শিরোনাম
ইকবাল কবির, ব্যুরো চীফ (ঢাকা) | ১৫:০০, এপ্রিল ২১, ২০১৯
রাজধানীর আজিমপুর এবং মতিঝিলে গত বছর নির্মিত বিশ তলা এগারোটি ভবনের কোনটাতে আগুন লাগলে বা ভুমিকম্প হলে বাসিন্দাদের বের হয়ে আসার ব্যবস্হা নেই।বিশতলা সুউচ্চ ভবনগুলোর ভেতরেই যে সিড়ি রয়েছে এটাই ফায়ার এক্সজিট বলে দাবি করেছেন গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী। আগামী বছরের মধ্যে ঢাকার আজিমপুরে সরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারীদের জন্য নেয়া হয়েছে একহাজার কোটি টাকার আবাসন প্রকল্প।
আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আজিমপুরে সরকারী কর্মকর্তা - কর্মচারীদের আবাসন সুবিধার দ্বিতীয় দাপে আরো ১৭ টি ২০ তলা সুউচ্চ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গণপূর্ত বিভাগের আজিমপুর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃইলিয়াস আহম্মেদ।তিনি ডেইলি বাংলাদেশ কে বলেন,আধুনিক স্থাপত্যের সকল সুবিধা এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই বহু তলা ভবন গুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।ইলিয়াস আহম্মেদ বলেন,প্রায় একহাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আজিমপুরে একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজিমপুরে বহুতলা ভবন ছাড়াও খেলার মাঠ,আধুনিক অডিটরিয়াম, জলাধার যেখানে থাকবে ঘাটলা, পার্কসহ নানা বিনোদনের ব্যবস্হা রাখা হবে।আধুনিক এই বহুতল ফ্ল্যাট গুলোতে রয়েছে ভুমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্হা।সাত মাত্রার ভূকম্প অনুভুত হলেও ভবন গুলোর কোন ক্ষতি হবে না বলে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন।
বর্তমানে ছয়টি ভবনে বাসিন্দারা বসবাস করছেন,এ গুলোতেও রয়েছে একই সুবিধা। ফায়ার এক্সজিটের জন্য রয়েছে প্রতিটি ভবনে দুটি করে প্রসস্ত সিড়ি।প্রতিটি ফ্ল্যাটের সামনে রয়েছে ফায়ারফাইটিং এবং এক্সটিংগুশার। বাসিন্দাদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে কোন ভবনে দুই এবং তিনটি করে লিফট।বিদুৎ চলে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে জেনারেটর চালু থাকার ব্যবস্হা।প্রতিটি ভবনের নির্মাণ কাজে মানসম্মত উপকরন ব্যবহার করা হচ্ছে।প্রতিটি ভবনের নির্মাণ কাজ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী, উপ- প্রকৌশলীরা নজরদারী করছেন।যাতে কোথাও কোন দূর্নীতি অনিয়ম না হয়।তিনি বলেন এই প্রকল্পটি পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে আজিমপুরের পরিবেশ বদলে যাবে।বদলে যাবে জীবনযাত্রার মানও।তিনি বলেন,একেকটি ভবনে ৭৬ টি পরিবার বসবাস করতে পারবে।
এদিকে গতবছর নির্মিত নতুন ছয়টি বিশতলা ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।ভবনে বসবাসকারী ভুমি মন্ত্রানালের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বললেন,ভবনের অনেক বারান্দায় বৃষ্টির পানি প্রবেশ করলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্হা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।তবে ভবনে থাকা ফায়ার ফাইটিং পানির পাইপগুলো এবং ফায়ার এক্সটিগুইশারগুলোর ব্যবহারের নিয়ম আমাদের জানা নেই।যদি গণপূর্ত বিভাগ আমাদের একটি মহরার মাধ্যমে দেখাতো তবে আমরা আগুন লাগার সময় বা ভুমিকম্প হলে কি ভাবে আগুন নেভানো বা ভবন থেকে নেমে যাবো এ বিষয়টি জানাতো তবে আমাদের জন্য ভাল হতো।স্বাস্থ্য মন্ত্রালয়ের কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন ২নং ভবনের বাসিন্দা। তিনি বলেন,ফ্ল্যাট গুলো উন্নতমানের হলেও কিছু সমস্যা রয়েছে,ফায়ার এক্সিট যদি ভবনের ভেতরের সিড়ি ব্যবহার করতে হয় তবে রাতে অন্ধকারে সমস্যা হবে।এ ছাড়া অনেকের ফ্ল্যাটেই গ্যাস সংযোগ না থাকায় রান্না সংকটে পরতে হচ্ছে।পাচ নং ভবনের বাসিন্দা মাহমুদা খাতুন বললেন,বনানীর বহুতলা ভবনে আগুনের ঘটনার পর আমরাও আতংকে আছি।ফায়ার এক্সজিট যদি ভেতেরর সিড়ি এটা মনে হয় ভুল সিদ্ধান্ত, কারন আগুন লাগলে বা ভুমিকম্প হলে দ্রুত বাসিন্দাদের পক্ষে নেমে যাওয়া সম্ভব নয়।দুই নং ভবনের বাসিন্দা ফরহাদ চৌধুরী বলেন আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে গ্যাস নেই।এলপি গ্যাস দিয়ে ঝুঁকির মধ্যেই রান্নার কাজ শেষ করতে হয়।
সরকার নির্মিত বহুতল ভবনেই ফায়ার এক্সজিট নেই : আজিমপুরের সরকারি কর্মকর্তা - কর্মচারীদের জন্য নির্মিত বিশ তলা ভবনের কোনটাতেই পৃথক ভাবে ভবনের বাহিরের অংশে চারপাশের কোন দিকেই জরুরি নির্গমন পথ সিড়ি নেই।মুল ভবনগুলোর ভেতরেই দুটি করে পৃথক সিড়ি থাকলেও ভবনের চারপাশ দিয়ে কোন জরুরি নির্গমনের সিড়ি রাখা হয়নি।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের আজিমপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃইলিয়াস আহম্মেদ বললেন, বহুতলা ভবনে লিফট ব্যবহার হয়,সিড়ি সাধারণত ব্যবহার হয়না। তাই প্রতিটি ভবনেই তিনটি লিফট এবং দুটি করে প্রশস্ত সিড়ি রয়েছে।সিড়িগুলোই ফায়ার এক্সজিট। এ ছাড়া প্রতিটি ভবনেই পর্যাপ্ত ফায়ারফাইটিং ও ফায়ার এক্সটিংগুশার রয়েছে।এছাড়া বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এই ভবনগুলোতে হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।কারণ উন্নত সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়েছে যাতে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার আগেই বিদুৎ বিতরণ ব্যবস্হা আটো বন্ধ হয়ে যাবে এবং আগুন লাগার সম্ভাবনা নেই বলা যায়।এ ছাড়া প্রতিটি ভবনই ভুমিকম্পপ্রতিরোধ ব্যবস্হায় নির্মাণ হচ্ছে।ঢাকায় সাত মাত্রার ভূকম্প হলেও এই ভবনগুলোর কোন ক্ষতি হবে না।
Developed By Muktodhara Technology Limited