শিরোনাম
এম হোসাইন মেহেদী, লোহাগাড়া সংবাদদাতা | ০০:৩২, অক্টোবর ১৫, ২০১৯
লোহাগাড়া উপজেলার অভ্যন্তরীন কঁাঁচা পাকা সড়কগুলোতে বেপরোয়া বালি ও ইট বোঝাই গাড়ী চলাচলের কারণে সড়ক ও ব্রীজ ভেঙ্গে বেহাল হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। দৈত্যাকার বালি ও ইট বোঝাই গাড়ীগুলোর ভার সইতে না পেরে প্রতিনিয়ত ভাঙছে সড়কগুলো। উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামীণ সড়কগুলোতে নিত্যদিন চলাচল করছে বালি ও ইট বোঝাই গাড়ী। গাড়ীগুলো যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে সেই রাস্তাগুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। এলাকার কাঁচা পাকা সড়ক কোনটাই বাদ পড়ছে না। সামনের বর্ষায় এই সড়কগুলি দিয়ে যান চলাচলতো দূরের কথা হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়বে। কাঁচা ও ব্রীক সলিং সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। বর্ষার পানিতে গর্তগুলো এক একটা ডোবায় পরিণত হয়। উপজেলার ডলু, হাঙ্গর, সরাই, টংকাবতীসহ বিভিন্ন খাল থেকে নিয়মিত বালি উত্তোলন করে বড় বড় ট্রাকে করে তা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সাথে পালা দিয়ে চলছে ব্রিক ফিল্ডের ইট বোঝাই বড় ট্রাক।
অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর ধারণ ক্ষমতা যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ টন হয়ে থাকে। আর বালি ও ইট বহনকারী দৈত্যাকার খালি ট্রাকের ওজনই রয়েছে ৯-১০টন। ট্রাকগুলোতে বালি ও ইট নেওয়া হয়ে থাকে ২৫-২৬টন। বালি-ইট বহনকারী ট্রাকগুলো গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে থাকলে কয়েকমাস পরই রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে উঠে। রাস্তা ভেঙ্গে একাকার হয়ে যাচ্ছে। তার উপর আবার কালভার্টও পাল্লা দিয়ে ভেঙ্গে পড়ছে । ইতিমধ্যে দরবেশহাট ডিসি সড়কের উপর নির্মিত হাছনাা ভিটা ব্রীজ, পুটিবিলা সরাই খালের ব্রীজ, পানত্রিশা বুড়ির ঝিরি ব্রিজ, পুটিবিলা রামবিলা সড়কের কেইচ্ছা ঝোড়া ব্রীজ ভেঙ্গে পড়েছে। ইট-বালি বহণকারী গাড়ীগুলো একটি রাস্তা দিয়ে কয়েকদিন চলে ঐ রাস্তাটি যখন ভাঙ্গা শেষ হয় তখন অন্য রাস্তা ধরে চলাচল করে থাকে। যার কারণে বর্তমানে লোহাগাড়ার ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ দরবেশহাট ডিসি সড়ক, পুটিবিলা সরাইয়া সড়ক, চুনতি শাহ জব্বারিয়া সড়ক, চুনতি ফারাঙ্গা সড়ক, চুনতি জয়নগর সড়ক, আধুনগর হরিনা সড়ক, কালিহাট ডিসি সড়ক,আধুনগর আমতলী সড়ক,আমিরাবাদ স্কুল সড়ক, আমিরবাদ সুখছড়ি কালিবাড়ী সড়ক, জঙ্গল পদুয়া সড়ক, চরম্বা রাজঘাটা সড়ক, পদুয়া আধারমাসিনক সড়ক, পদুয়া ধলিবিলা সড়ক, চরম্বা মহাজন মসজিদ সড়ক, চরম্বা বাইয়ার পাড়া সড়ক, চরম্বা টেকের দোকান সড়ক, সুখছড়ি উজিরভিটা সড়ক, আধুনগর উজিরভিটা সড়ক, পুটিবিলা ডিসি সড়ক, পুটিবিলা দেওয়ানজী সড়ক, পুটিবিলা নাথপাড়া সড়ক, পুটিবিলা রামবিলা সড়ক, পুটিবিলা নয়াপাড়া সড়ক, গৌড়স্থান হরিনা সড়ক, গৌড়স্থান নয়াপাড়া সড়ক, এলাকার ছোট বড় অর্ধশতাধিক সড়ক বর্তমানে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমিরাবাদের পুরান বিওসি থেকে তেইল্যার ঘাটা সড়কটির পুরোটাই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বালি ব্যবসায়ীরা সরকারদলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় রয়েছে। যার কারণে এলাকার সাধারন মানুষ এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুটিবিলার অর্ধশত পরিবার মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে ঘরছাড়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে কোন সময় কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ সড়কগুলোর উপর অতিরিক্তি বালি ও ইট বহনকারী গাড়ীগুলোর ব্যাপারে যদি কোন ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে গ্রামীন রাস্তাগুলো হয়তো পুরোপুরিই চরাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌছিফ আহমেদ বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলো রক্ষার ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited