শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ০০:১০, জুন ২৯, ২০১৯
চন্দনাইশ উপজেলার নদী ও পাহাড় বেষ্টিত দুর্গম জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়নের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টির অংশ হিসেবে দোহাজারী পৌরসভার চৌকিদার ফাঁড়ি মাষ্টারঘোনা এলাকা থেকে চিড়িংঘাটা হয়ে ধোপাছড়ি বাজারের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সাংসদ বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৪ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার ৮ শ ৭৬ টাকা ব্যয়ে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় জিরোবুক ছড়ার উপর ৮১ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৩ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মিত হচ্ছে।
ব্রিজটির কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ধোপাছড়ি বাজার থেকে চিড়িংঘাটা হয়ে দোহাজারী পৌরসভার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হবে।
উঁচু-নিঁচু পাহাড় বেয়ে সড়কটি দোহাজারী পৌরসভার চৌকিদার ফাঁড়ি মাষ্টার ঘোনা
থেকে চলে গেছে চিড়িংঘাটা হয়ে সরাসরি ধোপাছড়ি বাজারে।
স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর উদ্যোগে ইতিমধ্যে ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬ শ ৫৩ টাকা ব্যয়ে চিড়িংঘাটা বড়খোলা দোয়ানদার ছড়ার উপর ৪০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে।
জিওবি রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় বলির ছড়ার উপর ২০ লাখ ১১ হাজার ৮ শ ৭১ টাকা ব্যয়ে ১১৬০০ চেইনেজে ৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের কালভার্ট নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
এছাড়া বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা অংশের কাজ আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে জিরোবুক ব্রিজের ৪০% কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে চন্দনাইশ উপজেলা প্রকৌশলী মঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, "ব্রিজটি নির্মাণে ২ বছর সময় নির্ধারণ করা হলেও দুর্গম পাহাড়ী জনপথ হওয়ায় নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়ার জন্য প্রচুর সময় প্রয়োজন হচ্ছে। তাছাড়া দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় শ্রমিকেরাও প্রায় সময় থাকতে চাচ্ছেনা।
৮১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার ব্রিজটিতে ৩টি স্প্যানের উপর ১২ টি গার্ডার বসবে।
৪ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার ৮ শ ৭৬ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আনোয়ার ল্যান্ড মার্ককে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রিজটি নির্মাণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয় উক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর স্থানীয় সাংসদ মহোদয় ব্রিজটির নির্মাণকাজ উদ্ভোধন করেন।
ব্রিজটি নির্মাণে ২ বছর সময় নির্ধারণ করা হলেও দুর্গম এলাকা হওয়ায় পুরোপুরি নির্মাণকাজ শেষ হতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে এবং নির্মাণ ব্যয়ও কিছুটা বাড়তে পারে। ইতিমধ্যে কঠিন কাজগুলো শেষ হয়েছে।" তাঁদের নিবিড় তদারকির ফলে গুনগত মান বজায় রেখে ব্রিজটি নির্মিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ধোপাছড়ি ইউ.পি চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম বলেন, "সড়ক যোগাযোগের অপ্রতুলতার কারণে ধোপাছড়ি ও চিড়িংঘাটা এলাকার মানুষ যুগ যুগ ধরে নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসলেও জিরোবুক ব্রিজটি নির্মাণকাজ শেষ হলে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে নাগরিক সুযোগ সুবিধা অনেক বৃদ্ধি পাবে।
স্বাধীনতার পর ৪৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও কেবলমাত্র সড়ক যোগাযোগের অভাবে এ অঞ্চলে অগ্নি দূর্ঘটনার মত ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারে না।
এ্যাম্বুলেন্স সহ বিভিন্ন পরিবহন প্রবেশের সুযোগ না থাকায় মুমূর্ষু রোগীরা তাৎক্ষণিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ব্রিজটি নির্মাণ হলে এসকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।"
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী বলেন, "ব্রিজটি নির্মাণকাজ শেষ হলে এ অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল সরাসরি বাজারজাত করতে পারবে। এতে ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। এছাড়া পর্যটনের অপার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হবে।"
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "একেতো দুর্গম পাহাড়ী এলাকা, তার উপর বর্ষা মৌসুম। এছাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়ার জন্য কাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। এতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে। আগামী বছর এপ্রিল মাসে যানচলাচলের জন্য ব্রিজটি উম্মুক্ত করার আশা করছি।"
Developed By Muktodhara Technology Limited