্যতে সরকারি সাহায্যের আশার বাণী শোনাচ্ছেন জেলে পরিবারগুলোকে।

এদিকে জেলে পল্লীগুলোর অভাবের আর্তনাদের বাস্তবতা খুঁজতে বাঁশখালীর শেখেরখীলের বৃহৎ জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, শিশু থেকে শুরু করে সকল বয়সের নরনারী অভুক্ত জীবন যাপনের চিত্র তুলে ধরেন এই প্রতিবেদকের কাছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তাছাড়া ঐ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, মানবেতর জীবনযাপনকারী জেলে পরিবারগুলোর প্রতি কতিপয় স্হানীয় ধর্ণ্যাঢ্য ব্যক্তিরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও যা অপ্রতুল।

জেলে পরিবারের দূর্বিষহ জীবন যাপনের সম্পর্কে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাগর উপকূলবর্তী প্রত্যেকটি ইউপির জেলেদের তালিকা প্রনয়ণ করে জন প্রতি ৪০ কেজি চাউল প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া ভবিষ্যতে সরকারি অনুদান প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরও সাহায্য সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান। তবে জেলেদের চাউল বিতরণে সংশি­ষ্ট ইউপির জনপ্রতিনিধি ও সরকারিভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারদের সমন্বয়ে বরাদ্দ কৃত ৪০কেজি চাউলের মধ্যে ২০-২৫কেজি করে চাউল বিতরণ করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী জেলে পরিবারগুলির অভিযোগ।

স্হানীয় সুত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া, শেখেরখীল, চাম্বল, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া ও খানখানাবাদ ইউনিয়নে অন্তত ২০ হাজার জেলে পরিবারের বসবাস। একইভাবে আনোয়ারা ও দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারের বসবাস রয়েছে। বাঁশখালীসহ সর্বত্র জেলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে একধরনের দুর্ভিক্ষ। ঐ পরিবারগুলোর সদস্যরা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

শেখেরখীল সরকার বাজার এলাকার বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও স্হানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হোসেন ভুট্টো বলেন, বিগত দিনের চাইতে এবার দীর্ঘ সময় ধরে সাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় জেলে পরিবারগুলো খুবই সংকটাপন্ন জীবন যাপন করছেন।অচিরেই সরকারের সংশি­ষ্ট কতৃপক্ষ ও উর্দ্ধোতন কতৃপক্ষের এ বিষয়টির সুরাহার নিমিত্তে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

ওই এলাকার মোরশেদুল হক জানান, উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবীকার প্রধান উৎস সাগর। সাগরে মৎস্য আহরণ মানেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তন। সরকারী সিদ্ধান্তে সাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় জেলেপল্লীতে পড়েছে ব্যাপক প্রভাব।খাদ্যাভাবে নানা রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।