শিরোনাম
মোঃ কামরুল ইসলাম মোস্তফা, চন্দনাইশ সংবাদদাতা | ২৩:১৩, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২০
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা শঙ্খনদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ চরে সারা বছরই শাক-সবজির আবাদ হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এই চরে উৎপাদিত শাক-সবজি চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করেন পাইকাররা। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও রপ্তানি হয় শঙ্খচরে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকারের শাক-সবজি।
শাক-সবজি উৎপাদনের জন্য শঙ্খচর বিখ্যাত হলেও শাক-সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে দুই শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন কালিয়াইশ এলাকার প্রবীণ চাষি জাফর আহমদ।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে তার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ১৫ থেকে ২০ বছর আগে চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শঙ্খনদী তীরবর্তী চরে শাক-সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষ করতেন অনেক চাষি। বর্তমানে কেউ আর পেঁয়াজ চাষ করেন না। আমরা প্রত্যেক চাষি যদি অন্ততপক্ষে দুই শতক জমিতেও পেঁয়াজের চাষ করি তবে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি হবে না। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পেঁয়াজ রপ্তানি করা সম্ভব।
হঠাৎ করে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণেই পেঁয়াজ চাষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৮০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছি, ১২০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি, ৬০ শতক জমিতে ধনিয়া পাতা চাষ করে লাভবান হয়েছি। আশা করি পেঁয়াজ চাষ করেও লাভবান হব।
পরীক্ষামূলকভাবে দোকান থেকে বীজ সংগ্রহ করে শিম ও টমেটো ক্ষেতের মাঝামাঝি দুই শতক জমিতে পেঁয়াজের বীজ বপন করেছি। বীজ কেনা, সার ও জমি তৈরিতে মজুরিসহ মোট খরচ হয়েছে ৬০০ টাকা। আগামী তিন মাস পর পেঁয়াজ তুলতে পারব।
দুই শতক জমি থেকে ২ থেকে ৩ মণ পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, পেঁয়াজ চাষে আমি সফল হলে আমার দেখাদেখি অন্য চাষিরাও পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত হয়ে চাষ করবে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত চন্দনাইশ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি দাস জানান, শঙ্খচরে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। পেঁয়াজ চাষিদের প্রণোদনা দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতোমধ্যে আমরা সুপারিশ করেছি। আশা করি আগামী বছর সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে।
পেঁয়াজ রোপণের জন্য কার্তিক মাস আদর্শ সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে যারা পেঁয়াজ রোপণ করছেন, সেই পেঁয়াজগুলো আকারে ছোট হবে এবং মাজরা পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। বেলে ও দোআঁশ মাটিতে পেঁয়াজ চাষ ভালো হয়। তাছাড়া যে সব জায়গায় সেচ সুবিধা রয়েছে সেই সব জমিতে ভালো পেঁয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব। সেই হিসেবে দোহাজারীতে শঙ্খ নদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ চরে পেঁয়াজ চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
Developed By Muktodhara Technology Limited