image

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো মওলা আলী (রাদ্বিআল্লাহু) কনফারেন্স

image

পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সুফীজের প্রেসিডেন্ট মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন রাহবারে শরিয়ত ও তরিকত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.) বলেছেন, খোলাফায়ে রাশেদাসহ সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি তথা মেয়ারে হক্ব। তাঁদের শান মর্যাদায় আঘাত হানা গোস্তাখি ও ঈমানহানিতার কারণ। তাঁরা ভুল ত্রুটি ও মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে। তাই সাহাবায়ে কেরাম বা শেরে খোদা মওলা আলীর (রা.) ভুল বিচ্যুতি খুঁজতে চেষ্টা করলে ঈমানহারা হতে হবে। হযরত আলীর মর্যাদা স্বয়ং সমুন্নত করেছেন মহান আল্লাহ পাক ও প্রিয় নবী (দ.)। যিনি ভুমিষ্ঠ হয়েছেন কাবা শরিফের ভেতরে। যিনি শিশু অবস্থায় চোখ খুলে প্রথমেই দেখেছেন প্রিয়নবীর (দ.) চেহারা।

সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, মওলা আলী (রা.) ৮/১০ বছর বয়সেই প্রিয়নবীর হাতে ইসলাম কবুল করেছেন। আরবে শিশুদের মধ্যে তিনিই প্রথম ইসলাম কবুলকারী। যিনি প্রিয়নবীর (দ.) সান্নিধ্যে বড় হয়েছেন। তিনি মদপান তো দূরের কথা, মদের পাত্রকেও ঘৃণা করতেন। কোনো ধরনের অপবিত্রতা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) পবিত্রতা, মর্যাদা ও অতুলনীয় জীবনাচারের কথা তো কুরআন-হাদিসের ছত্রে ছত্রে পাওয়া যায়। তাই তাঁদের ভুলত্র“টি ধরার চেষ্টা করা মারাত্মক কুফুরি।

খাজা-এ-বাঙ্গাল ইমাম শেরে বাংলা (রহ.) সুন্নি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মারকাযে এশায়ে আহলে সুন্নাতের সহযোগিতায় ১৪ নভেম্বর, শনিবার, বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে মওলা আলী (রাদ্বিআল্লাহু) কনফারেন্সে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মেহমানে আলার বক্তব্যে উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।

কনফারেন্সে উদ্বোধক ছিলেন হাটহাজারী ছিপাতলী দরবারে কাদেরিয়া চিশতিয়া আজিজিয়া শরিফের সাজ্জাদানশীন ছিপাতলি জামেয়া গাউছিয়া মুঈনিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, শেরে খোদা মওলা আলী (রা.) এর প্রতি শর্তহীন ভালোবাসা ও আনুগত্যই ঈমান। তাঁকে ঘিরে মিথ্যা অপবাদ দেয়া কুফুরি ছাড়া আর কিছু নয়। কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল আমিন হাশেমী দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন ও আনজুমানে আশেকানে মোস্তফা (দ.) বাংলাদেশ এর সভাপতি পীরে তরিকত আল্লামা কাযী মুহাম্মদ ছাদেকুর হাশেমী। তিনি বলেন, মওলা আলী (রা.) বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব ও শীর্ষস্থানীয় সাহাবা। তিনি ইসলামের জন্য জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন। খারেজিরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ও মনগড়া কল্পকাহিনী প্রচার করে ধিক্কারের পাত্র হয়েছে। হয়েছে পথভ্রষ্ট ও ঈমানহারা। তাই, সাহাবায়ে কেরামের শান মর্যাদা ক্ষুণœ হয় এমন আচরণ করা যাবে না। তাঁদের শানে বিরূপ মন্তব্য করলে ঈমানহারা হতে হবে তা যেন আমরা মনে রাখি।

ফয়েজলেক দারুল হুদা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে ত্বরীকত আল্লামা বেলায়েত হোসেন আল-কাদেরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বরুড়া লতিফিয়া দরবার শরীফের সাজ্জদানশীন মুফতি কাজী মুহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন লতিফি আলকাদেরী। প্রধান আলোচক ছিলেন ওষখাইন বিশ্ব নূরীয়া দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন মাওলানা মীর মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন নূরী সিদ্দিকী ওষখাইনি আলকুরাইশি। বিশেষ আলোচক ছিলেন আল আমিন বারীয়া দরবার শরীফের শাহ্জাদা মাওলানা সৈয়দ গোলাম দস্তগির বারী ও জাতীয় দরগাহ মাজার সংস্কার সংরক্ষণ কমিটির চেয়ারম্যান রাজনীতিবিদ মাওলানা মুহাম্মদ রেজাউল করিম তালুকদার, সাংবাদিক সৈয়দ দিদার আশরাফী ও ছাত্রনেতা মাছুমুর রশিদ কাদেরী। আরো অনেক আলেম উলামা, দরবারের পীর সাহেব, গবেষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী কনফারেন্সে অতিথি ও আলোচক ছিলেন। কনফারেন্সের সার্বিক আয়োজক ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন গোলামে খাজা শেরে বাংলা (রহ.) মাওলানা মুহাম্মদ মুছা কাদেরী। সঞ্চালনায় ছিলেন ছাত্রনেতা মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম ও কাযী মুহাম্মদ আরাফাত হোসেন।

মিলাদ কিয়াম শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কল্যাণ এবং বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার নাজাত কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.)।