image

বাঁশখালীতে জমে উঠেছে পশুর হাট, বেচা-কেনা সন্তোষজনক

image


চট্টগ্রামে বাশঁখালী উপজেলায় বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে পশুর হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে কুরবানির পশু। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) থেকে প্রায় সবকটি স্থায়ী-অস্থায়ী বাজারে ক্রেতাসহ গরুর উপচে পড়া ভিড়। পুরোদমে শুরু হয়েছে বেচা-কেনা। 

এদিকে লাভের আশায় ব্যাপারিরা আগেভাগেই হাটে নিয়ে এসে শুরু করেছেন গরু-মহিষের পরিচর্যা। কেউ খাওয়াচ্ছেন খড়, কেউবা রং লাগাচ্ছেন কুরবানির পশুর শিংয়ে আবার কেউবা পানিতে ধুয়ে দিচ্ছেন পশুর শরীর। 

বাঁশখালীর প্রসিদ্ধ গরুর বাজার হিসেবে পরিচিত রামদাশ মুন্সির হাট, চাম্বল বাজার (গজা হাট), ছনুয়া মনুমিয়াজী বাজার, জালিয়াখালী নতুন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ক্রেতার পাশাপাশি শহুরের ক্রেতারও সমাগম হয়েছে বাজারগুলোতে। গরু বিক্রেতারা আশা করছেন গতবারের চেয়ে এ বছর তারা চড়া দাম পাবেন।
গরু বিক্রয় করতে আসা উপজেলার শিলকুপ এলাকার নাছির উদ্দীন জানান, বাজারে আসা সবচেয়ে বড় গরুটির মূল্য হাকা হয়েছে এক লাখ বিশ হাজার টাকা। তিনি গরুটি গত বছর ক্রয় করেছেন ষাট হাজার টাকায়। দীর্ঘ এক বছর পরিচর্যা শেষে এবারের কুরবানির বাজারে তিনি গরুটি বিক্রি করতে এনেছেন। এবারের বাজারে গরুটি চড়া দামে বিক্রয় করতে পাববেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রামদাশ মুন্সির হাটের ইজারাদার ফরহাদ বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে হাটগুলোতে এ বছর ভারত, মিয়ানমার ও দেশের উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, কুষ্টিয়া এবং টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের করিডোর এলাকার গরু তুলনামূলক কম হলেও দেশীয় গরু বেশি। এ সময় গরুর অতিরিক্ত দামের কারণে এখনো অনেকই গরু কিনছেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা মো. ফরিদুল আজিম জানান, স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবে বাঁশখালীর কুরবানির পশু। বিগত বছরের তুলনায় এবার বাঁশখালীতে রেকর্ড সংখ্যক গবাদি পশু মোটাতাজাকরণ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করতে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের চারজন চিকিৎসক উপজেলার স্থায়ী বাজার রামাদাশ মুন্সীর হাট ও চামম্বল গজারটাসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দেখাশুনা করছেন বলেও জানান প্রাণিসম্পদ বিভাগের ওই কর্মকর্তা।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন গরুর বাজারগুলোতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরাপদে পশু বেচা-কেনা করতে পারবেন। নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেক বাজারে পুলিশের পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিশেষ টিম কাজ করছে। এ সময় নকল টাকা প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, এ বছর বেশ কয়েকটি বাজারে কুরবানির পশুর হাটে গরু-ছাগলের পাশাপাশি মহিষের ভিড়ও লক্ষণীয়। উপজেলার টাইমবাজারে গত বৃহস্পতিবার ৩০টি ছাগল ও ২০টিরও অধিক গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাটের ইজারাদার মুহাম্মদ বেলাল সিকদার। অপরদিকে জালিয়াখালী বাজারে দুইশের অধিক গরু, ৫০টির অধিক ছাগল, ২০টি মহিষ বিক্রি হয়েছে বলে জানান বাজারের ইজারাদার মো. আব্দুর রহিম। 

এছাড়া বাঁশখালীর বিভিন্ন হাটবাজারে কুরবানির পশুর ভিড় ছিল দেখার মতো। দিন যতো ঘনিয়ে আসবে বিক্রি তত বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাজার পরিচালনায় সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঈদুল আজহায় বাঁশখালীতে বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট-বড় প্রায় ২৫ থেকে ৩০টিরও অধিক কুরবানির পশুর বাজার বসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।