image

লাশ নিয়ে কক্সবাজার থানা পুলিশের টানাটানি

image

এক সন্তানের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে। অন্য সন্তান মৃত্যুর পদযাত্রী হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একদিকে পুত্র শোকে শোকাতুর, অন্যদিকে লাশ নিয়ে পুলিশের টানাটানিতে অসহায় হয়ে পড়েছে একটি পরিবার।

২১ জানুয়ারী সকাল ৮টায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও ইসলামাবাদের খোদাই বাড়ী রাশেদ ফিলিং স্টেশনের পাশে প্রাইভেট কার ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ও অপর ভাই গুরুতর আহত হন।

নিহত সাইফুল ও আহত জাহেদুল কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইসলামপুর ইউনিয়নের জুমনগর এলাকার মো.ইলিয়াছের ছেলে।

নিহত সন্তানের মরদেহ রয়েছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে। 

পিতা মো.ইলিয়াছ চাচ্ছেন এডিএম এর অনুমতি নিয়ে বিনা ময়না তদন্তে লাশ দাফন করতে। আর কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের এসআই আবুল মনছুর চাচ্ছেন ময়না তদন্ত করে লাশ হস্তান্তর করতে। তাহলে কি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর নির্দেশ আর জন্মদাতা পিতার আকুতি কি মুল্যহীন হয়ে পড়েছে !

ইসলামপুর জুমনগর ৫নং ওয়ার্ড সদস্য আবদু শুক্কুর জানান, সাইফুল ইসলাম (২২), জাহেদুল ইসলাম (২০) বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে দুইভাই কর্মস্থল খরুলিয়া বাজারে আসার পথে মহাসড়কের ঈদগাঁও থানাধীন খোদাই বাড়ী রাশেদ ফিলিং স্টেশনের পাশে চকরিয়া অভিমুখী একটি প্রাইভেট কার ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ভাই সাইফুল ইসলাম ও জাহেদুল ইসলাম রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান সাইফুল ইসলাম।

এসময় আহত জাহেদুল ইসলামকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার অবস্থার গুরুতর হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক হাসপাতাল) প্রেরণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, প্রাইভেট কারটি ডুলাহাজারা হাইওয়ে পুলিশ আটক করেছে।

নিহত সাইফুলের বাবা মো. ইলিয়াস জানান, এক ছেলের লাশ হাসপাতাল মর্গে এবং আরেক ছেলে অর্ধমৃত অবস্থায় চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে।

তিনি বলেন, আমার ছেলের মরদেহ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের জন্য কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলাঅতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) এর কাছে আবেদন করেছি। এডিএম মহোদয় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে ওসি কক্সবাজার সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দেন। কিন্ত লাশের সুরতহাল তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদর মডেল থানার এসআই আবুল মনছুর মির্জা চাইছেন লাশের ময়না তদন্ত করতে। এডিএম এর অনুমতি নিয়ে বিনা ময়না তদন্তে ছেলের লাশ দাফনের আবেদনটি রহস্যজনক কারণে পুলিশ শুনছেন না। কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের এসআই আবুল মনছুর ময়না তদন্ত করে লাশ হস্তান্তর করতে চান।

তিনি বলেন, তাহলে কি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর নির্দেশ আর আমি জন্মদাতা পিতা হিসাবে আমার আকুতির কি কোন মুল্য নেই।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল গীয়াস এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য সরকারী মোবাইল নাম্বারে বার বার রিং করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মোবাইলে ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র ঘোষ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এডিএম লিখে দিলেও আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করব এবং বিধি মোতাবেক লাশের ময়না তদন্ত হবে এবং আইনী প্রক্রিয়ায় লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।