image

আজ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

উখিয়ায়ও এখন দেখা যায়না গ্রাম বাংলার ঢেঁকি

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা    |    ১৭:৪৮, এপ্রিল ২৮, ২০১৯

image

ছবি-প্রতীকি

কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন যেন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। এক সময় ঢেঁকি ছিল এ উপজেলার গ্রাম অঞ্চলের জনপদে চাল ও চালের গুঁড়া তৈরির একমাত্র মাধ্যম। বধূরা ঢেঁকিতে চাল ভাঙতো গভীর রাত থেকে ভোর সকাল পর্যন্ত। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আবহমান বাংলার ঢেঁকি হারিয়ে গেছে, এখন ঢেঁকির সেই ধুপধাপ শব্দ আর শোনা যায় না। আগে অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে কৃষক ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে গৃহস্থ ও কৃষাণিদের ঘরে ঘরে ধানের নতুন চাল ভাঙা বা চাল গুঁড়া করা, আর সে চাল দিয়ে পিঠা, পুলি, ফিরনি, পায়েস তৈরি করার ধুম পড়ে যেত। বাতাসে ভেসে বেড়াত পিঠার সুঘ্রাণ। এখন ঢেঁকির সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে নবান্নের উৎসবও। আধুনিকতার উৎকর্ষের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এক সময়ের কৃষাণ কৃষাণিদের ভালো মানের চাল তৈরির প্রধান মাধ্যম ঢেঁকি। গ্রামেগঞ্জে এখন পুরোপুরি যান্ত্রিক ঢেউ লেগেছে।

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকির ছন্দময় শব্দ। গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় এক সময় ঢেঁকি দিয়ে চাল তৈরি, চিড়া ভাঙা, আটা, পায়েসের চালের গুঁড়ো, খির তৈরির চাল বানানোর সেই ঢেঁকি- আজ অসহায় হয়ে পড়েছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনের কাছে। ধান ভানা, চাল গুঁড়ো করা, বড়ি তৈরি করা, আটা তৈরি চালের গুঁড়াসহ ঢেঁকির যাবতীয় কাজ এখন করছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনে। ঢেঁকি নিয়ে এক সময় জনপ্রিয় গান ও প্রবাদ রচিত হয়েছিল। যেমন গ্রাম বাংলার তরুণী-নববধূ ও কৃষাণীদের কণ্ঠে ‘ও বউ চাল ভাঙেরে, ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, নতুন চাল ভাঙে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ চাল ভাঙেরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া’ এ রকম গান আর শোনা যায় না। এ যুগের ছেলে মেয়েদের ছবি দেখিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে ও পরিচয় করিয়ে দিতে হবে ঢেঁকি শিল্প কি ছিল। সভ্যতার প্রয়োজনে ঢেঁকির আবির্ভাব হয়েছিল, আবার গতিময় সভ্যতার সারাপথে প্রযুক্তি গত উৎকর্ষই টেঁকি বিলুপ্তি করে দিয়েছে।

টেঁকি কাঠের তৈরি কুল, বাবলা, জামগাছ ইত্যাদি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাত দৈর্ঘ্য। আর পৌনে ১ হাত চওড়া। মাথার দিকে একটু পুরু এবং অগ্রভাগে সরু। এর মাথায় এক হাত কাঠের ওচা বা দস্তা থাকে। এর মাথায় লাগানো থাকে লোহার গুলা। গুলার মুখ যে নির্দিষ্ট স্থানে পড়ে সে স্থানকে গড় বলে। ধান বানতে ন্যূনতম ২ জন লোকের প্রয়োজন সে সময়ে কবি সাহিত্যিকরা ঢেঁকি কে নিয়ে অনেক কবিতা ও গান লিখেছেন।আর ঢেঁকি ছাঁটা আউশ চালের পান্তা ভাত পুষ্টিমান ও খেতে খুব স্বাদ লাগত। বর্তমান প্রজন্ম সে স্বাদ থেকে বঞ্চিত। প্রাচীনকালে ঢেঁকির ব্যবহার বেশি হলেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে গ্রাম বাংলার ঢেঁকি আজ বিলুপ্তির পথে।

ইনানী গ্রামের নুরু ইসলাম বলেন, ঢেঁকি কে নিয়ে বহু গান আমাদের এলাকার প্রবীণদের মুখে শুনেছি। আমাদের মা-চাচিদের ঢেঁকিতে ধান ভাঙতে দেখেছি। এখন ঢেঁকি নেই।

এক বৃদ্ধা মহিলা ছখিনা খাতুন জানান, আগে ধান ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে সে চালের গুঁড়ায় পিটা-পুলি ও পায়েস তৈরি করে স্বামীকে খাওয়াতাম। তবে ঢেঁকি আমাদের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। ঢেঁকি একটি শিল্প হলেও শিল্পকে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি শিল্প রক্ষায় সকলকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন কক্সবাজার জেলার প্রবীণরা।



image
image

রিলেটেড নিউজ

Los Angeles

০১:১৭, মে ১৪, ২০২২

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকায় শেষ হাসি যাঁদের


Los Angeles

০০:৩০, মে ১৪, ২০২২

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া


Los Angeles

১৬:২৬, অক্টোবর ১৬, ২০২১

বীর নিবাস পাচ্ছেন বাঁশখালীর ১০ মুক্তিযোদ্ধা


Los Angeles

২০:৩৩, অক্টোবর ১৩, ২০২১

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে বাঁশখালীর এক দরিদ্র পরিবার


Los Angeles

১১:২৪, অক্টোবর ১০, ২০২১

সীতাকুন্ড ইউপি নির্বাচন : নৌকা দাবি ৪৩জনের


Los Angeles

২০:১৯, অক্টোবর ৮, ২০২১

আবিষ্কারের বিস্ময় বালক বাঁশখালীর আশির, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


Los Angeles

২১:৩৮, অক্টোবর ৭, ২০২১

করোনাকালে বাল্যবিয়ে : পড়ালেখায় ইতি টেনে অনেক কিশোরী এখন পুরোদস্তুর সংসারী


image
image