শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ | ১৬:৩৯, আগস্ট ১৯, ২০১৮
আগামী বুধবার (২২ আগষ্ট) পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। আর মাত্র দু'দিন বাদেই ঈদ। ঈদ সামনে রেখে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক উপ-শহরখ্যাত দোহাজারী পৌরসভার কামারশালাগুলোতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারশিল্পীরা। টুং টাং শব্দে মুখোর হয়ে উঠেছে কামারশালাগুলো। দম ফেলার সময়টুকুও যেন নেই কামারশিল্পীদের। কামারশালাগুলো পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন কোনটিতে তিন থেকে চারজন পর্যন্ত কর্মচারী বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দা, বটি, ছুরি, চাপাতী তৈরীতে। কেউবা আবার ব্যস্ত রয়েছেন এসব ধারালো জিনিসপত্রে শাঁন দিতে।
কামারশালা ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতারা। ক্রেতারা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী দা, বটি, পশু জবাইয়ের ছুরি, মাংস বানানোর চাপাতি কিনছেন। কেউ কেউ পুরনোগুলোতে শাঁন দিয়ে নিচ্ছেন। কামরশালাগুলোতে বছরের অন্য সময়ে কাজ কম থাকলেও কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এসময়ে কামারশিল্পীদের বাড়তি উপর্জনের একটা বড় সুযোগ তৈরী হয়। তাই এসময়টাতে তাঁরা দিন রাত কাজ করে যান। এই ব্যস্ততা চলবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত। রবিবার (১৯ আগষ্ট) দোহাজারী পৌরসভা সদরের বিমল বিশ্বাসের কামারশালায় গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের প্রচন্ড ভীড়। কেউ এসেছেন পুরনো দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি শাঁন দিতে। আবার কেউ এসেছেন কয়েকদিন আগে বানাতে দিয়ে যাওয়া দা, বটি, ছুরি, চাপাতি নিয়ে যেতে। দম ফেলার সময় নেই, তবুও কাজের ফাঁকে বিমল বিশ্বাস জানান, "অনেক কাজ জমে আছে, সঠিক সময়ে ডেলিভারী দিতে বাড়তি কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি। কর্মচারীর বেতন বেশী দিতে হচ্ছে। কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেড়েছে।
তিনি জানান, পুরনো জিনিসপত্র শাঁন দিতে ধরনভেদে ৩০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত নেন। আর ধরনভেদে একেকটি দা ২শ' থেকে ৩শ' টাকা, বটি ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, ছোট ছুরি ৭০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, চাপাতি ৩৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা। তার কামারশালায় কিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা যায়, কয়লার আগুনের তাপে ছোট্ট কামারশালার ভেতরটায় ভ্যাপসা গরম। কয়লার গণগণে আগুনে রক্তিম আভা ছড়ানো লোহার উপর পড়ছে হাতুরির আঘাত। আঘাতের পর আঘাতে সেই লোহাকে রূপ দেয়া হচ্ছে দা, বটি, ছুরি, চাপাতি সহ নানা ধরনের ধারালো জিনিসপত্রে। একজন হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে চলছেন গরম লোহার দা, বটি, ছুরি কিংবা চাপাতি। অন্যজন বায়ু সঞ্চালনের 'ধামা' টেনে চলছেন। বাইরে একজন শাঁন দিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। প্রত্যেকের শরীর থেকে দরদর করে ঘাম ঝরলেও মুখে এক চিলতে হাসি ঝুলে আছে। বিমল বিশ্বাস জানান, ঈদকে সামনে রেখে সব খরচ মিটিয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয়ের টার্গেট রয়েছে। ব্যস্ততা যত বাড়বে, আয়ও তত বেশি হবে বলে জানান তিনি।
Developed By Muktodhara Technology Limited