শিরোনাম
নূর হোসেন শাহেদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | ১৬:৩৫, আগস্ট ৩০, ২০১৮
ভোরের কাঁচা ঘুম ভাঙিয়ে আপনাকে যদি একটি প্রশ্ন করি ঘুমঘোর কাটিয়ে উত্তরটা কি দিতে পারবেন? প্রশ্নটা হলো, আপনার এলাকার কবরবাসীদের যদি আরো একবার কবর ফুঁড়ে বেরিয়ে এসে যার যার ঘরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়, তবে তারা কি করতো? মা-বাবা, ঘরকন্নার দীর্ঘ বিরহে কাতর হয়ে দ্বিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্যতায় হন্তদন্ত ছুটতো বাড়ি-ঘরে, ফ্ল্যাটের খুপরিতে?
বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলে আপনার উত্তর যদি হয়, 'তা নয়তো কি?' প্রত্যুত্তরে বলবো, 'হয়তো তা কিছুতেই না। বরং প্রাণান্ত ছুটবে তারা বাড়ির উল্টোপথেই। প্রায়শ্চিত্তে, অনুশোচনায় লুফে নিতে জীবনের শেষ সুযোগ; তারা পাল্লা দিয়ে পরষ্পর দৌড়াবে মসজিদের দিকে।'
কারণ 'কবর' কিংবা মাটির গভীরে সমাধিস্থ হওয়ার ব্যাপারটা থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহাতে আটকে পড়ার চেয়েও কঠিন কিছু এবং তা কেমন কঠিন কিছুটা আঁচ পেতে শুনে দেখতে পারেন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসূফের লেকচার 'কবরের অবস্থা' (https://youtu.be/oeq_F3WDOLw)।
প্রতিদিনের জীবনে ছোট ছোট অসংখ্য যে মৃত্যু আমাদের গ্রাস করে তার নাম ঘুম। কবরবাসীদের পুনঃজীবন প্রাপ্তির সুখকর কল্পনার মতোই এই ঘুম থেকে জেগে উঠা, উঠতে পারা। রবের দয়া ও আমাদের গাফলতি ভরা জীবনে কতিপয় বয়োবৃদ্ধ প্রতিবেশী ফজরের আধো আলোয় ইকামতে সারিবদ্ধ হয়ে আমাদের এই জীবন্মৃত জীবনের সাক্ষী হচ্ছে প্রতিভোরে।
যদি আমরা বুঝতাম, কবর ফুঁড়ে দাঁড়াতে পারার চেয়ে সহজ সুবহে সাদিকে শয়তানের সাথে যুদ্ধ জয়, যদি আমরা ভাবতাম, কবরের নিকষ অন্ধকার থেকে ফেরা যায় না বটে, তবে তাতে আলোর বন্দবস্ত হবে এই সলাত, যদি আমরা আঁতকে উঠতাম, থাম লুয়াং গুহার ফাঁদে আটকে পড়ার ভয়াবহ কল্পনায়, তবে প্রতি ভোরে চরাচরে শোরগোল শোনা যেত, ভয়ার্ত কন্ঠে ভেসে আসতো, 'আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বা‘দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর' / হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই নিকট সকলের পুনরুত্থান।
অতঃপর মসজিদে গিয়ে ভ্রম হতো, এ কি ফজর সলাত নাকি জু'মাহ!
Developed By Muktodhara Technology Limited