ভোজ্য তেলের তৈলাক্ততায় হোচোট খাচ্ছে ভোক্তারা।গত একমাসে তেলের দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে।বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই কারো মনিটরিং। সরকারের বেধে দেয়া তেলের মূল্য কেউই মানছেন না।আমদানিকারক ও তেল ব্যবসায়ীদের সাফ কথা আন্তর্জাতিক বাজার চড়া, তাই দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।এদিকে টিসিবির ডিলার সমিতির নেতা তেল,চিনিসহ সকল ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিসিবিকে সরাসরি স্বাস্থ্য সম্মত ভোজ্য তেল আমদানির উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান।
গত এক মাসে সোয়াবিন তেল কেজি প্রতি বেড়েছে ২০/২৫ টাকা।পাম এর দামও বেড়ে কেজিতে১০ থেকে ১৫ টাকা।
ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকারক ও মিলারই দাম বাড়াচ্ছেন।আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারনে ওরা দাম বাড়াচ্ছে পাশাপাশি মিল গেট থেকে আমরা অর্ডার কাটার পরও মাল আসতেই লাইনে সময় লাগছে ৪/৫ দিন।যার ফলে পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে।যার প্রভাব তেলের উপর পরছে।এছাড়া চীন তার চাহিদার তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল ক্রয় করে মওজুদ করে আন্তর্জাতিক বাজারেই তেলের ঘাটতি তৈরি করেছে।এছাড়া করোনা ও খড়ার কারণে মালয়েশিয়া, ব্রাজিল ও উত্তর আমেরিকায় পাম চাষ বিঘ্ন ঘটেছে।যার ফলে তেলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ঢাকার পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বললেন,আগামী রমজানের আগে তেলের দাম কমার কোন সম্ভাবনা দেখছি না।তিনি বলেন, মার্চ মাসে পাম তেলের সিজন হলেও বাজার আসতে তা সময় লাগবে।এছাড়া ব্রাজিল,আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকায় খড়ারার কারনে সোয়াবিনের ক্ষতি হয়েছে।পাম উৎপাদনে মালয়েশিয়া করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তেলের বাজারে প্রভাব পড়েছে।তাই আগামী রমজানের আগে তেলের দাম কমার কোন লক্ষণ দেখছি না।আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সংকটের জন্য চীনের অধিক মাত্রায় তেল ক্রয়কে দায়ী করেন।
ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী নেতা বলেন,বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট বা ব্যবসায়ীদের কারসাজি বলে কিছু নেই।যখনই বাজারে চাহিদার চেয়ে জিনিস সংকট থাকে তখনই দাম বেড়ে যায়।তাই চাহিদার চেয়ে অধিক মওজুদ থাকলেই দাম বাড়বে না।তিনি বলেন,রমজানের তেলের চাহিদা বেড়ে যায়।তাই এখন থেকেই সরকারের সংশ্লিষ্টদের বাজার ও তেলের মওজুদ এর মনিটরিং দরকার।সঠিক তথ্য না থাকলে তেলের দাম বেড়ে গেলে ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করা হয়।তড়িঘড়ি করে বাজার নিয়ন্ত্রণে তেল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়।কিন্তু সময় মতো বাজারে তেল না আসলে আমদানির সুফল ভোক্তারা পান না।মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন,রমজানে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এখন শুল্ক,ভ্যাটসহ করআরোপ শিথিল করে তেল আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে।অন্যথায় রমজানের তেল নিয়ে সরকার কে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
এদিকে টিসিবির ডিলার সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জুয়েল বলেছেন ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে একমাত্র সরকারের বানিজ্য মন্ত্রণালয়ই পারবে। রমজানকে সামনে রেখে টিসিবিকে এখনই তেলা আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে।তিনি বলেন,৪/৫ বছর আগে দেশে ভোজ্য তেলের লিটার যখন ১১০থেকে১২০ টাকা ছিলো তখন মাত্র ১ মাসের মধ্যে টিসিবি সাউথ আফ্রিকা থেকে স্বাস্থ্য সম্মত দেড় লাখ টন ভোজ্য ফ্যামেলিয়র তেল আমদানি করে টিসিবির ডিলারদের মাধ্যমে সারাদেশে ৮৮ টাকা লিটার ধরে বিক্রি করে ভোজ্য তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছিলো।তাই যে খানে যে দেশেই স্বাস্থ্য সম্মত ভোজ্য তেল পাওয়া যাবে সেখান থেকেই সরকার কে তেল আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে।অন্যথায় রমজান মাসে তেলের ঘাটতি থাকলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না,এতে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হয়ে ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন।টিসিবির ডিলারদের নেতা ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জুয়েল বলেন,গত একদশক ধরে সরকার টিসিবির মাধ্যমে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।পেঁয়াজের বাজারই তার উদাহরণ। ভোজ্য তেলের পাশাপাশি সরকারের উৎপাদিত চিনি কল গুলোতে পরে থাকা চিনি নষ্ট হওয়ার আগেই যে কোন ভাবেই তা টিসিবির ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করলেই চিনির বাজারও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited