শিরোনাম
সালেহ নোমান | ১৬:১৪, মে ২৫, ২০২০
উদ্বেগ আর আতংকের করোনা মহামারীর মধ্যে পালিত হচ্ছে, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর্। সংক্রমন আর মৃত্যুর আতংক এখন সবার নিত্য সঙ্গি। অজানা পরীজিবির আক্রমণে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর যুদ্ধে লড়ছেন হাজারো মানুষ। তাদের চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলার আরেক যুদ্ধের সম্মুখভাগে আছেন স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত একদল অকুতোভয় সৈনিক। করোনা হাসপাতাল ঘিরে এখন যাদের রাত-দিন তাদের ঈদ কেমন কাটছে?
চট্টগ্রামের ফৌজদার হাটে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য স্থাপিত ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামরাপার্সন প্রিয় মোহাম্মদ আলমগীরসহ আরো কয়েকজন সংবাদকর্মী। যতটুকু জানি প্রতি ঈদে আলমগীর ব্যস্ত থাকতো খবরের সন্ধানে। স্ত্রী আর একমাত্র সন্তান অন্য সবার সাথে ঈদ করলেও উদ্বেগ- উৎকন্ঠা ছিলোনা। গত দুটি ঈদ তার কেটেছে শরনার্থী ক্যাম্পে। কিন্তু এবার সুস্থ হয়ে প্রিয়জনের কাছে ফেরার আকুলতা নিয়ে ঈদ পার করছেন হাসপাতালে। বাসায় তার পরিজনরা অজানা পরজীবির সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকবে তো?
আমাদের অপর সহকর্মী সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম যাকে আমরা শিল্পী হিসেবে জানি, করোনা জয় করে একদিন আগে ঘরে ফিরেছে।করোনা জয়ের আনন্দের সাথে ঈদের আনন্দ মিলেমিশে একাকার হওয়ার কথা ছিলো তার পরিবারে। কিন্তু শিল্পীর ব্যাংকার স্ত্রী হাসপাতালে লড়াই করছেন মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য হুমকী হয়ে উঠা ঘাতক পরজীবি করোনার বিরুদ্ধে। ঈদ আনন্দের পরিবর্তে উল্টো মায়ের জন্য উৎকন্ঠিত তাদের সন্তানরা।এখন বাসায় সন্তানদের স্বাভাবিক রাখার আরেক লড়াইয়ে নামতে হয়েছে শিল্পীকে।
সুনির্দিষ্ট ঔষধ না থাকায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া আর খালি হাতে হিংস্র দানবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ একই কথা। এই যুদ্ধে অনেক ত্যাগ স্বীকার করে সবার সামনে আছেন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত দুইমাসের বেশি সময় ধরে পরিবার বিচ্ছিন্ন আছেন করোনার বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধের সেনাপতি, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা: আবদুর রব মাসুম। গতরাতে (চাদ রাতে) কথা বলেছিলাম। সংক্ষিপ্ত আলাপে যেটা বললেন, তিনিসহ চিকিৎসাকর্মীদের ঈদে পরিবার বিচ্ছিন্ন থাকার মানসিক বোঝা হালকা হয় যখন, মহামারীর শিকার মানুষগুলোকে হাসাপতাল থেকে সুস্থ্য অবস্থায় পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে পারেন।
কোভিড-১৯ এর প্রাদূর্ভাব মানুষকে টিকে থাকার নতুন লড়ায়ে সামিল করেছে। এই লড়ায়ে মানুষের মুখে বিজয়ের হাসি ফুটুক শীঘ্রই, এটাই এবারের ঈদুল ফিতরে প্রত্যাশা।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী
Developed By Muktodhara Technology Limited