শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ১২:০৬, জুলাই ২৪, ২০১৯
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত ড্রেন এখন ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। ময়লা-আবর্জনার স্তুপ থেকে প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। জমে থাকা ময়লার স্তুপে গজিয়েছে আমের চারা। বংশ বিস্তার করছে ডেঙ্গু সহ নানা রোগের জীবাণুবাহী মশারা।
সরেজমিন পরিদর্শনে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিকালে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, দোহাজারী পৌরসভা সদরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণের কারনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ড্রেন সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের।
নির্মাণের পর থেকে পরিষ্কার না করায় ড্রেনটি ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরী হলেও আউটলেট বা গন্তব্যস্থান না থাকায় সরকারপাড়া প্রবেশমূখ সংলগ্ন ছোট্ট পুকুরে পড়ছে ময়লা পানিগুলো।
ব্যাংক এশিয়া দোহাজারী শাখার সামনে থেকে সরকারপাড়ার প্রবেশমূখ পর্যন্ত বিস্তৃত ড্রেনে ময়লা পানিগুলো জমে আছে। ড্রেনের মধ্যে ময়লা আবর্জনার স্তুপ থাকায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। একই সঙ্গে ড্রেনের পাশে পলিথিন সহ যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা জমে থাকায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ড্রেনের পঁচা পানির গন্ধে পথচারীসহ শিক্ষার্থীদের নাকে রুমাল দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
বিশেষ করে দোহাজারী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা সহ ড্রেন সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ড্রেনের পঁচা পানির দুর্গন্ধের কারনে। ড্রেনের কিছু অংশে ময়লার স্তরে এমন অবস্থা হয়েছে যে ড্রেন নাকি সমতল অংশ তা বোঝা কঠিন। বিগত কয়েক মাস আগে ড্রেনটিতে পরে আহত হয়েছেন দোহাজারী পৌরসভার সহায়ক সদস্য মোঃ শাহ্ আলম মেম্বার।
স্থানীয়রা বলছেন, দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ ড্রেনটি তৈরী করলেও পানি কোথায় গিয়ে পড়বে সেটি নির্ধারণ না করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি মহাসড়কের পশ্চিম পাশে নতুন আরেকটি ড্রেন নির্মাণ করলেও পূর্বপাশের ড্রেনটির সাথে তারা লিঙ্কআপ করেনি। ড্রেনে জমে থাকা পঁচা পানিতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সহ নানা রোগের জীবানুবাহী মশা বংশ বিস্তার করছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কিংবা দোহাজারী পৌর কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি না থাকায় ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ড্রেন ভরাট করা হচ্ছে।
স্থানীয় মোটরসাইকেল মেকানিক মোঃ সেলিম বলেন, "পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরী করা হলেও পানি জমে আছে। এটি তৈরীর সময় চিন্তা করা উচিৎ ছিলো পানিগুলো কোথায় গিয়ে পড়বে। ড্রেনের পানি সরকারপাড়া প্রবেশমূখ সংলগ্ন ছোট্ট পুকুরে গিয়ে পড়লেও সেটির ধারণক্ষমতা কম থাকায় ড্রেনে পানি জমে থাকে। ড্রেনের পঁচা পানির দুর্গন্ধের কারনে দোকানে বসে কাজ করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, "যারা বলছেন ড্রেনটি পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ হয়নি, তারা সঠিক বলছেন না। পানি নিষ্কাশনের ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে কথা হয়েছে। শীঘ্রই আমরা একটি মতবিনিময় সভায় মিলিত হবো। ড্রেনে ময়লা না ফেলার জন্য সকলকে সচেতন করার জন্য ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।"
পৌরসভায় ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলেও দোহাজারী পৌর কর্তৃপক্ষ এই ড্রেনটি পরিষ্কার করছেনা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দোহাজারী পৌরসভার প্রশাসক আ.ন.ম বদরুদ্দোজা বলেন, "সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমাদের সাথে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা না করেই অপরিকল্পিতভাবে এ ড্রেনটি নির্মাণ করেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরী করলেও নির্দিষ্ট কোন গন্তব্যে যাচ্ছেনা পানি। ড্রেনটি দিয়ে প্রবাহিত পানি ছোট্ট একটি পুকুরে ধারণ করা সম্ভব নয় বলেই পানি জমে থাকে। ড্রেনটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য যদি দোহাজারী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সাথে সওজ বিভাগ কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন, তবে পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited