শিরোনাম
লামা (বান্দরবান) সংবাদদাতা | ০০:২৮, মে ১৯, ২০১৯
চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা ফের বান্দরবানের লামা উপজেলার একটি রাবার প্লান্টেশনে তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় চার ঘন্টার তান্ডবে চার বছর বয়সী ৩০৭টি রাবার গাছ কেটে সাবাড় করে দেয় সন্ত্রাসীরা। এতে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয় বলে প্লান্টেশন কর্তৃপক্ষ দাবী করেন। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের মংপ্রæ পাড়া সংলগ্ন এলাকার গাজী রাবার প্লান্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের মংপ্রæ পাড়া সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১২৫ একর পাহাড়ি জমিতে রাবারসহ বিভিন্ন প্রজাতির বাগান সৃজন করে ভোগদখলে আছে গাজী রাবার প্লান্টেশন কর্তৃপক্ষ। বাগান সৃজনের পর থেকে স্থানীয় খইহ্লাচিং মার্মার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী দল প্রায় সময় চাঁদা দাবি করত। চাঁদার টাকা না পেয়ে ক্ষুব্দ হয় সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে ১০-১২জন সন্ত্রাসী সংঘবদ্ধ হয়ে লম্বা দা, লাঠি, কিরিচ, লোহার রড় ও বন্দুক নিয়ে রাবার প্লান্টেশনে হানা দেয়। এ সময় প্লান্টেশনের কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৪বছর বয়সী ৩০৭টি রাবার গাছ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। এতে বাগান মালিকের প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। গত ১৫ ফেব্রæয়ারী রাতেও একইভাবে ৪ বছর বয়সী ১১০টি রাবার গাছ কেটে ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে ওই সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় স্থানীয় খইহ্লাচিং মার্মা ও তোরাব আলীর বিরুদ্ধে ২৩ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন প্লান্টেশন কর্তৃপক্ষ। পরে এ মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পুণরায় শুক্রবার রাতে বাগানের গাছ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা।
বাগানের সুপার ভাইজার অংপ্রæ মার্মা বলেন, সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় বেশি ও হাতে অস্ত্র থাকায় প্রতিবাদ করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার দিবাগত রাতে তিন-চার ঘন্টা তান্ডব চালিয়ে সন্ত্রাসীরা প্লান্টেশনের বিভিন্ন বয়সের ৩০৭টি গাছ কেটে দেয়। তিনি আরও বলেন, গত ৩ ফেব্রæয়ারী পুরাতন মার্মা পাড়ার বাসিন্দা সুইচিং মার্মার ছেলে খইহ্লাচিং মার্মা কোম্পানীর কাছে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না দিলে শিঘ্রই বাগানের ব্যাপক আকারে রাবার গাছ কাটা হবে বলে হুমকি দেয়। কোম্পানী চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাগানের গাছ কেটে দেয়।
রাবার প্লান্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ কর্মকর্তা হিরু বড়ূয়া বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা গত তিন মাসে দু দফায় বাগানের ৪১৭টি গাছ কেটে দিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় আর্মি ক্যাম্পে মৌখিকভাবে অবগত করার পাশাপাশি আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত খইহ্লাচিং মার্মা মুঠোফোনে জানায়, গাজী রাবার প্লান্টেশনের লোকজন নিজেরাই গাছ কেটে; এখন আমাকে মামলায় জড়িয়ে অহেতুক হয়রানি করছে। গাছ কাটার ঘটনায় আমি কোন ভাবেই জড়িত নই।
লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা সাংবাদিকদের বলেন, গাজী রাবার প্লান্টেশনের গাছ কাটার ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited