শিরোনাম
লামা (বান্দরবান) সংবাদদাতা | ০১:০৮, মে ২২, ২০১৯
বান্দরবানের লামা উপজেলায় যাত্রী ছাউনী নির্মাণের নাম করে প্রতিপক্ষ কর্তৃক এক কৃষক পরিবারের বসতভিটাসহ জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে কৃষক পরিবারের ওপর দু’দফা হামলাও চালায় প্রতিপক্ষ। এতে উভয় পক্ষের নারী ও শিশুসহ ৭জন আহত হন। আহতরা হলেন, কৃষক পরিবারের নুর আয়েশা (৫৫), আবদুর রহমান (১৬), জয়নব বেগম (৩৫), মো. মোবিন (১১), নুর আলম (৬০), আবদুল মোনাফ (৪৫), আবদুর রহমান (১৬) ও প্রতিপক্ষের আবুল কালাম (৫০)। উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সাফমারা ঝিরি এলাকার হাফেজ আহমদগং এ হামলা চালায় বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষক মঞ্জুর আলম। এ ঘটনায় হাফেজ আহমদ ও গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রবিউল্লাহসহ ১০জনের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন কৃষক পরিবারের পুত্রবধূ নুর আয়েশা। এর আগে প্রতিপক্ষের আবুল কালামও বাদী হয়ে কৃষক পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে একই আদালতে মামলা করেন। আদালত উভয় মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। জমি দখল বেদখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতেপারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগে জানা যায়, মঞ্জুর আলমের বাবা সোনা মিয়ার নামে উপজেলার ৩০৫নং গজালিয়া মৌজার আর ২০নং হোল্ডিং মূলে দুই একর দ্বিতীয় শ্রেণীর জমি রেকর্ডভুক্ত আছে। বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তি নিজ নিজ অংশ বুঝে নিয়ে তথায় বসতঘর নির্মাণ করে শান্তিপুর্ণভাবে ভোগ করে আসছেন ওয়ারিশগন। সম্প্রতি ওই জমির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাশের আবুল খায়েরের ছেলে হাফেজ আহমদগংদের। তারা এ জমি জোর পুর্বক দখলে নিতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ বিষয়ে মঞ্জুর আলমগং বান্দরবান সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করলে (মামলা নং-৭৯/২০১৬) ২০১৮সালের ২৪জুলাই বিবাদীদের বিরুদ্ধে ওই জমির ওপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। এক পর্যায়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে যাত্রী ছাউনী নির্মাণের নাম করে গত ১৬মে সকাল ১০টার দিকে হাফেজ আহমদ ও তার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে ট্রাক্টর লাগিয়ে জমি চাষ করতে যায়। এ সময় মঞ্জুর আলমগং বাধা প্রদান করলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদেরকে মারধর করে ঘরের ভিতর বেধে রেখে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ দেয়া শুরু করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিন না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সন্ধ্যায় মঞ্জুর আলমের ভাই নুর আলমকে সাফমারাঝিরিস্থ একটি দোকানে আটকে রেখে শারিরীকি ও মানসিক নির্যাতন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসব ঘটনায় মৃত কৃষক সোনা মিয়ার পুত্রবধূ নুর আয়েশা বাদী হয়ে উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সাফমারাঝিরির বাসিন্দা মৃত আবুল খায়েরের ছেলে হাফেজ আহমদ, মৃত আবদুল মজিদের ছেলে রবিউল্লাহ, আবুল কালাম ও শফিক উদ্দিন, রবিউল্লার ছেলে ছালেহ আহমদ ও আলা উদ্দিন, বাচা মিয়ার ছেলে নুরুচ্ছালাম, শফিক উদ্দিনের ছেলে মামুন মিয়া ও জাহাঙ্গীর আলম, মজিদ উল্লাহর ছেলে ইসহাকের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলা পরিচালনাকারী এ্যাডভোকেট মো. ইব্রাহিম বলেন, আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাফেজ আহমদ বিষয়টি এডিয়ে যান এবং বলেন, গত ২০ বছর যাবত ওই জায়গা আমাদের দখলে। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত হামলার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ বিষয়ে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু তৈয়ব বলেন, তর্কিত জমি হাফেজ আহমদের দখলে দেখে আসছি। জমিতে হাফেজ আহমদের বাগান ও ঘর রয়েছে। তবে গত দুই বছর যাবত এক পক্ষ জমিতে গেলে অপর পক্ষ বাঁধা দিয়ে আসছে। উভয় পক্ষের হোল্ডিং এ জমি কম থাকায় সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছেনা।
Developed By Muktodhara Technology Limited