শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ০১:১৮, আগস্ট ২৭, ২০১৮
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী পৌরসভা অংশে মহসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় মহাদুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা। বড় বড় গর্তের কারনে মহাসড়কের দোহাজারী পৌরসভা অংশটি গ্রাম্য সড়কে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, দোহাজারী ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত অংশটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। মুষলধারে বৃষ্টি হলে এঅংশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকার ফলে মনে হয় এটি মহাসড়ক নয় যেন ছোট-খাটো জলাশয়। ফলে কোন কোন স্থানে সড়ক চেনা মুশকিল হয়ে যায় চালকদের। একারনে মাঝে মাঝে দূর্ঘটনাও ঘটে। তাছাড়া এস্থানে এসে যানবাহন ধীর গতিতে চলার ফলে দোহাজারীতে যানজট লেগেই থাকে।
ব্যাংক এশিয়া থেকে হাজারী শপিং সেন্টার পর্যন্ত মহাসড়কের কোথাও উঠে গেছে পিচ, কোথাও কার্পেটিং উঠে গিয়ে পাথর সরে যাওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টি না থাকলেও সড়ক হয়ে থাকে কর্দমাক্ত। মহাসড়কের এমন বেহাল দশার কারনে যানবাহন চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে যাত্রীরা যেমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তেমনি চালকেরাও হচ্ছেন নাস্তানাবুদ। এছাড়া সড়কের দুই পাশে জমে থাকা বৃষ্টির পানির পাশাপাশি রয়েছে কাদা।
যানবাহন চলার সময় সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা দোহাজারী জামিজুরী আঃ রহমান উচ্চ বিদ্যালয় ও দোহাজারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং পথচারীদের গায়ে প্রায় সময় কাদাযুক্ত ময়লা পানি ছিটকে পড়ে। বেহাল সড়কে যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দীর্ঘদীনে স্থায়ী সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কয়েকদিন পর পর ইট দিয়ে বড় বড় গর্ত ভরাট করে মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এসব কাজের কোন স্থায়ীত্ব হয়না। ফলে পুনরায় গর্ত সৃষ্টি হয়। সিটি সেন্টারের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন বলেন বিগত ৪ জুলাই বেসিক ব্যাংকের সামনের বড় গর্তে একটি মোটরসাইকেল পড়ে গিয়ে চালক ও আরোহী সামান্য আহত হন। পিছনে গাড়ী না থাকায় তারা বড় ধরনের দূর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছেন। জনকল্যাণ টাওয়ারের ব্যবসায়ী শ্যামল নাথ বলেন, গ্রীন হাসপাতাল থেকে বেসিক ব্যাংক পর্যন্ত সড়ক যে কতটা খারাপ তা ভাষায় বোঝানো যাবেনা। বড় বড় গর্তের কারনে পিকআপ ও রিক্সাচালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় বেশি। প্রায়ই বেসিক ব্যাংকের সামনে রিক্সা উল্টে যাত্রী আহতের ঘটনা ঘটে। দোহাজারী পৌরসভার রক্তদান সংশ্লিষ্ট একমাত্র অনলাইন ভিত্তিক স্বেচ্চাসেবী সংগঠন 'দোহাজারী ব্লাড ব্যাংক'র উদ্যোগে কয়কটি বড় গর্ত স্বেচ্ছাশ্রমে ভরাট করা হয়েছিল। সংগঠনটির এডমিন এস.এম ওয়াহিদ রনি বলেন, আমাদের ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। এতগুলো গর্ত ভরাট করার মত আর্থিক স্বামর্থ্য আমাদের নেই।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিস থেকে নিকটবর্তী স্থানে মহাসড়কের এমন বেহাল দশা সত্যিই দুঃখজনক। অবিলম্বে মহাসড়কের দোহাজারী পৌরসভা অংশে টেকসই স্থায়ী সংস্কারের দাবী জানান তারা।
এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী মোঃ তোফায়েল মিয়া বলেন, "সংস্কার চলমান আছে। মূল ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়া আছে। তারা হয়তো অক্টোবরে কাজ শুরু করবে। অক্টোবরের মাঝি মাঝি সময়ে কাজ শুরু হবে। পদুয়া থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত কাজ শেষ হলে দোহাজারীতে শুরু হবে।" ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এটা সাময়িক সংস্কার। মোটামুটি গর্ত যাতে কমিয়ে রাখতে পারি। যানবাহন যাতে স্বস্তিতে চলতে পারে সেজন্যই ইট বিছিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে।" আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দোহাজারী পৌরসভা অংশে জরুরী ভিত্তিতে বড় বড় গর্তগুলো ভরাট করা হবে বলেও জানান তিনি।
Developed By Muktodhara Technology Limited