চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের আভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে মানুষের চলাচলের রাস্তায় বৈদ্যুতিক আলোর কোন সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে অন্ধকারে চলাফেলা করতে জনসাধারণকে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়।
ভাঙাচোরা রাস্তায় পথ চলতে হোঁচট খাওয়া, কাদায় পড়াসহ নানা বিপত্তি হারহামেশাই ঘটে। নিতান্ত প্রয়োজনে রাতে ঘর থেকে বের হলে মোবাইল কিংবা টর্চলাইটের আলোতেই ভরসা করতে হয় গ্রামবাসীকে। সন্ধ্যা হলেই গ্রামগুলোতে একপ্রকার ভূতুরে পরিবেশ তৈরি হয়।
এলাকাবাসী যাতে রাতের বেলায় নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে এবং চুরি-ডাকাতি ও অসাজামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধের লক্ষে স্থানীয়দের দাবীর প্রেক্ষিতে গ্রামীণ মানুষের জীবনে শহুরে ছোঁয়া দিতে দোহাজারী পৌরসভার তৎকালীন প্রশাসক ও চন্দনাইশ উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার আ.ন.ম বদরুদ্দোজা পুরো দোহাজারী পৌর এলাকাকে আলোকায়নের জন্য পৌরসভার রাজস্ব তহবিলের অর্থায়নে ৬৬লাখ ৩৬ হাজার ৬শ ৮৯ টাকা ব্যয়ে দোহাজারী পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তায় ১২টি মিটার বোর্ডের আওতায় বৈদ্যুতিক লাইন টানানো ও রাস্তায় বাতি লাগানোর জন্য ২০১৯ সালের ১৭অক্টোবর দরপত্র আহবান করেন।
প্রকল্পের কাজ পায় আরশা পাওয়ার সলিউশন নামীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে ধাপে ধাপে দিয়াকুল, জামিজুরী, ঈদপুকুরিয়া, চাগাচর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে খুঁটি স্থাপন করে বৈদ্যুতিক তার টানানোর পাশাপাশি সড়কবাতির শেডসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম স্থাপন করেছে উল্লেখ করে চলতি বিল পাওয়ার আবেদন জানিয়ে গত ১৯ জুলাই আবেদন করেন ঠিকাদার। আশি ভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে দাবি করে চলতি বিল না পাওয়ার অজুহাতে কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার।
এব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নুরুল আমজাদ চৌধুরী বলেন, "আশি ভাগ কাজ শেষ করার পর চলতি বিল চেয়ে আবেদন করার পর বার বার পৌরসভা কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও বিল পাওয়ার কোন আশ্বাস পাচ্ছিনা। নিয়মানুযায়ী আমরা চলতি বিল পাওয়ার যোগ্য। চলতি বিল কেন দেয়া হচ্ছেনা তা আমাদের বোধগম্য নয়।"
চন্দনাইশ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা একেএম বাদশা বলেন, "দোহাজারী পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তায় অন্ধকারে বেড়ে চলে নানা অসামাজিক কাজ। প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতের পরিবেশ থাকে শুনশান। সন্ধ্যার পর অন্ধকার রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে ভয় পায় বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হলে এলাকায় চুরি-ডাকাতি, জুয়াসহ নানা অপরাধ প্রবণতা কমবে। রাতের আঁধারে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।"
চলমান কাজের বিল চেয়ে ঠিকাদারের আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে দোহাজারী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম মৃধা বলেন, "পৌর এলাকায় সড়ক বাতির চলমান কাজের চলতি বিল চেয়ে ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রস্তুতকৃত বিলে সাক্ষর করে অনুমোদনের জন্য জুলাই মাসের শেষের দিকে প্রশাসক মহোদয়ের বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।"
এব্যাপারে দোহাজারী পৌরসভার প্রশাসক ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমতিয়াজ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "কি ধরনের কাজ হয়েছে, কয়টা বাতি লেগেছে, কয়টা পোল লেগেছে এই তথ্যগুলো প্রকৌশল বিভাগের যে ফাইল রয়েছে সে ফাইলে স্বয়ংসম্পূর্ণ নেই। এগুলো যাচাই-বাছাই করে পুর্নাঙ্গ করে ফাইল আমাকে দেয়া হয় নাই। যে ভাবে কাজ করার কথা এটা অস্পষ্ট আছে। ফাইলে এসমস্ত কোন তথ্য-উপাত্ত নেই। এই তথ্য উপাত্তগুলো সব কমপ্লিট করে ফাইল পুর্নাঙ্গভাবে করে দিলে তারপরে দেখবো।"
সকল জটিলতা নিরসণ করে দ্রুততম সময়ে কাজটি শেষ করার দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
Developed By Muktodhara Technology Limited