image

দেশে যে দুর্নীতি ব্যাপক হারে চলছে, তা প্রমাণিত হয়েছে- মির্জা ফখরুল

image

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে যে দুর্নীতি ব্যাপকহারে চলছে, ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে বাদ দেওয়ায় সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে যে কী হারে দুর্নীতি চলছে, এতে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। শুধু তো একটা প্রকাশ হয়েছে। যেটির কারণে একটা সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করতে হয়েছে। এটা তো সারাদেশেই চলছে। এটিই প্রমাণ করে যে দুর্নীতি কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে।

‘বহিষ্কার পদ্ধতি কেমনভাবে দেখছেন?’ জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, প্রত্যেকটি সংগঠনের নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে যতটুকু জানি, তাদের সংগঠনের নেত্রী হলেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই সাংগঠনিক অভিভাবক। সুতরাং এখানে বহিষ্কারের কী বিধান আছে সেটা আমার জানা নেই। তবে সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে তিনি ব্যবস্থা নিতে পারেন। তিনি পদত্যাগ করতে বলেছেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ করেছেন। এখানে জটিলতার কিছু নেই।

ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আইন দিয়ে রাজনীতি হয় না। আমি আগেও বলেছি, আদালত দিয়ে যে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেখানেই আমাদের আপত্তি। এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা যে, একটা রাজনৈতিক দলের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে আদালত। আবার সেটা সরকারই করাচ্ছে। সরকারের উদ্যোগেই হচ্ছে। এতে প্রমাণ করে যে, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বিরোধীদলেও বিশ্বাস করে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের মূল মন্ত্রই হচ্ছে জনগণ। আর দেশের জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে দেশে একটা প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠিত হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে আজ দু’টিই অনুপস্থিত।

‘আশির দশক থেকে শুরু করে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বার বার গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। অথচ আজ তিনি মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি। বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে। ২০০৭ সালে যে বছর গণতন্ত্র দিবস পালন শুরু হয়, সেই বছরই এক-এগারোর সেনাসমর্থিত সরকার আসে। সেদিন থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতা শুরু হয়।’

তিনি বলেন, আজকে আমরা জনগণকে বলতে চাই, গণতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে আসুন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র মুক্তি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা ও উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্র বিনির্মাণ করি। এ লক্ষ্যে দল, মত, বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে যে গণতান্ত্রিক চেতনায় জন্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে বদ্ধপরিকর।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে দুই ধরনের আইন চলছে। একটা সরকারি দলের জন্য। আরেকটা বিরোধীদের জন্য। যেমন আমরা দেখেছি, এক-এগারোতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ২১টি মামলা ছিল। একটি মামলাও এখন নাই। একই ধরনের মামলা যেসব বিএনপি নেতাদের নামে ছিল, এখনও সেগুলোর ট্রায়াল চলছে। দেশে যদি একটা আইন থাকতো, তাহলে আজকে প্রধানমন্ত্রীও ট্রায়াল ফেস করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।