শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ১৫:২০, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল, বাংলা ১৩৭৮ সালের ১৪ই বৈশাখ পাক হানাদার বাহিনী তৎকালিন পটিয়া (বর্তমানে চন্দনাইশ) থানার দোহাজারী'র জামিজুরী গ্রামে নারকীয় তান্ডবলীলা চালিয়ে ১৩ জন নিরপরাধ নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এতে শহীদ হন ডাঃ বগলা প্রসাদ ভট্টাচার্য, কবিরাজ তারাচরণ ভট্টাচার্য, মাষ্টার প্রফুল্ল রঞ্জন ভট্টাচার্য, মাষ্টার মিলন ভট্টাচার্য, বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য, রেনু বালা ভট্টাচার্য, ডাঃ করুনা কুমার চৌধুরী, হরি রঞ্জন মজুমদার, মহেন্দ্র সেন, নগেদ্র ধুপী, রমনী দাশ, অমর চৌধুরী ও মনীদ্র দাশ। স্থানীয় এলাকাবাসী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশগুলো একত্রিত করে একটি গর্তে সমাধিস্থ করে। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা সুভাস মজুমদার (নলুুুয়া) ও মুক্তিযোদ্ধা বিমল দাশ (আমিরাবাদ) এর দেহাবশেষও এখানে সমাধিস্থ করা হয়। স্বাধীনতার পর স্থানীয় ক'জন প্রগতিশীল তরুণের অক্লান্ত পরিশ্রমে সমাধিস্থলে গড়ে তোলা হয় বধ্যভূমি। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, দীর্ঘদিন অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকার পর ২০০৭ সালের ২৬ মার্চ তৎকালীন চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ রহিম জামিজুরী বধ্যভূমির ফলক উম্মোচন করেন। এরপর ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমি স্থলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে দেয়া হয়। ১৫ ডিসেম্বর (শনিবার) জামিজুরী বধ্যভূমি পরিদর্শনে গিয়ে কথা হয় শহীদ ডাঃ বগলা প্রসাদ ভট্টাচার্যের ছেলে চাগাচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (অবঃ) প্রধান শিক্ষক সুশীল কান্তি ভট্টাচার্য'র সাথে। তিনি বলেন, "স্বাধীনতার পর এতগুলোবছর কেটে গেলেও ১৯৭১সালের ২৮ এপ্রিল লোমহর্ষক হত্যাকান্ডে নিহতদের পরিবারগুলো আজও পায়নি শহীদ পরিবারের মর্যাদা। পায়নি সরকারি-বেসরকারি কোন সাহায্য কিংবা অনুদান।" জামিজুরী শহীদ স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে স্মৃতিসৌধ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় বলেও জানান তিনি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জানেনা জামিজুরীতে একটি বধ্যভূমি আছে। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে কার্যকর ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন অগ্রজদের।"
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর (রবিবার) প্রথম প্রহরে জামিজুরী বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ ডাঃ বগলা প্রসাদ ভট্টাচার্য'র ছেলে বাবু সুশীল কান্তি ভট্টাচার্য, ৬নং ওয়ার্ড আ.লীগ সভাপতি বাবু মিলন ধর, সাধারণ সম্পাদক বাবু তপন দাশ, আ.লীগ নেতা আহমদ মিঞা, শিক্ষক বাবু রূপস চক্রবর্তী, গ্রাম ডাক্তার সুজন কান্তি ভট্টাচার্য সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
Developed By Muktodhara Technology Limited