image

আনোয়ারায় ভুয়া ডাক্তারের ছড়াছড়ি : প্রতারিত হচ্ছে রোগী

image

আনোয়ারায় ভুয়া ডাক্তারেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ফার্মেসি বা নিজস্ব চেম্বারে বসে অনেকেই ডাক্তার সেজে রোগীদের সাথে নিয়মিত প্রতারণা করে যাচ্ছে। নিজের নামে প্যাড ছাপিয়ে নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখে বিভিন্ন ডিগ্রি দেখিয়ে তারা নিরীহ সাদাসিধে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।

আনোয়ারায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছিল। তখন এসব ডাক্তারেরা গা ডাকা দিয়েছিল। অনেকেই চেম্বার বন্ধকরে অন্য পেশায় চলেযায়। এরপর আর আনোয়ারায় ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান দৃশ্যমান হয়নি। বর্তমানে অনেক ভুয়া ডাক্তার প্রশাসনের নজরদারির অভাবে আবার প্রতারণা ব্যবসায় জড়িত হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নিতে গেলে ধরা পড়তে হবে এমন আশঙ্কা থেকে ভুয়া ডাক্তাররা বিএমডিসির অনুরূপ বাংলাদেশ কম্বাইন্ড মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠন গঠন করে সেখান থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করে। এদের শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন বেশি নেই। কেউ কেউ সমাজ বিজ্ঞান কিংবা ব্যবসায় শিক্ষা পড়ার পর এসব ডাক্তারি সার্টিফিকেট নিয়েছে। অনেকেই এস এস সি পরীক্ষায় ফেল করেও এল এম এফ কোর্সের নাম করে ড়াক্তার নাম সংযুক্ত করে। ভুয়া ডাক্তাররা সাধারণত উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড, ব্যথা নাশক ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ, গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ের ওষুধ ও পেটের সমস্যায় ইমোটিলসহ পাঁচ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে থাকে। এগুলো খাওয়ার পর রোগীর অসুখ সাময়িকভাবে ভালো হলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়ে যায়। এই ডাক্তার ২০ থেকে ৩০টি ওষুধের নাম মুখস্থ করে তা দিয়েই সব ধরনের চিকিৎসা চালিয়ে যায়।

আনোয়ারার বটতলী, বারশত,রায়পুর, বরুমচড়া,বারখাইন, বৈরাগ, চাতরী,জুঁইদন্ডী,পীরখাইন,আনোয়ারা সদর ও হাইলধর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে গ্রামের সহজ সরল মানুষের সাথে এসব ভূঁয়া ডাক্তারেরা প্রতারণায় নেমেছে। ভুল চিকিৎসায় অনেক সময় মৃর্ত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

বটতলী রুস্তম হাটে রয়েছে একাদিক ভূঁয়া ডাক্তার। মোঃ শামসুল ইসলাম নামে এক ডাক্তারের সাথে কথা হয় সাঙ্গু প্রতিনিধির। ডাঃ মোঃ শামসুল ইসলাম নামে বটতলী,বারশত ও বৈরাগ ইউনিয়নে তাঁর ৪ টি চেম্বার রয়েছে। তাঁর ডাক্তারী প্রেসক্রিপশনে লিখা আছে এল.এম.এ.এফ(ঢাকা), আর. এম.পি রিফ্রেসার্স(সিভিল সার্জন), উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স,আনোয়ারা, জেনারেল ফিজিসিয়ন, রেজিংনং ১৩৫৯,৫৯৬০,১৪২।  তিনি সাঙ্গু  প্রতিবেদককে জানান আনোয়ার স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ডাক্তারী পেশা শুরু করেন। তিনি প্যারালাইসেস, মেডিসিন, শিশু, চর্ম, জন্ডিস,এসব বিষয়ে চিকিৎসা করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এক রোগীকে চোখের চিকিৎসাও করেন তিনি। চক্ষু রোগের প্রশিক্ষন আছেকিনা জিজ্ঞাস করলে কোন উত্তর দেননি।

উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা  ডা. রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন ও ছাড়পত্র ছাড়া আর কারো ডাক্তার লিখে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। কিন্তু অনেক প্রতারক নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে কোন প্রকার পল্লী চিকিৎসকদের চক্ষো চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়না বলে জানান তিনি।