image

ই-নামজারি অক্টোবরেই হটলাইন চালু

image

ই-নামজারি (অনলাইনভিত্তিক নামজারি বা মিউটেশন) সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া ও ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতে আগামী মাসেই হটলাইন চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি বলেন, আগামী মাসের মধ্যে হটলাইন চালু করা হবে। এর মাধ্যমে জনগণ ভূমিসংক্রান্ত সমস্যা জানাতে পারবে। তবে রাতারাতি কোনো কিছুই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-নামজারি সক্ষমতা মূল্যায়ন গবেষণালব্ধ ফলাফল বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা জানান।

এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ক্যান্ডিডেট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমিসংক্রান্ত যেকোনো হয়রানির কথা সরাসরি মন্ত্রণালয়ে জানাতে আগামী মাসের মধ্যে হটলাইন নম্বর চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ভূক্তভোগী তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবে। সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

এছাড়া সেবা নিশ্চিতের পর গ্রাহকরা সেবা মান নিয়ে তাদের সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টব বিষয়ক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন ওয়েবসাইটে সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে মূল্যায়ন করে ভূমিসেবার মান বাড়ানোর ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ই-নামজারি সেবা চালু হওয়ায় নামজারির সময়সীমা ৪৫ দিন থেকে ২৮ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ ই-নামজারি পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণে, সনাতন পদ্ধতির চেয়ে উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা প্রর্থীদের গমনের হার ১৭ শতাংশ কমেছে। একইসঙ্গে সময় ব্যয় করার হার ৭ শতাংশ কমেছে। ডিজিটাল সুবিধা আরও বাড়লে ও আইসিটি লিটারেসি বাড়লে আরও সময় কমে আসবে। অর্থাৎ ভূমি সেবা গ্রহণে সময় ও পরিদর্শন কমে যাওয়ার ফলে ব্যয় কমে যাচ্ছে। এর ফলে নাগরিক সন্তুষ্টি বাড়ছে।

তিনি বলেন, আমরা ই-গভর্নেন্সের রোল যত বেশি বাড়াতে পারবো তত বেশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। গত এক বছরে ই-নামজারির জন্য ১০ লাখ লোক আবেদন করেছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত এ সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হবে না। এজন্য আমাদের সময় দিতে হবে।

সাইফুজ্জামান বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। এজন্য আমরা কয়েকটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তাই এখানে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কাজই হচ্ছে সবচেয়ে বড়। এজন্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষদের। কারণ তারা এক হাত জায়গাও ছাড়তে চায় না।

তিনি বলেন, সাড়ে ৪ কোটি আরএস ও সিএস খতিয়ানের মধ্যে পৌনে চার কোটি আমাদের ডাটাবেজে আপলোড করা হয়েছে। এগুলো অনলাইনে পাচ্ছে সবাই। আর ৫০ হাজার আপলোড করতে পারলেই এক্ষেত্রে শতভাগ হয়ে যাবে।

তাৎক্ষণিক ভিজিটের কথা উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, সিস্টেমের উন্নয়ন করতে না পারলে তাৎক্ষণিক ভিজিটের কোনো উপকারিতা পাওয়া যাবে না। রেজিস্ট্রেশন বিভাগের অংশটায় বেশ সমস্যা রয়েছে। এটা কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় না, এটা হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়ের আওতায়। রেজিস্ট্রেশন বিভাগটা যেহেতু আমার মন্ত্রণালয়ের আওতায় নয়, তাই আমি এখানে হাত দিতে পারছি না।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা ফলাফলে দেখানো হয়, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সেবা দেওয়ার হার ই-নামজারির মাধ্যমে ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বেড়েছে এবং বর্তমান ২৮ দিনের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বেড়েছে। প্রান্তিক অঞ্চলে অনেক সময় সেবা গ্রহীতারা ভূমি অফিসে গিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা নেন।

গত ১৮ এপ্রিল থেকে জুন ১৯ পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নামজারি সেবা ও ই-নামজারি সেবা দেওয়ার বিষয়ে ১৫৫টি উপজেলায় এ বিষয়ে গবেষণা করা হয়েছে।