image

আজ, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নির্বাচন,নববর্ষকে সামনে রেখে তৎপর হচ্ছে উখিয়া টেকনাফের ইয়াবা সিন্ডিকেট

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা    |    ২০:১৭, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮

image

ছবি-প্রতীকি

একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ইংরেজী নব বর্ষকে সামনে রেখে আইনপয়োগকারী সংস্থার লোকজন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করবেন। এসময় ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বড় ধরনের মাধকের চালান পাচার করতে তৎপর হয়ে উঠছে উখিয়া টেকনাফ সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক সংঘবদ্ধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেট। এমনটি আশংকা করছেন মাদক প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্ধুরা। বিজিবি কর্তৃপক্ষ জানালেন, মাদক দ্রব্য ও চোরা চালান প্রতিরোধে সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত রক্ষী বিজিবি যতাযত দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে।

উখিয়ার সীমান্ত এলাকা পূর্বাঞ্চলীয় জনপদে প্রতিষ্টিত মাদক ও চোরা চালান প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এড. এটি এম রশিদ আহম্মদ জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু, ঘুমধুম উখিয়া সীমান্তের রেজু আমতলী, ডেইলপাড়া করইবনিয়া, বালুখালী রহমতেরবিল, আঞ্জুমান পাড়া, ধামনখালী ও বটতলী মাদক ও চোরা চালানের টানিং পয়েন্ট হিসাবে পরিচিত। এসব পথে নিয়মিত চোরাই পন্য ও ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে। উক্ত ইয়াবা পাচারের সাথে প্রত্যক্ষ ওপরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছে, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের দোছড়ি গ্রামের হাজী আলী আহম্মদের ছেলে শীর্ষ ইয়াবাকারবারী আন্ডার গ্রাউন্ডে থাকা ইয়াবা জগতের কিং ও উখিয়া মসজিদ মার্কেটস্থ বিছমিল্লাহ টেলিকম সেন্টারের মালিক মাহমুদুল হক সিন্ডিকেটের দখলে বলে জানা গেছে। তার সিন্ডিকেটের অন্যান্যরা হচ্ছে, টিএন্ডটি লম্বাঘোনা এলাকার ইয়াবা সুন্দরী হিসাবে খ্যাত ম্যাডাম বেবী, থাইংখালী হাকিম পাড়া গ্রামের ইলিয়াছের ছেলে সাহাব উদ্দিন, ঘোনার পাড়া গ্রামের নুইজ্জ্যার ছেলে গোরা মিয়া,ঘিলাতলী গ্রামের ফজল আহম্মদ এর ছেলে শফি আলম,প্রকাশ ইয়াবা শফি,যে এক সময় মাইক্রোর হেলপার ছিল,উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা আগমনের সাথে সাথে সেও মরণ নেশা ইয়াবার সাথে জড়িয় পড়ে।প্রথমে ডিবি সেজে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ডিগ্রী কলেজ এলাকায় ইয়াবা ছিনতাই করে।পরে ইয়াবা ব্যবসা করে বর্তমানে তার রয়েছে গাড়ি বাড়ি দোকানসহ অঢেল সম্পদের মালিক।তার বিরোদ্ধে উখিয়া থানায় দুটি ইয়াবার মামলা রয়েছে।  সম্প্রতি তার ৫২ হাজার ইয়াবা সোনার পাড়া এলাকার শীর্ষ ইয়াবাকারবারী জাগির হোসেন মাষ্টারের ছেলে লুৎফুর রহমান প্রকাশ লুইত্যা লুটপাট করেছে বলেও জানা গেছে, শুধু তাই নয়, তার ইয়াবার কালো টাকার পাহাড় দিয়ে থাইংখালী ষ্টেশনের পাশে নির্মান করে যাচ্ছে আলিশান ইমারত। কিন্তু দেখার কেউ নেই। রহমতেরবিল গ্রামের আহম্মইদ্যার ছেলে শাহজান প্রকাশ ইয়াবা শাহজান, পন্ডিত পাড়া গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে হুমায়ুন প্রকাশ ইয়াবা হুমায়ুন, মৃত কাদের বক্কুর ছেলে জয়নাল উদ্দিন ভুট্রো প্রকাশ ইয়াবা ভুট্রো, রহমতেরবিল এলাকার জালাল আহম্মদের ছেলে আনোয়ার প্রকাশ ইয়াবা আনোয়ার, পালংখালীর ইয়াবা রাসেল, জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইল পাড়া গ্রামের শীর্ষ ইয়াবা ডন ফজল কাদের, কুতুপালং এলাকার হাশেম, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লাদেন, সোনার পাড়া বাজার এলাকার বদি আলম মাষ্টারের ছেলে ছমি উদ্দিন প্রকাশ ইয়াবা ছমি উদ্দিন, সোনাইছড়ি গ্রামের মঞ্জুর আলম, বালুখালী এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে জাহাঙ্গীর প্রকাশ ইয়াবা জাহাঙ্গীর, রত্লাপালং ইউনিয়নের রুহুল্লার ডেবা গ্রামের বাছা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর প্রকাশ ইয়াবা জাহাঙ্গীর, উখিয়ার টিএন্ডটি লম্বাঘোনা গ্রামের মৃত ফকির আহম্মদের ছেলে মাহমুদুল করিম কোখা, উখিয়ার জাদিমোরা গ্রামের মোঃ হোছনের ছেলে কবির আহম্মদ প্রকাশ ইয়াবা কবির, ডেইল পাড়া গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে আলী আকবর প্রকাশ লুডা আকবর, রহমতেরবিল গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন,জাগির হোছনের ছেলে জামাল উদ্দিন, রাজাপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া গ্রামের ছব্বির আহম্মদের ছেলে জসিম উদ্দিন, কুতুপালং গ্রামের রশিদ আহম্মদের ছেলে আলী আকবর, মরিচ্যার ইয়াবা আলমগীর, বালুখালী এলাকার নুরুল আলম ড্রাইভার, রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল গ্রামের মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে নুরুল হাকিম, থাইংখালী জামতলী গ্রামের ইয়াবা রকিম, রাজাপালং ইউনিয়নের হিজোলীয়া এলাকার সিএনজি মোকতারসহ শীর্ষরা বিভিন্ন স্থানে শতাধিক গডফাদারের নেতৃত্বে পুরো উখিয়ায় অন্তত ২০টি সিন্ডিকেট মোটা দাগের ইয়াবা লেনদেন ও পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সচেতন অভিভাবকদের অভিমত, বর্তমান ভয়াবহ জঙ্গী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে যেসব কিশোর, যুবক জড়িয়ে পড়েছে, তাদের একটি অংশ মাদকাসক্ত ও মাদক পাচারের সাথে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মতে, কারা ইয়াবা পাচার করে বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছে, তাদের সম্পর্কে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সমাজের ৃস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বা নজরদারির দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে, আগামী প্রজন্ম খুবই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে।

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন মাঝে মধ্যে ছোটখাট ইয়াবার চালান উদ্ধার ও পাচারকারীকে আটক করলেও রাঘব বোয়াল সিন্ডিকেট থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন ও ইংরেজী নব বর্ষকে সামনে রেখে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ব্যস্ততার সুযোগে পাচারকারী সিন্ডিকেট বড় ধরনের মাদকের চালান সড়ক পথে পাচার করার আশংকা রয়েছে। এ জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে ওই নেতা দাবী করেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার জলশীমা দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন ধরনের নৌযান গুলোকে নিয়ন্ত্রনের আওতায় আনতে হবে। তা ছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ঘুমধুম সহ নাফ নদীর উপর বিজিবির শক্ত নজরধারী প্রয়োজন রয়েছে। এর পরেও জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নাগরিকদের মাদকের বিরুদ্ধে অবসআথান নিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের সহযোগিতা করা না হলে ইয়াবা পাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।

টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের সাথে বন্ধুকযুদ্ধ ও ইয়াবাকারবারীদের লেনদেনের বিরোধ নিয়ে পরস্পরের মধ্যে গুলি বিনিময়ে এ পর্যন্ত ১৮ জন ইয়াবাকারবারী মারা গেছে। এসময় আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে প্রায় ১০১ জন ইয়াবাকারবারী। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ইয়াবা। তার পরেও মাছ ধরার নৌকা করে ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে। তিনি বলেন, মাদক পাচার প্রতিরোধে স্থানীয়রা প্রতিবাদী না হলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে তা নিয়ন্ত্রন করা দূরহ ব্যাপার।

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে গত মে মাস থেকে সারা দেশ ব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসময় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্ট গার্ডের সদস্যদের দৃশ্যমান অভিযানের প্রেক্ষিতে ইয়াবা পাচার অনেকটা সহনিয় পর্যায়ে চলে আসার কথা জানিয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, এ পর্যন্ত ৪৩ টি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে রুজু করা মামলায় ৬৪ জনকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে, ২লাখ ৬৯ হাজার ৮শতাধিক ইয়াবা।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও ইংরেজী নব বর্ষকে সামনে রেখে সীমান্ত রক্ষীসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে বড় ধরনের মাদকের চালান পাচার হওয়ার আশংখা রয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মঞ্জুরুল আহসান খান জানান, তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরেও সীমান্ত দিয়ে যাতে মাদক ও চোরা চালান পাচার হয়ে আসতে না পারে সে জন্য সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সতর্কতার সহিত দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে। টেকনাফ ব্যাটলিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, সীমান্তে বিজিবির অবস্থান যতাযত বৃদ্ধমান অবস্থান থাকবে। শত ব্যস্ততার পরেও যাতে ইয়াবা ও চোরা চালান পাচার হয়ে আসতে না পারে সে জন্য সীমান্তে বিজিবিকে সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

০১:১৭, মে ১৪, ২০২২

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকায় শেষ হাসি যাঁদের


Los Angeles

০০:৩০, মে ১৪, ২০২২

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া


Los Angeles

১৬:২৬, অক্টোবর ১৬, ২০২১

বীর নিবাস পাচ্ছেন বাঁশখালীর ১০ মুক্তিযোদ্ধা


Los Angeles

২০:৩৩, অক্টোবর ১৩, ২০২১

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে বাঁশখালীর এক দরিদ্র পরিবার


Los Angeles

১১:২৪, অক্টোবর ১০, ২০২১

সীতাকুন্ড ইউপি নির্বাচন : নৌকা দাবি ৪৩জনের


Los Angeles

২০:১৯, অক্টোবর ৮, ২০২১

আবিষ্কারের বিস্ময় বালক বাঁশখালীর আশির, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


Los Angeles

২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী


image
image