শিরোনাম
মো.কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা | ১৯:৩৮, ফেব্রুয়ারী ২, ২০১৯
কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যা অনুপাতে পুলিশের লোকবল সংকটের সুযোগে ক্যাম্পগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ক্যাম্প পালানো রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে সীমিত সংখ্যক চেকপোস্ট থাকলেও তা দিয়ে রোহিঙ্গাদের কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। এসব চেক পোস্টে দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিমত রোহিঙ্গাদের ভাষাগত দিক, চালছলন, পোশাক পরিচ্ছদ, আচার আচরণ স্থানীয়দের সাথে মিল থাকার কারণে রোহিঙ্গারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে ক্যাম্প ত্যাগ করছে।
শনিবার সকালে প্যান্ট শার্ট পরিহিত কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ১০/১২ জনের একদল রোহিঙ্গা পায়ে হেটে উখিয়া স্টেশন অতিক্রম করছিল। সন্দেহজনকভাবে তাদের ক্যামরাবন্দী করতেই সেখানে জড়ো হয় শত শত স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এসব রোহিঙ্গাদের সাথে বলে জানা যায়, তারা চলতি বছরে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হোয়াইক্যং উনছিপ্রাং সীমান্ত দিয়ে এপাড়ে এসেছে। সেখান থেকে জনপ্রতি ২০০ টাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে কুতুপালং ক্যাম্পে আগে থেকে আশ্রয় নেয়া স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করেছে একমাসেরও বেশি সময়।
এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে জানে আলম (১৪), হামিদুল্লাহ (২০), মোহাম্মদ নুর (১৫), শফি আলম (১৬), মোহাম্মদ ইয়াছিন (১৭), জমির উদ্দিন (৩৫), সাইফুল ইসলাম (১৬) ও মো. শফি (১৫) থানা পুলিশের হাতে তুলে না দেয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, তারা প্রাণ বাঁচাতে অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছেন। তাদের নিজ বাড়ী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডং লাওয়াদক প্রাংন্সী গ্রামে।
তারা জানায়, গত ৪ জানুয়ারি সেখানকার বিদ্রোহী রাখাইন সম্প্রদায় সেনা ক্যাম্পে হামলা চালানোর জের ধরে সেনাবাহিনী ও বিজিপি সদস্যরা রোহিঙ্গাদের গণহারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে যুবক শ্রেণির কেউ তাদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না। তাই প্রাণ বাঁচাতে তারা এখানে পালিয়ে এসেছেন। এসব রোহিঙ্গারা যুবকেরা আরো জানান, তাদের আত্মীয় স্বজন চট্টগ্রামের হালিশহর, পাথরঘাটা, বাকলিয়া এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছে দীর্ঘদিন থেকে। তারা তাদের বাড়ী ঘরে আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন শিল্প কারখানা ও গার্মেন্টসে চাকরির আশা করে কুতুপালং থেকে গ্রামীণ পথে উখিয়া এসে গাড়ীতে উঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
শুক্রবার উখিয়া থানা পুলিশ মরিচ্যা এলাকায় যানবাহনে তল্লাশি চালিয়ে ১৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে কুতুপালং ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছে। একই দিনে বিজিবি সদস্যরা তিনজন রোহিঙ্গাকে যাত্রীবাহী গাড়ী থেকে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার উপজেলা প্রশাসন ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে পালাতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্প ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের সর্তক করে দেয়া হয়েছে।
Developed By Muktodhara Technology Limited