image

অযত্ন অবহেলায় অর্ধশতাব্দী পার করছে বাঁশখালীর শিলকুপ ইউপি ভবন

image

লোহার দরজায় মরিচা ধরেছে। খসে পড়েছে পুরো ভবনের দেওয়াল ও ছাদের পলেস্তারা। সবকটি জানালার কাঠ ভাঙা। জানালার লোহার শিকগুলোর বেশির ভাগই মরিচা ধরে ভেঙে গেছে। কক্ষের দেওয়ালগুলোতেও ধরেছে ফাটল। মাঝেমধ্যে ছাদের উপর থেকে আস্তর খসে পড়ছে। বৃষ্টির মৌসুমে ফাটল ধরা ছাদ বেয়ে মেঝেতে পানি ডুকে। ভাঙাচোরা আসবাব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সেমিনার বা বিচার-কক্ষের মেঝেতে। মেঝের আস্তরণ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক গর্ত। বাইরে থেকে মনে হবে ভূতুড়ে একটি ঘর, যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়বে ভবনটি। গত ২০ জানুয়ারী সরেজমিনে বাঁশখালী উপজেলার ৯ নং (ক) শিলকূপ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভূতড়ে এ ভবনে চলছে শিলকূপ ইউনিয়ন পরিষদের দৈনন্দিন কাজ। ভবনের একটি কক্ষ ইউনিয়ন সচিবের, একটি গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাঝখানে বেশ বড় একটি কক্ষ। মূলত এখানেই ইউনিয়ন পরিষদের দৈনন্দিন কাজ চলার কথা থাকলেও ঝুঁকিমুক্ত নয় ভবনের ছাদ। অন্য সারিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়। ইউপি সচিব ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। এরপর ভবনটির আর কোনো সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে এটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় জায়গার অভাবে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ইউপি সচিব মুহাম্মদ রহিম উল্লাহ্ বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পুরোনো ভবন, ভাঙাচোরা আসবাবপত্র। দুর্ঘটনার ভয় নিয়েই এখানে কাজ করি নিত্যদিন। ভবনটি এতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে, যে কোন মুহূর্তেই ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা। বিচারকাজ পরিচালনার সময় বাদী-বিবাদীর লোকজন এলে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ঠাসাঠাসি করে বসে কাজ করতে হয়। অনেক সময় ভবনের বাহিরে পরিষদের সামনে বটগাছতলাই হয় বিচারের কার্যালয়।

ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিদ্দিক আকবর বাহাদুর বলেন, 'বর্ষা মৌসুমে এই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে বসার অবস্থা থাকে না। এখানকার শৌচাগারটিও ব্যবহারের অযোগ্য। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা দরকার।'

ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা ও তদবির অব্যাহত আছে, কিন্তু প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।’ 

এব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার সিটিজি সংবাদকে বলেন, “সরকারি কোষাগারে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জায়গার অভাবে নতুন ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি শিলকূপ টাইমবাজার সড়কের পশ্চিম পাশ্বে পরিষদের নামে কিছু জায়গা আছে বলে অবগত হয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরিষদের ভবন করা যায় কিনা দেখা হবে। শিলকূপ ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও উপজেলায় আরও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন রয়েছে বলে তিনি জানান।”