শিরোনাম
কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা | ২৩:৪৭, মার্চ ৯, ২০১৯
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের অস্থায়ী শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে সরকারের পাশাপাশি ১০৫টি এনজিও সংস্থা। বেশির ভাগ এনজিও সংস্থা আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ক্ষেত্রে দায়িত্বরত কতিপয় এনজিও’র নিম্নমানের সামগ্রী বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ করে কিবরিয়া ট্রেডার্স,শামসুল হক ট্রেডার্স,প্রধান ট্রেডার্স, সমতা ট্রেডার্স,হক ট্রেডার্স ও ছয় তারা মিলস হতে পাইকারি নিম্নমানের চালগুলো ক্রয় করে থাকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি(WFP) সংস্থা। যা বিতরণ করা হচ্ছে WFP RETAIL SHOP এ। রোহিঙ্গাদের গুণগত মানসম্পন্ন পুরাতন চাল দেওয়ার কথা যার বস্তা প্রতি মুল্য ১৭০০-১৮০০ টাকা হলেও।সে জায়গায় ট্রেডার্স মালিকেরা WFP সংস্থার কর্তাদের যোগসাজশে রোহিঙ্গাদের জন্য নিম্নমানের নতুন স্বর্ণাপাত চাল সরবরাহ করে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে যার বস্তা প্রতি মুল্য ১২০০-১৪০০ টাকা।প্রতিমাসে ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য ৬ থেকে ৭ হাজার মে.টন চালের চাহিদা রয়েছে। অার এ সুবাদে ট্রেডার্স মালিকেরা নিম্নমানের চাল সরবরাহ করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
গত বছর কক্সবাজার সদর উপজেলা সংলগ্ন খাদ্য গুদামে রোহিঙ্গাদের জন্য এক ট্রেডার্স মালিক ডব্লিউএফপির কাছে ভেজাল নিম্নমানের চাল সরবরাহকালে ৪শ বস্তার একটি ট্রাক জব্দ করেছে সদর ইউএনও মো. নোমান হোসেন।
সম্প্রতি উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ক্যাম্পে ২/৩টি করে রোহিঙ্গাদের খাদ্যপণ্য সংগ্রহের জন্য স্টোর বসিয়েছে ট্রেডার্স মালিকেরা। সেখানে বিক্রি হচ্ছে রোহিঙ্গাদের এনজিও প্রদত্ত বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী। এ সুযোগে খাদ্যপণ্যের দোকানগুলো এসব কারসাজি চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে!
এ ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, WFP থেকে কিছুদিন ভাল চাল দিলেও বর্তমানে নিম্নমানের চাল দিয়ে অামাদের চোখে ধুলো দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা।
বালুখালী ক্যাম্প ৮ এর B-১৬র বাসিন্দা নুরুল অালমসহ একাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক প্রতিবেদককে জানান, যেসব পণ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বিশেষ করে চাল ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার কারণে বিক্রি করতে চাইলেও ওইসব পণ্য ক্রেতারা কিনতে চায় না।
স্থানীয় ক্রেতা বশির অালম জানান, রোহিঙ্গাদের যেসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে ওগুলোর অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের।
সরেজমিন উখিয়ার কুতুপালং,বালুখালী ও টেকনাফের লেদা,মুছুনি,জাদিমোরার রোহিঙ্গারা বলেন, তাদের দেয়া চাল খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় নামমাত্র দামে স্থানীয়দের বিক্রি করে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এমএসএফ ফিল্ড হসপিটালে কর্মরত ডাঃ এনামুল হক বলেন দাতা সংস্থাগুলো ট্রেডার্স মালিকদের সঠিক দাম দিলেও তারা বেশী লাভের জন্য রোহিঙ্গাদের নিম্নমানের চাল সরবরাহ করছে। যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Developed By Muktodhara Technology Limited