image

গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশনঃ সামাজিক উন্নয়নে পথচলা শুরু

image

ছয়টি জনহিতকর কাজ নিয়েই গত ৮ জানুয়ারী থেকে পথচলা শুরু করলো পুরান ঢাকার গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশন। মানুষের ভালবাসা আমরা সব সময় পেয়েছি। মায়ের মৃত্যুর পর সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় আমরা অভিভূত।কথা গুলো বলছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম। মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশনের বিস্তারিত তুলে ধরে বললেন, একটি স্বপ্নের যাত্রা শুরু....এজন্য কিছুটা আপ্লুত প্রতিনিয়ত আম্মু’কে হারানোর শোক বয়ে বেড়াচ্ছিলাম, এসময় আপ্লুত হওয়ার দুই’টা কারণ ছিলো। এক- মানুষের অকৃপন ভালবাসা, দুই- মানুষের জন্য কিছু করা।

বিদেশে পড়াশোনা করায় আম্মুকে হারানোর পরই এই প্রথম দেখার সুযোগ পেলাম নানা শ্রেনী, পেশা, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের পরিবারের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের সত্যিকার ভালবাসা। আমরা অভিভূত! সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই উপলব্ধি করলাম আমার মহিয়সী আম্মু এবং সফল ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক আব্বু’কে ভালবাসার এই মানুষদের মাঝে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় আমার যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবে রূপাদান করা। সকলের সহযোগিতায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের জন্য "একসাথে আমারা পরিবর্তন আনতে পারি" এই স্লোগানে একটি জন-কল্যানমূখী ফাউন্ডেশন গড়ে তুলতেই গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা।আর পথচলা শুরু আম্মু’র চেহলাম অনুষ্ঠানের দিন ৮ জানুয়ারি (২০২১) শুক্রবার থেকে।

সোলায়মান সেলিম বলেন, মদিনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান গুলশান আরা সেলিম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী মোঃ সেলিমের কর্মময় বর্ণাঢ্য জীবনকে অমর করে রাখার প্রত্যয়ে গঠিত হয় গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশন। এটি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক এবং স্বায়ত্বশাসিত সামাজিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি বিশেষ করে নারী, শিশু এবং যুব সম্প্রদায়কে উন্নয়নের মূলধারায় নিয়ে এসে দেশের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অর্থাৎ ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল’ এর অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোই এই ফাউন্ডেশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য।এছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতাতো আছেই।

বর্তমানে দ্রুত বৈশ্বিক পরিবর্তনশীল গতি ও অস্থিরতা এবং পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের কারণে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা অস্থির হয়ে পড়ছে। বাড়ছে নানাবিধ সামাজিক অবক্ষয়-অনাচার, পাপাচার ও দূর্বৃত্তপনা। ফলে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় দিন-দিন বেড়ে চলেছে হত-দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির সংখ্যা। তাদের ভাগ্য উন্নয়নে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু কণ্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কণ্যার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের লক্ষ্যে পৌছাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠনগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাই সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো এগিয়ে আসার প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।  গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশন সেই উদ্দেশ্যকে সফল করতে অংঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের উদ্দেশ্য সামাজিক সচেতনতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সুস্থ্য, সুখী,দারিদ্রমুক্ত সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সামাজিক এ উন্নয়ন কাজে গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশন নিজস্ব প্রচেষ্টার পাশাপাশি সকল সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতাকেও স্বাগত জানাবে। সেই সাথে সরকারের নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়, সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সেতুবন্ধন তৈরী করে সামাজিক সকল কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়া। একই সাথে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগী সংশ্লিষ্ট সকল দেশী বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতা বিনিময় করার মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন সোলায়মান সেলিম।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জয়েন্ট স্টক কোম্পানী এবং সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে নিজস্ব গঠনতন্ত্র এবং একটি স্বাধীন দক্ষ ও নিবেদিত-প্রাণ পরিচালন পর্ষদের মাধ্যমে গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। ফাউন্ডেশনের স্থানীয় কার্যালয় পুরানো ঢাকা’র চকবাজার এবং প্রধান কার্যালয় সেন্ট্রাল রোড, ধানমন্ডিতে অবস্থিত।

গুলশান আরা সেলিম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোঃসেলিম। ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মদিনা গ্রুপের ডিএমডি সোলাইমান সেলিম জানান, মূলত ছয়টি জনহিতকর কাজকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। যার মধ্যে ১.সামাজিক উন্নয়ন, ২.নারীর ক্ষমতায়ন, ৩.দারিদ্র বিমোচন, ৪.সবার জন্য শিক্ষা, ৫.সামাজিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ৬.মাদকমুক্ত সমাজ গঠন। এই ৬টি উন্নয়ন রেখার ঐক্যের সমন্বয়ে মিনারের আদলে ফাউন্ডেশনের লগোটি নির্বাচিত করা হয়েছে। ফাউন্ডেশনের অগ্রযাত্রায় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।