image

বাঁশখালী-কুতুবদিয়া সংযোগ ছনুয়া জেটিঘাট যেন ঝুলন্ত লাশ !!!

image

কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার সংযোগ 'ছনুয়া-কুতুবদিয়া টার্মিনাল জেটিঘাট' এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন ছনুয়া-কুতুবদিয়া টার্মিনাল জেটিঘাটটি কয়েকযুগ পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের মুখ দেখেনি। ছনুয়া জেটিঘাটটি সংস্কার না করায় মরণফাঁদে ঝুলে আছে উভয় অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ছনুয়া জেটিঘাট দিয়েই প্রতিদিন পারাপার করছে শিশু থেকে বৃদ্ধাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ। এতে মারাত্মক দূর্ঘটনার আশংকা প্রকাশ করছে প্রতিনিয়ত পারাপারকারী যাত্রী সাধারণ। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকার ডাক হলেও সংস্কারের নেই কোন উদ্যোগ।

শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ ও কাঠের তৈরি নড়বড়ে জেটিঘাটটি মাঝখান বরাবর দাবিয়ে গেছে। সাগরের সাথে সংযোগ ঘাটের ১০ থেকে ১২ ফুটের মতো দীর্ঘ অংশ মূল জেটিঘাট থেকে ঝুলে আছে। চরমঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে যাত্রীরা। এদিকে বিগত কয়েক বছর যাবৎ জেটিঘাটের রাস্তায় সরকারী জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ২টি দোকান।

জানা যায়, ছনুয়া টার্মিনাল জেটিঘাট হয়ে প্রতিনিয়ত লোকজন কুতুবদিয়া উপজেলায় যাতায়ত করে। এছাড়াও কুতুবদিয়ার পীরে কামেল মালেক শাহ (রহ:) এর মাজার জেয়ারত করার জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার ভক্ত-আশেক ও মুরিদনরা মাজার জিয়ারত করতে আসে এই জেটি দিয়ে। অধিকাংশ মানুষের কুতুবদীয়া-বাঁশখালী যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম এই ছনুয়া জেটিঘাট। অন্যদিকে কুতুবদীয়া-ছনুয়ার অধিকাংশ লবণ ও বঙ্গপসাগরে মাছ ধরার ট্রলার প্রতিনিয়ত এই ঘাটই ব্যবহার করে থাকে।

ঝুঁকিপূর্ণ ছনুয়া জেটিঘাট দিয়ে পারাপার করা রহিম দম্পতিদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, 'কুতুবদিয়ার পীরে কামেল হযরত মৌলানা মালেক শাহ (রহ:) এর মাজার জেয়ারত করার জন্য আমার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ছনুয়া হয়ে কুতুবদিয়া যেতে ঘাট পারাপারের যে শংকিত অবস্থায় পড়েছি তা জীবনের প্রথম। অথচ ঘাটের ডাক হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারী রাজস্বে জমা হয়। ইজারাদার কতৃক ঘাট পারাপারে টাকা তোলা হয়। মরণফাঁদে পরিণত ছনুয়া জেটিঘাটটি এখনো সংস্কারের মুখ দেখেনি। এটি দ্রুত সংস্কারের জন্য কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। অন্যতায় কুতুবদিয়ার সাথে বাঁশখালীর যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়ে পড়বে চরম দূর্বিসহ।'

কুতুবদিয়ার এক ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মুদ্দাছির প্রতিবেদককে জানান, 'ছনুয়া জেটিঘাট দিয়ে কুতুবদিয়ার ধুরুংঘাট ও আকবলীর ঘাটে প্রতিনিয়ত যাতায়ত করছে উভয় অঞ্চলের লোকজন। বিশেষ করে শহর থেকে ব্যবসায়ের জন্য বিভিন্ন মালামাল বহন করতে, নিয়মিত যাতায়তে এ ঘাটটিই ব্যবহার করছি চরম ঝুঁকি নিয়ে। যে কোন সময় ভয়ানক দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলে অাশংকা করেন তিনি।'

ছনুয়া টার্মিনাল জেটিঘাটের ইজারাদার মু. শমসের শরীফ বলেন, 'বিআইডব্লিটিএ এর অধীনে অন্যন্য স্থানের ঘাটগুলো পাকা থাকলেও বাঁশখালী অংশে ছনুয়া মনু মিয়াজি ঘাট এখনো পর্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। সরকার এই ঘাট থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা ডাকের মাধ্যমে আয় করলেও যুগ যুগ ধরে এই ঘাটটি অবহেলিত।' 

তিনি আরও জানান, 'বঙ্গোপসাগরে বর্ষা মৌসুমে তীব্র জোয়ার-ভাটার কারণে জেটি ঘাটটি ব্যবহার খুবই ভয়ানক হয়। অনেক সময় গাছের তক্তা গুলো ভেঙ্গে দূর্ঘটনার শিকার হয় সাধারন পথচারীরা। তাই কুতুবদিয়া-বাঁশখালীর পারাপরের একমাত্র অবলম্বন ছনুয়া জেটিঘাটটি মেরামত করা অতিব জরুরী হয়ে পড়েছে।'

এব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যান্তরিন নৌ পরিবহন (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রামের উপ পরিচালক নয়ন শীল প্রতিবেদককে জানান, 'কুতুবদিয়া-বাঁশখালী সংযোগ ছনুয়া মনুমিয়াজি জেটিঘাটটির বেহাল অবস্থার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। ছনুয়া জেটিঘাট সংস্কার করার জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। টেন্ডার বাস্তবায়ন হলেই খুব শীঘ্রই সংস্কার করা হবে।'