image

প্রেমের টানে হবিগঞ্জ থেকে বাঁশখালী, অতঃপর ধর্ষণের শিকার যুবতি!

image

প্রেমের টানে সুদূর সিলেট থেকে প্রেমিকের সঙ্গে বাঁশখালীতে দেখা করতে এসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক যুবতী। প্রতারক প্রেমিকের বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। মামলায় ওই ধর্ষণের পেছনে সহযোগী হিসেবে তার মামাত ভাই এবং ফুফাত ভাই জড়িত বলে দাবি করা হয়। 
রোববার মামলার বাদী বিউটি আক্তার বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার সদর এলাকার ৬ নাম্বার রায়ছুড়া ইউনিয়নের মৃত নজির হোসেনের কন্যা বিউটি আক্তার মনি (২২) চাকরির জন্য ২০১৪ সালে দুবাইতে পাড়ি জামান। সেখানে তিনি ওয়াইটার কোম্পানির আওতাধীন রেস্টুরেন্টে মেসিয়ার হিসেবে কাজ করেন। দুই বছর পূর্বে দুবাইতে উক্ত রেস্টুরেন্টে বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম সিকদারের পুত্র মো. রুবেল সিকদারের সঙ্গে বিউটির পরিচয় হয়। রুবেল ৮ বছর যাবৎ দুবাইতে কর্মরত ছিল। এক পর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এর পর রুবেল তাকে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে ১ বছর দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করবে বলে গত রমজানের ১ মাস পূর্বে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। 

এদিকে রুবেল গত ২৫ জুন বাংলাদেশে আসলে তার সাথে সামজিকভাবে বিবাহ হবে বলে আশ্বাস দিয়ে তাকে চট্টগ্রামে আসতে বলে। সেই কথা অনুযায়ী ৭ জুলাই হবিগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম অলংকার মোড় এসে পৌঁছলে রুবেল তাকে সিএনজি ট্যাক্সিযোগে নতুন ব্রিজ এলাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বিউটির কাছে রক্ষিত ৩ লক্ষ টাকা রুবেল নিয়ে নেয়। পরে তাকে একটি ঠিকানা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাসে তুলে দেয়। ঠিকানা অনুযায়ী বিউটি বাঁশখালী পৌঁছলে বাড়িতে কেউ না থাকায় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পরে রুবেলের ফুফাত ভাই পরিচয় দিয়ে তাকে পার্শ্ববর্তী তার আরেক ফুফির বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে রুবেলও আসে। ওই বাড়িতে তাকে ধর্ষণ করা হয়! পরের দিন তাকে পুনরায় চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বিয়ের কথা তুললে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। 

এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রুবেলের মা, বাবা, ভাই, বোন সবাই তাকে মারধর করে। পরবর্তীতে বাঁশখালী থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে ওই যুবতী বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় ১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। 

এ ব্যাপারে বিউটি জানান, রুবেল দুবাই থাকা অবস্থায় আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অসংখ্যবার দৈহিক সম্পর্ক করে। যার ফলে ২ বার আমাকে গর্ভবতী হতে হয়েছে। সে আমাকে দেশে গিয়ে সামাজিকভাবে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে আমার গর্ভপাত ঘটায়। দেশে এসে বিবাহ করার কথা বলে আমাকে তার গ্রামে নিয়ে গিয়ে আবারো ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে বিয়ের কথা বললে তার মা, বাবা, ভাই বোন সকলে মিলে আমাকে মারধর করে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আমাকে তাদের কবল থেকে থানা পুলিশ উদ্ধার করে। যার ফলে আমি বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করি। 

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বাঁশখালী থানা পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও তিনি জানান।