image

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে খোরশেদ আলম সুজনের মতবিনিময়

image

চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিষ্ঠায় বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক জনদুর্ভোগ বিষয়েবন্দরের চেয়ারম্যানের সাথে তাঁর দফতরে এক মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত মত প্রকাশ করেন।

এ সময় সুজন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদপিন্ড হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিক উন্নতির ফলে দেশের অর্থনীতি এক মজবুত কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় চট্টগ্রাম বন্দর এখন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ গৌরব চট্টগ্রামবাসী তথা সমগ্র দেশবাসীর। কিন্তু চেরাগের নীচে অন্ধকারের মতো যারা পূর্বপুরুষদের ভিটে মাটি ছেড়ে দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রেখেছেন তাদের জন্য বন্দর কর্র্তৃপক্ষ কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে না।উপরন্তু বন্দর কেন্দ্রিক যানজটের কারণে এই এলাকার মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্দরের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে গিয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো এবং স্থাপনা নির্মাণের ফলে এলাকাবাসী এখন জলাবদ্ধতার শিকার। বিভিন্ন এলাকার পানি নিস্কাশনের যে খালগুলো ছিল বন্দরের স্থাপনার কারণে সেগুলো ভরাট হয়ে ক্রমান্বয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত স্কুল কলেজে এলাকার শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ খুবই কম। বন্দরের হাসপাতালেও সাধারণ জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার সুযোগ নেই বললেই চলে। তাছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় বিশেষ করে বিমানবন্দর সড়কে স্থাপিত কন্টেইনার ইয়ার্ডগুলোর জন্য ঐ সকল এলাকার জনগনের নাভিশ্বাস চরমে। কন্টেইনারইয়ার্ডগুলোর লরি, ট্রাক এবং কাভার ভ্যানের কারণে বিমানবন্দর সড়কটি প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত দাবীর সাথে সহমত পোষন করেন। তিনি বলেন, সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে এই নগরীতে বিভিন্ন ভাবে সেবা সংস্থাসমূহ পৃথক পৃথকভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। তাছাড়া সম্প্রতি ভারী বৃষ্ঠিতে রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গাড়ীর স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হয়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও বন্দরকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ী নগরীতে প্রবেশ করছে। আর পরিকল্পিত টার্মিনাল না থাকায় এসব গাড়ীগুলো নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাকে আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি এবং ইয়ার্ড তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। বে টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চলছে। বে টার্মিনাল প্রস্তুত হলে ইয়ার্ডগুলো সেখানে স্থানান্তর হবে। তখন বন্দর কেন্দ্রিক যানজট অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বন্দর কেন্দ্রিক জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে তিনি সহানুভুতি প্রকাশ করেন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করারও আশ্বাস প্রদান করেন।

মতবিনিময় সভা শেষে নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজনের নেতৃত্বে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি চেয়ারম্যানের নিকট হস্তান্তর করেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনচট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোঃ ওমর ফারুক, রাজনীতিবিদ হাজী মোঃ ইলিয়াছ, সংগঠনের সদস্য সচিবহাজী মোঃ হোসেন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, হাফেজ মোঃ ওকার উদ্দিন, এজাহারুল হক, মোঃ শাহজাহান, সমীর মহাজন লিটন, স্বরূপ দত্ত রাজুপ্রমূখ।