শিরোনাম
জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা সংবাদদাতা | ২২:২২, মে ২২, ২০২০
আনোয়ারার উপকূলের রায়পুর ইউনিয়নের বারআউলিয়া এলাকায় খোলা বেডিবাঁধ দিয়ে প্রতিদিন বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে উপকূলবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছাসের কারণে অরক্ষিত উপকুলের ৫০হাজার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয়রা বেডিবাঁধ নির্মাণ কাজের অনিয়মকেই দায়ী করছে। অপর দিকে পারকি, পরুয়াপাড়া, বারআউলিয়া ও পূর্বগহিরা পর্যন্ত বেডিবাঁধে পাথর বসানোর জন্য ১শত ৫০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প ”একনেকে” পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বারআউলিয়া এলাকার আনার বাপের বাড়ি, ছারা বাপের বাড়ি ও এছার বাপের বাড়ি জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে। এসব এলাকার মানুষের দূর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আগেই এ এলাকার প্রায় দুইশ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে স্থানীয় বার আউলিয়া জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকীর মুখে পড়ে। শুধু তাই নয় রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া বাতিঘর, গহিরা, ফকির হাট ও সরেঙ্গার যে সব অংশে পাথর নেই এসব এলাকার বিভিন্ন অংশের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বারআউলিয়া এলাকায় খোলা বেড়িবাঁধ দিয়ে প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি উঠানামা করছে। বর্তমানে ভাঙনের কবলে পড়ে ১৬ ফুট প্রস্থের বেড়িবাঁধের ২শত মিটার এলাকার সম্পন্ন বিলীন হয়ে যায়। বেডিবাঁধের পাশে দেয়া শুধু পাথরগুলোই রয়েছে। তাছাড়া উঠান মাঝির ঘাট এলাকায় বেডিবাঁধে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ঐ এলাকায় জিও ব্যাগ বসিয়ে প্রোক্টেশন দেয়া না হলে যে কোন মুহুর্তে পুরো বাঁধ তলিয়ে যাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ নির্মানের সময় শিডিউল অনুযায়ী বাঁধ তৈরী না করা, বাঁধের নিকট থেকে মাটিকাটা, বাধেঁর মাটি না চাপানো, মাটির সাথে ৭০ শতাংশ বালি দেয়ায় বাঁধ নির্মানের বছর পার না হতেই অধিকাংশ স্থানে বাঁধ ধেবে যাচ্ছে। এতে করে চলতি বর্ষা মৌষমেও বাঁধের কারণে চরম দূর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে রায়পুর ইউনিযনের বারআউলিয়া এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, কিছু নেতার জোগসাজশে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বেড়িবাঁধের কাজ করার কারণে নির্মানের এক বছর যেতে না যেতেই বাঁধটি বিলিন হয়ে যায়। এতে করে এ এলাকার বসত বাড়ী ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, ইউনিয়নের আলোচিত এক নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে বেড়িবাঁধের মাটি কাটা ও ব্লক নির্মান কাজের শুরু থেকেই নানা অনিয়ম চলে আসছে। যার ফলে এলাকার মানুষ ক্ষুদ্ধ। শুধু তাইনয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো কার্য্যাদেশ মোতাবেক ও যথাসময়ে কাজ না করার করণে উপকূলের হাজার হাজার মানুষ জোয়ারের পানিতে প্রতিনিয়ত দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজের সঠিক ভাবে মান তদারকি না করার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী চয়ন কুমার ত্রিপুরা জানান, আনোয়ারার উপকূল বারশত ইউনিয়নের পারকি থেকে রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া, গহিরা ও বারআউলিয়া,দক্ষিণ গহিরা,পূর্বগহিরা ও সরেঙ্গা পর্যন্ত বেডিবাঁধের যে সব অংশে পাথর বসানো হয়নি এবং ভাঙন দেখা দিয়েছে ঐ সব এলাকায় শীঘ্রই পাথর বসানো হবে। এর জন্য নতুন ভাবে ১শত ৫০ কোটি টাকা বরাদ্ধ চেয়ে ”একনেকে” ফাইল পাঠানো হয়েছে। করোনার কারণে প্রকল্পটি আটকে আছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
Developed By Muktodhara Technology Limited