image

এলাকায় মিষ্টি বিতরণ : অবশেষে মারা গেলো রাঙ্গুনিয়ায় গুলিবিদ্ধ কুখ্যাত সন্ত্রাসী ওসমান 

image

রাঙ্গুনিয়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী ওসমান (৩৩) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে মারা গেছেন।

রবিবার (১ সেপ্টম্বর) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেলে তিনি মারা যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা।

শনিবার (৩১ আগস্ট) ভোরে সন্ত্রাসী ওসমান উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের সিরিয়া এলাকায় প্রতিপক্ষের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এরপর থেকে সে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পুলিশ পাহাড়ায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এদিকে তার মৃত্যুতে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন এলাকাবাসী। সরফভাটা ক্ষেত্রবাজার এলাকায় আনন্দ মিছিলও করেছেন তারা।

নিহত ওসমানকে পাহাড়ারত পুলিশ ও রাঙ্গুনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইসমাঈল হোসেন জুয়েল বলেন, ‘সন্ধ্যায় তার শরীরে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে তার শরীরে ৬টি গুলিবিদ্ধ হয়েছিল।’ 

সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, গুলিবিদ্ধ কুখ্যাত সন্ত্রাসী ওসমান মারা যাওয়ার খবরে পুরা সরফভাটায় স্বস্তি নেমে আসে। তার মৃত্যুতে সাধারণ মানুষ উল্লাস প্রকাশ করে এবং এলাকায় এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন। সরফভাটা ক্ষেত্রবাজারে একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। যেখানে ত্রিশ কেজিরও বেশি মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত আনন্দ সমাবেশে বক্তব্য দেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুর রউফ মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুচ, সরফভাটা যুবলীগ নেতা খোরশেদ আলম প্রমুখ। আনন্দ সমাবেশ থেকে তার অপরাধ রাজ্যের অপর ভাই গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসী তোফায়েলের ফাঁসি দাবী করেন নেতৃবৃন্দ।  

জানা যায়, নিহত ওসমানের বিরুদ্ধে প্রবাসী ইদ্রিছ, কাশেম, যুবলীগ নেতা মঞ্জু, সিএনজি অটোরিক্সা চালক শহীদুল ইসলাম সহ ৮টি নৃসংশা হত্যাকান্ড, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই, অপহরণ সহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছিল। গত ১ বছর ধরে সরফভাটার পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেন সন্ত্রাসী ওসমান বাহিনী। সেখানে বসে আশপাশের গ্রামে ডাকাতি ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। তাদের ডাকাতির বিস্তৃত ঘটেছিল পাশের বেতাগী ও পোমরা ইউনিয়নে। সরফভাটার পাহাড়ে সাধারণ মানুষের ক্ষেত খামারে যেতে হলে তাদের চাঁদা দিয়েই যেতে হয়েছিল। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে পাহাড়ে সাধারন মানুষের সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে নিয়ে যেতো ওসমান বাহিনী। তাদের অত্যাচারে মীরেরখীল, হাইদেরকুল, গঞ্জম আলী সরকার বাড়ি, জঙ্গল সরফভাটাসহ আরো কয়েকটি গ্রামবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা ধার্য্য করে আদায় করছে সে। বিশেষ করে প্রবাসীর পরিবার গুলো তাদের টার্গেট। কেউ দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই চলতো হামলা নির্যাতন। লাগাতর চাঁদাবাজী করে আসলেও গ্রামের কেউ সহজে পুলিশের কাছে যাননা সন্ত্রাসী ওসমান বাহিনীর ভয়ে। 

উল্লেখ্য রাঙ্গুনিয়ায় হত্যা, ডাকাতি, মারামারি সহ একাধিক মামলায় পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. ওসমান (৩৩) শনিবার (৩১ আগস্ট) ভোরে প্রতিপক্ষের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এরপর প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে পাহাড়ায় রেখেছিল। ওসমান পশ্চিম সরফভাটা গঞ্জম আলী সরকারের বাড়ির আবুল কালাম প্রকাশ আবুইল্যার পুত্র।