image

সম্ভাবনার দুয়ারে নতুন পালক ওয়াটার বাস : যাত্রা ডিসেম্বরেই

image

চট্টগ্রাম শহরের মূল সড়কটি হলো শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সড়ক। এটি এশিয়ান হাইওয়ে কিংবা ভিআইপি সড়ক নামেও পরিচিত। এ সড়কে চলাচলকারী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বিকল্প হিসেবে অনেক কিছুই ভাবা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। যানজট এড়িয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিকল্প পথ হিসেবে নদী পথকে ব্যবহারের পরিকল্পনা নগরবিদদের। তারই ধারাবাহিকতায় পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম নেভাল থেকে সদরঘাট পর্যন্ত চালু হতে যাচ্ছে কাঙ্খিত ওয়াটার বাস।

আগামী ৫ ডিসেম্বর নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি থেকে এ ওয়াটার বাস সার্ভিস উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন ওয়াটার বাস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এসএস ট্রেডিং কর্তৃপক্ষ।

অত্যাধুনিক এ ওয়াটার বাস সার্ভিস সদরঘাট থেকে বিমানবন্দর যাত্রীদের নিয়ে যাবে মাত্র ৩০ মিনিটে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিনন্দন এ দ্বিতল ওয়াটার বাস চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ড্রাইডকের সঙ্গে যৌথ বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে রয়েছে এসএস ট্রেডিং নামে বেসরকারি সংস্থা। মূলত তারাই বাসগুলো চালাবে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে বন্দর এবং ড্রাইডক কর্তৃপক্ষ তদারকি করবেন। প্রথম পর্যায়ে দুটি বাস দিয়েই এ সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। 

৩৫ কিলো নটিকেল মাইল স্পিডের ৩৭ ফিট উচ্চতার ও ১১ ফিট প্রশস্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি ওয়াটার বাসে ২৫টি করে আসন রয়েছে। স্ট্যান্ডিং হিসেবে ৫ জন যেতে পারবেন। রয়েছে পর্যাপ্ত লাগেজ স্পেস এবং ওয়াইফাই সুবিধা।

বিমানবন্দর টু সদরঘাট, সদরঘাট টু বিমানবন্দর এ পথে চলাচলকারী এ ওয়াটার বাসের টিকেট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। শুধু বিমান যাত্রী নয়, যে কেউ এ সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। বিমান যাত্রীদের জন্য বাড়তি সেবা হিসেবে নেভাল থেকে নিজস্ব এসি বাসে করে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়া হবে।

প্রথম পর্যায়ে ওয়াটার বাস দুটি প্রতিদিন ৫ বার করে (যাওয়া-আসা মিলে ১০ বার) চলাচল করবে। বিমানযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বিমানের সময়সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে বাস ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা না থাকায় মাঝপথে যাত্রী ওঠা-নামার সুযোগ নেই।

ইতোমধ্যে সদরঘাট এবং নেভালে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ও কাউন্টার ভবন। কাউন্টারে সামনে তৈরি করা হয়েছে বিশাল পার্কিং স্পেস। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ওয়াটার বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত বন্দর কর্তৃপক্ষের অনেক আগে থেকেই নেওয়া। চট্টগ্রামের মানুষের বিশেষ করে বিমান যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ড্রাইডক এ প্রকল্পটি দেখভাল করবে। ইতোমধ্যে ওয়াটার বাস পরিচালনাকারী সংস্থা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এসএস ট্রেডিং এর সঙ্গে যাবতীয় চুক্তিও শেষ। ওয়াটার বাসও তৈরি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ সার্ভিস চালু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম ড্রাইডকের নেওয়া ওয়াটার বাস সার্ভিসের উদ্যোগটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা এসএস ট্রেডিং এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, আধুনিক যাত্রীসেবা দিয়ে সর্বনিম্ন সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে যাত্রীদের। বিমানযাত্রীদের ঘাট থেকে বাসে পৌঁছে দেওয়া হবে বিমানবন্দরে। চাহিদার ওপর ভিত্তি করে এ সেবায় আরও নতুন নতুন বাস যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

ভাড়া বেশি বলে ইতোমধ্যে যে সমালোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সেইভ টাইম, সেইভ মানি স্লোগানে শুরু করছি। এখানে বিমানযাত্রীদের কথা মাথায় রাখা হয়েছে। এখানে খরচ অনেক বেশি। তাছাড়া যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত যেসব সেবা দেয়া হবে তার তুলনায় টাকা বেশি নয়।

তিনি আরও বলেন, ২৫ জন কর্মচারী, ফুয়েল কস্ট, দুটি টার্মিনাল কস্টসহ অনেক খরচ যা সংকুলান করে প্রতিবছর বন্দরকে দিতে হবে বছরে ১ কোটি টাকা। সুতরাং খরচ তো একটু বেশি পড়বেই।