image

আজ, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কর্ণফুলীতে গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীরা

কর্ণফুলী সংবাদদাতা    |    ২৩:৪৯, নভেম্বর ৬, ২০১৮

image

একাধিক নাশকতার অভিযোগে মামলা। পুলিশ বলছে নিয়মিত অভিযান কিংবা ব্লকরেইড। তবে কর্ণফুলীতে পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। 

গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে উপজেলায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাশকতামূলক কার্যকলাপ তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপরাধে ১০টি মামলায় ২৭৮ জনকে আসামী করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। এমনকি অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করা হয় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে। 

তবে এই মামলা গুলোকে ‘গায়েবী’ ও ‘হাস্যকর’ বলে দাবি করেছেন র্কণফুলী উপজেলা বিএনপি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এই দাবি জানিয়ে তারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, এসব গায়েবী মামলায় পুলিশী হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।  আচমকা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

পুলিশের এসব মামলায় পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। 

সংশ্লিষ্ট থানা সুত্রে জানা যায়, নির্বাচনের আগে বিশৃঙ্খলা রোধ, নাশকতার আশংকা ও বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। গতকাল রাতের ব্লক রেইডে কর্ণফুলী থানা ও পতাঙ্গা থানা পুলিশ এক সাথে অভিযান চালিয়েছেন বলে জানা যায়। পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশও তৎপর রয়েছে বলে জানা যায়। 

এ পর্যন্ত কর্ণফুলী থানায় দায়ের করা মামলা সুত্রে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী থানার ৫৮নং মামলায় ২১ জন, ২৪শে সেপ্টেম্বর ৬৪ নং মামলায় ২৪ জন, ২৬ সেপ্টেম্বর ৬৯নং মামলায় ২০ জন, পরের মাসের পহেলা অক্টোবর ১নং মামলায় ১৮ জন, ৮ই অক্টোবর ১২নং মামলায় ৩৮ জন, ১২ই অক্টোবর  ২০নং মামলায়  ৩০জন, ১৬ অক্টোবর ২৪নং মামলায়  ৩৫জন, ১৯শে অক্টোবর ২৯ নং মামলায় ৩০জন, ২১শে অক্টোবর ৩২ নং মামলায়  ৩৮জন, ২২শে অক্টোবর ৩৩নং মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

একের পর এক মামলা হওয়ায় বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশের অভিযানও অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগে নেতারা জানান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ভয়ে বিএনপি জামাতের কয়েকশত নেতাকর্মী উপজেলার বাজারে ঘাটেও আসছেনা বলে স্থানীয়রা জানান।

কর্ণফুলী উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক পদে থাকা সিনিয়র এক নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, ‘সরকারি দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচন থেকে বিএনপিকে দূরে রাখতে নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও বাসা-বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আতংক সৃষ্টি করছে। তাদের এ চেষ্টা বুমেরাং হবে।’

অপরদিকে  কর্ণফুলী থানায় দায়ের করা একাধিক মামলায় লক্ষ্য করা যায়, বেশির ভাগ মামলায় ঘুরে ফিরে একই আসামী। কারো নামে ৫টা আবার কারো নামে ৪/৩টা করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আর যে সমস্ত এলাকায় কাঁেচর বোতল ভর্তি পেট্টোল বোমা সদৃশ বিস্ফোরক দ্রব্য ও ককটলে পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এখনো পর্যন্ত মিডিয়ায় এধরনের কোন ঘটনা প্রকাশ পায়নি বলে জানান স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

মামলার এজাহার সুত্রে, সিডিএ আবাসিক, শাহাদত নগর চিতা খোলা কেইপিজেড, শাহমীরপুর পাহাড়ের উপর, ইছানগর টিকে গ্রুপের নির্জন খোলামাঠে, ইছানগর নদী পাড়, চরলক্ষ্যার খাল পাড়, শিকলবাহার কালারপোল, বিএফডিসি আবাসিক ভবনের পাশের সেগুন বাগানে অনাকাংখিত ঘটনার উল্লেখ দেখা হলেও এসব এলাকা জনমানবশুন্য বলে আশপাশের কেহ এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানাতে পারেন নি।

এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, উপজেলার কোথাও এধরনের কোনো ঘটনা তারা ঘটায়নি । আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে ‘গায়েবী ও ‘হাস্যকর’ মামলা গুলো দায়ের করেছেন।’

এসব মামলায় উপজেলা জুড়ে রাতের আঁধারে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশী চালাচ্ছে পুলিশ। হয়রানির ভয়ে নেতাকর্মী ঘরছাড়া হয়ে গেছে। এই মামলার নিন্দা জানিয়েছেন শীর্ষ নেতারা।

এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী এলাকার ভোক্তভোগি বিএনপি নেতা এম মঈন উদ্দীন বলেন, ‘নাশকতার  অভিযোগে একের পর এক মামলা হচ্ছে কিন্তু কর্ণফুলীতে ককটেল বোমার কোন খবর মিডিয়ায় আসছে না। ঢাকায় দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনে সিপিপির ট্রেনিং এ থাকলেও কর্ণফুলী থানায় আমার নামে একে একে ৫টা মামলা হল। যা সত্যিই বড় দুঃখজনক।’

তিনি আরো বলেন, যেসব মামলা করা হচ্ছে সেসব মামলায় ঘটনার কোনো অস্তিত্বই নেই। আমাদের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। কেহ বাসা বাড়িতে থাকতে পারছেন না।’

অপরদিকে সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দরা জানান, এধরনের মামলায় পুলিশের ইমেজ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ পুলিশের প্রতি বিশ্বাস হারাবে।’

বিএনপির অনেকে বলেছে, ‘কর্ণফুলীতে তারা কোন আন্দোলন সংগ্রাম কর্মসূচি পালন করিনি। সুতরাং নাশকতার ঘটনায় যে মামলা গুলো হচ্ছে তা রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে নিয়ে ভয়ে আছে। তাই একদিকে সংলাপ অন্যদিকে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী ও হাস্যকর মামলা দায়ের করছে। কর্ণফুলীর মামলাগুলো  ষড়যন্ত্রের অংশ।’

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ তথা সুুুনির্দিষ্ট তথ্যর ভিত্তিতে মামলা গুলো হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ( এডিসি) আরেফিন জুয়েল বলেন,‘যাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতেই মামলা গুলো করছে আর বিস্তারিত জানতে চাইলে পরে ফোন করার কথা জানান তিনি।’



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

২৩:৫৭, জুন ১৪, ২০২২

মিরসরাইয়ে ট্রাক চাপায় রিকশা নিহত ২, আহত ২ 


Los Angeles

২০:০৫, জুন ১৩, ২০২২

চন্দনাইশে ইয়াবা ও চোলাই মদসহ আটক ২


Los Angeles

২৩:৩৩, জুন ১১, ২০২২

ইয়াবা পাচারকালে চন্দনাইশে আটক ১


image
image