শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ২০:০৫, জুলাই ৯, ২০১৯
টানা চার দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে শঙ্খ নদীর পানি।
উপজেলার নিন্মাঞ্চলসমূহের বিস্তীর্ণ বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় আউশ ধানের বীজতলাও পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এতে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় মৎস প্রকল্প ডুবে মাছ ভেসে গিয়ে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে শঙ্খ নদী তীরবর্তী বেশকিছু বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া নদী তীরবর্তী ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনও ঝুঁকিতে রয়েছে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় শঙ্খ নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী দোহাজারী পৌরসভা, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, আমিলাইশ, বৈলতলী, বরমা, বরকল ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ ভয়াবহ বন্যা আতংকে রয়েছেন। এছাড়া উপজেলার নিন্মাঞ্চলের গ্রামীন সড়কগুলো ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকালে দোহাজারী পৌরসভায় শঙ্খ নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় নদীর পানি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। স্রোতের তীব্রতায় নির্মাণাধীন দোহাজারী রেলসেতুর পূর্ব পাশে বেশ কিছু বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু ঘর থেকে মালামাল সরাচ্ছেন লোকজন। এছাড়া ৩৩ হাজার ভোল্ট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি খুঁটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে সেটি নদীতে পড়ে যেতে পারে। এতে বড় ধরনের দূর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভান্ডারখ্যাত শঙ্খচরে গিয়ে দেখা যায় , চরে উৎপাদিত বর্ষাকালীন সবজি মূলা, বেগুন, ঢেঁড়শ, করলা, ঝিঙ্গা, বরবটি, চিচিংগা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
শঙ্খ চরের কৃষক কিল্লাপাড়া এলাকার জসিম ও জামাল বলেন, নিন্মাঞ্চলের সবজি ক্ষেতগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেলেও উপরের ক্ষেতগুলোতে এখনো পানি পৌঁছেনি। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উপরের ক্ষেতগুলোও ডুবে যাবে বলে জানান তিনি।
চাগাচর এলাকার ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ২ বিঘা আয়তনের তার ২ টি মৎস প্রকল্প ডুবে গিয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
এদিকে দোহাজারী পৌরসভার উল্লাপাড়া, সরকারপাড়া, চাগাচর, জামিজুরী, ঈদপুকুরিয়া, খানবাড়ি, দিয়াকুল, রায়জোয়ারা, কিল্লাপাড়া, পূর্ব দোহাজারী, লোকমানপাড়া, চাগাচর নতুনপাড়া এলাকায় কয়েকশ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া চন্দনাইশ পৌরসভা, হাশিমপুর, জোয়ারা, কাঞ্চনাবাদ, বরকল, বরমা, ধোপাছড়ি, ছামাছড়ি, চিড়িংঘাটা, শামুকছড়ির বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকায় মৌসুমি মাছ শিকারীরা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। তবে ঈদুল আজহা সামনে রেখে গবাদিপশু পালনকারীরা গোখাদ্য সংকটে বেকায়দায় পড়েছেন।
Developed By Muktodhara Technology Limited