শিরোনাম
কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা | ২৩:২৮, ফেব্রুয়ারী ৪, ২০১৯
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশের সব ধরণের কোচিং সেন্টার এক মাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও তা মানছে না সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষক। এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই সরকার ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোচিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং ২৪ জানুয়ারী ” শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২” গেজেট প্রকাশ করে। যাতে স্পষ্ট বলা হয়, কোন শিক্ষক নিজ বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত শ্রেণি কার্যক্রম ব্যতিত কোন কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। প্রাইভেট পড়ালে বা কোচিং করালে ওই শিক্ষকের এমপিও স্থায়ীভাবে বন্ধসহ বরখাস্তের শাস্তির বিধান রয়েছে।
গেজেটে আরো বলা হয়, অতিরিক্ত শ্রেণি কার্যক্রমও নিজ বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে করতে হবে। তাও বিদ্যালয়ের নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরে। কিন্তু উপজেলার কিছু কোচিংবাজ শিক্ষক সরকারি এই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে এখনো পুরোদমে দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের অবৈধ কোচিং বাণিজ্য।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনের রুম ভাড়া নিয়ে কোচিং চালাচ্ছেন শিক্ষকরা। এতে নিরুৎসাহিত করার পরিবর্তে এসব শিক্ষকদের অভয় বাণি শুনাচ্ছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা । ফলে যেমনিভাবে দরিদ্র অভিভাবকেরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন তেমনি বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ব্যাচে সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত পড়াচ্ছেন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে কয়েকজন প্রাইমারির শিক্ষকও রয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে এসব কোচিংবাজ শিক্ষকরা দাবি করেছেন যে তারা কোচিং করান না, মাত্র ৪৫ মিনিটের ব্যাচ পড়ান।
অনেকেই উল্লেখ্য করেন যে, উপজেলা সদরে অবস্থিত প্রায় সকল কোচিং সেন্টার/ভাড়াবাসায় ভোরে আসা শিক্ষার্থীদের কোলাহলে প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙ্গে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবকদের অভিযোগ, এসব কোচিংবাজ শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রমে ভালোভাবে পাঠদান না করে কোচিং সেন্টারে হ্যান্ডনোট দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ক্লাসে কোচিং এর পড়ার উৎসাহ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার আশায় ছাত্র/ছাত্রীদের নিজের গড়া প্রাইভেট বা কোচিং সেন্টারে পড়তে বাধ্য করছে। না পড়লে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে ফেল করানোর হুমকি দিচ্ছেন। যা মেনে নেয়া সভ্য সমাজে বেমানান।
এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে ব্যহত হবে শিক্ষা কার্যক্রম অন্যদিকে সরকারের নেয়া যুক্তিক পদক্ষেপগুলো কোচিংবাজ শিক্ষকদের হাতে অংকুরে বিনষ্ট হবে। কোচিং ও প্রাইভেটমুখী হবে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার সচেতন অভিভাবকদের প্রত্যাশা, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সজাগ হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিক্ষকদের প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্যের জিম্মি দশায় থাকা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ফিরে পাবে প্রকৃত শিক্ষার সুফল এবং গড়ে ওঠবে সুনাগরিক।
এব্যাপারে, উপজেলা শিক্ষা অফিসারা মোঃ রজব আলী বলেন, ” শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২” বাস্তবায়নে দেশব্যাপি কাজ চলছে। কুতুবদিয়া উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশা করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা প্রকাশিত গেজেটের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে প্রাইভেট/কোচিং বাণিজ্য থেকে আপনা-আপনি সরে আসবেন।
Developed By Muktodhara Technology Limited