শিরোনাম
জে, জাহেদ, বিশেষ প্রতিবেদক | ০০:৪৯, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
প্রায় তিন বছর বয়সী কর্ণফুলী উপজেলার একটি ইউনিয়ন জুলধা। কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ বিহীনভাবেই জনগণের বসতি এখানে। জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচরের তিন এলাকা মিলেই এখানে বড় সড়ক মাত্র একটি। সেই সবেধন নিলমনি খ্যাত এই একটি মাত্র সড়কে উন্নয়ন কাজ শেষ না হওয়ায় মাটির রাস্তাটি ঠিকাদারের তালিকায় শোভা পাচ্ছে জুলধা ডাঙ্গারচর সড়ক নামে।
প্রায় ১১ বছর আগে জুলধা ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধি ডাঙ্গারচরের গ্রাম পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় সাড়ে আড়াই কি.মি.মাটির রাস্তাটি নির্মাণ করেন। এরপর পার হয়ে গেলো প্রায় এক দশক কিন্তু রাস্তাটি সেই আগের মতই রয়ে গেলো।
সরেজমিন দেখা যায়, এই এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষরা একমাত্র এই রাস্তাটিই ব্যবহার করেন যোগাযোগের সুবিধাথের্, সময় বাঁচানোর জন্য। এই রাস্তাটি বালির তৈরী জরাজীর্ণ, ধুলো-কাদায় একাকার এ সড়কে ব্যবহারে পথচারীরা একপ্রকার ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত।
ডাঙ্গারচর ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বদি ও স্থানীয় আ’লীগ কর্মী জসিম উদ্দীন সহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, আমরা এ রাস্তার ব্যাপারে স্থানীয় ভূমিমন্ত্রী মহোদয় বরাবর শুরু থেকেই আবেদন করে আসছি, ভোটের সময়ও প্রিয় নেতা এ সড়ক উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু আমরা আশায় থাকলেও এখনো সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
তাঁরা আরও জানান, শোনা যাচ্ছে চরলক্ষ্যা ইউপি টু জুলধা ডাঙ্গারচর রাস্তার জন্য ইতোমধ্যে জলবায়ু ফাউন্ডের প্রায় ৭কোটি টাকার মত বরাদ্দ এসেছে। এমন তথ্যে খুশি হয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় অনেকের প্রশংসামূলক স্ট্যাটাস দেখা যায়। কিন্তু ঐ বরাদ্দের কাজ এ সড়ক বরাবর আসছে কিনা তা পরিস্কার করে জানাতে পারেননি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। ফলে আবারো ধূঁয়াশা রয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত ১১ বছরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নুন্যতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগায়নি ডাঙ্গারচর দেড় কিঃ মিঃ সড়ক জুড়ে। যে কারনে এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ সয্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
সুত্রমতে, জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর সড়কটি বিকল্প হিসেবে বেশ দরকার রয়েছে। ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস ওখানে। এ এলাকায় সাধারণ পরিবারের পাশাপাশি অনেক নামী দামী পরিবারও বসবাস করেন। বহুকাল ধরে এরা বসবাস করে আসলেও বিগত ১১ বছর ধরে গুরুত্বপ‚র্ন এ সড়কটিতে নুন্যতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক সময় ইট আর বালু দিয়ে সড়কটির উন্নয়ন করেছিলেন মাটি ভরাট করে। ওই উন্নয়নই শেষ উন্নয়ন। এ ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার সাইফুল ইসলাম বদি সড়কটির উন্নয়নে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেলেও বড় নেতাদের সু’নজরে না আসায় সড়ক উন্নয়ন করতে পারেন নি। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ পথ দিয়ে সর্বসাধারনের চলাচলের উপায় থাকেনা। সড়কটির বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত হয়ে আছে। এসব গর্তের কারনে যানবাহন চালকদের বোঝার উপায় থাকেনা কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল। যে কারনে প্রায় সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় ছোটখাট যানবাহনকে। আর এসব দুর্ঘটনার কারণে যাত্রীদের আহত হওয়াসহ কাঁদা বা নোংরা পানিতে গায়ের কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া সড়কটির পুরো অংশ জুড়ে পানি আর কাঁদা মাটি থাকায় এ পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলের উপায় নেই।
এলাকাবাসীরা জানান, গ্রামের মানুষ চট্টগ্রাম শহর ও উপজেলায় কিংবা থানায় আসতে যেতে সহজ পথ হিসেবে এই সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু স্থানীয় বর্তমান ইউপি সদস্য ও জুলধার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়া আর কোন তদবির করার লোক না থাকায় দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবত রাস্তাটির জন্য সরকারি কোনো অনুদান এলেও তা অদ্যাবধি বাস্তবায়ন হয় নাই। এমনকি ক্ষমতাসীনরা নিজেদের স্বার্থে অন্য কোথাও কাজের বরাদ্দ কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমনও অভিযোগ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে জুলধা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক আহমদ বলেন, ডাঙ্গারচর ১নং ওয়ার্ডে কোন মাটির রাস্তা নাই। যেটার কথা বলতেছেন ওটা হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ২কোটি ২৭ লক্ষ টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। আপনারা প্রকল্প অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।’
অপরদিকে জুলধা ১নং ওয়ার্ডের মুরুব্বি জাফর আহম্মদ বলেন, আমিও শুনেছি রাস্তাটির সংস্কারে কার্যাদেশ হয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নাকি কাজ পেয়েছে। কিন্তু কাজের কোন গতি নেই। এ নিয়ে সড়ক ও জনপদের উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে বার বার অবহিত করা হলেও তারাও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। আবার নতুন করে শোনা যাচ্ছে ৭কোটি টাকার জলবায়ূ বরাদ্দের কাজটিতে এ সমস্যাটা কাটিয়ে উঠবে। আদৌও কি হচ্ছে সেটা সুনিদির্ষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
Developed By Muktodhara Technology Limited