শিরোনাম
মুহাম্মদ জুবাইর, টেকনাফ (কক্সবাজার) সংবাদদাতা | ০১:৩১, আগস্ট ২৩, ২০১৯
মিয়ানমারের সম্মতির পর ব্যাপক প্রস্তুতি ও উদ্যোগ গ্রহণ থাকা সত্তে¡ও ২২ আগষ্ট কাংখিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। কর্মকর্তারা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য বিকাল চারটা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে ও রোহিঙ্গা শর্ণার্থীদের অনাগ্রহের কারনে শেষ পর্যন্ত এবারও আটকে গেল প্রত্যাবাসন কর্মসূচি। এ অবস্থায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেখতে ঢাকায় মিয়ানমার ও চীন দূতাবাসের কর্মকর্তারা কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ভারতও। দ্বিতীয় বারও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্যাম্পে নিয়োজিত এনজিও’দের দূষারোপ করছেন।
তারা বলছেন, মিয়ানমারে ফিরতে অনাগ্রহ প্রকাশ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার পেছনে কতিপয় এনজিওদের ইন্ধন রয়েছে। ২২ আগষ্ট কাংখিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষন ঠিক ছিল। এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প, কেরণতলী ট্রানজিট ঘাট ও নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পসহ সব ধরণের প্রস্তুতিও গ্রহন করেছিল সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। প্রস্তুতছিল বাস, ট্রাক ও অন্যান্য সব সুবিধা। প্রত্যাবাসনের সময় নেয়া হয়েছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। কিন্তু, কোন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যেতে রাজি হয়নি। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রত্যাবাসনে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের বহন করতে ৫টি বাস ও ৩টি ট্রাক অবস্থান করলেও কেউ যেতে রাজি না হওয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো ফের আটকে গেল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।
এর আগে গেল বছর ১৫ নভেম্বর একই রকমের একটি প্রত্যাবাসনের উদ্যোগও ভেস্তে যায়। ২২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, আজও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের নিতে কেউ আসেনি। আমরা তাদের জোর করে ফেরত পাঠাচ্ছি না। তবুও আমরা বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরতে কোনো রোহিঙ্গা রাজি হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে তৃতীয় দিনের মতো তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার চলছে। গত দুদিনে ২৩৫ পরিবার প্রধানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয় বলেও তিনি জানান। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় শরণার্থী ত্রাণ, পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, ‘আমরা বুধবার ২১৪ পরিবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। এখন তাদের বক্তব্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি। পরিবারগুলোর বক্তব্য বিচার-বিশ্লেষণ করছি।’
এদিকে বুধবার ৬১টি এনজিও এক যুক্ত বিবৃতিতে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। এদিকে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার ও মতামত গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
জানা গেছে, সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী এক হাজার ৩৮টি পরিবারের তিন হাজার ৩৯৯ জন রোহিঙ্গার সম্মতি যাচাইয়ের জন্য গত ৮ আগস্ট বাংলাদেশ জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর গত দুই দিনে বেশির ভাগই বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি। এমতাবস্থায় প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে শুরু থেকেই। যদিও সরকারি সূত্রগুলো বলছে, তারা পুরোপুরি প্রস্তুুত ছিলো।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারের উপর আন্তজার্তিক মহলের চাপ সৃষ্টি’র অনুরোধ করছেন সচেতন মহল।
Developed By Muktodhara Technology Limited